ঢাকা ০৯:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo বুড়িচংয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউএনও’র! Logo ইবি উপাচার্যকে ১০লাখ ঘুষ প্রস্তাব এক তরুনীর! Logo মামলায় জর্জরিত কুলাউড়ার ছাত্রদল নেতা মিতুল পালিয়ে আছেন প্রবাসে Logo ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে শাবি ছাত্রলীগের কার্যক্রম শুরু Logo থিয়েটার কুবির ইফতার মাহফিল Logo রাজধানীর শান্তিনগর বাজার নিয়ে শত কোটি টাকার লুটপাট Logo ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি শিক্ষক সমিতির শোক Logo ঢাবি শিক্ষক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo ময়মনসিংহ স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের নতুন সভাপতি সজীব, সম্পাদক আশিক Logo পুরান ঢাকায় জুতার কারখানার আগুন




ভারতীয় পেঁয়াজে আমদানিকারকদের মাথায় হাত

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৪৭:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ জানুয়ারী ২০২১ ১৩৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম;

সোমবার (৪ জানুয়ারি) দেশের সবচেয়ে বড় ভোগ্যপণ্যের বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি আড়তেই চীন, তুরস্ক, ইউক্রেন, নেদারল্যান্ডস ও মিসর থেকে আমদানি করা হাজার হাজার বস্তা পেঁয়াজের মজুত। ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে প্রবেশ করেছে এ খবর পেয়ে অধিকাংশ আড়তদার লোকসান হলেও অন্য দেশ থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি করে দেয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু পেঁয়াজের দাম আরও কমবে এ আশায় খুচরা বিক্রেতারা তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

পাঁচদিন আগেও খাতুনগঞ্জে ৩৫ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে চীন, তুরস্ক, ইউক্রেন, নেদারল্যান্ডস ও মিসর থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ। কিন্তু বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ প্রবেশের খবর চাউর হতেই এক ধাক্কায় ওই সব পেঁয়াজের দাম নেমে এসেছে অর্ধেকেরও নিচে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখনই যদি ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করা না হয়, তাহলে সঙ্কটের সময় পাশে থাকা আমদানিকারকরা এবার পথে বসবেন।

ব্যবসায়ীরা জানান, সোমবার খাতুনগঞ্জে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৫ টাকায়। বিপরীতে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, তুরস্কের পেঁয়াজ ২০ এবং নেদারল্যান্ডস ও চীনা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৪ থেকে ১৫ টাকা কেজি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন চীন, তুরস্ক, নেদারল্যান্ডস ও মিসর থেকে পেঁয়াজের আমদানিকারকরা।

মূলত মাসখানেক আগে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় এসব দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। কিন্তু দুই সপ্তাহ ধরে এর দাম কমে ২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছিল। কিন্তু গতকাল রোববার (৩ জানুয়ারি) সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানির খবর খাতুনগঞ্জে পৌঁছাতেই চীন, তুরস্ক, ইউক্রেন, নেদারল্যান্ডস ও মিসরের পেঁয়াজের দাম কমে ঠেকেছে ১৪ টাকায়; দেশি পেঁয়াজের দাম নেমে এসেছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়।

খাতুনগঞ্জে মেসার্স গোলাম ব্রাদার্সের ম্যানেজার মোহাম্মদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘বাজারে খুব বেশি ভারতীয় পেঁয়াজ প্রবেশ করেছে তা কিন্তু নয়; তবে এ খবরটি বাজারে অস্থিরতা তৈরি করেছে। এখন অধিকাংশ পাইকারি বিক্রেতা দাম আরও পড়ে যাওয়ার ভয়ে কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। খুচরা বিক্রেতারাও আরও কমে পেঁয়াজ পাবেন সে আশায় বাজারমুখী হচ্ছেন না। এভাবে চলতে থাকলে অধিকাংশ বিদেশি পেঁয়াজ আড়তেই পচে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে আসার খবরে সাধারণ জনগণ ভাবছে পেঁয়াজের দাম কমে যাবে; আসলেও তাই হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা ভয়ে কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করে দিচ্ছেন।’

খাতুনগঞ্জের চৌধুরী ট্রেডার্সে গিয়ে দেখা যায়, আড়তের সামনেই বেশ কয়েক বস্তা পচা পেঁয়াজ। জিজ্ঞেস করতেই প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী আকবর চৌধুরী জানান, এসব পেঁয়াজ মিয়ানমার থেকে আমদানি করা। কিন্তু বর্তমানে বাজারে প্রায় পাঁচ দেশের পেঁয়াজ মজুত থাকায় মিয়ানমারের পেঁয়াজ বিক্রি করা যায়নি। এখন ভারতীয় পেঁয়াজ আসতে থাকলে বাকিগুলোও বিক্রি করা যাবে না।

আকবর চৌধুরী বলেন, ‘আমরা তো জলে ভেসেছি, কৃষকরাও মরে যাবে; যারা দেশি পেঁয়াজ চাষ করেছেন। ৪৩ থেকে ৪৪ টাকায় তুরস্ক, ইউক্রেন ও নেদারল্যান্ডস থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে এখন ১৪ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি করছি। আমদানিকারকরা লাখে হয়তো ৩০ হাজার টাকা পাবেন, বাকি ৭০ হাজার থাকবে না।’

বাজার ঘুরে ভারতীয় পেঁয়াজের তেমন বেচাকেনা চোখে পড়েনি। আড়তদাররা জানান, গত তিনদিনে মাত্র ২০ ট্রাক ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে প্রবেশ করেছে; যা সঙ্গে সঙ্গে খুচরা বাজারে চলে গেছে। কিন্তু ভারতীয় পেঁয়াজ প্রবেশের খবর পুরো বাজারকে অস্থির করে তুলেছে।

প্রায় তিন মাস ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকার পর গত শনিবার পুনরায় ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে । এ নিয়ে গত দুদিনে ৩১টি ট্রাকে প্রায় ৮০০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ দেশের বাজারে প্রবেশ করেছে।

মিতালী ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মোস্তফা মিয়া বলেন, ‘এই মুহূর্তে যদি ভারতীয় পেঁয়াজ না আসত, তাহলে যারা বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেছে তারা কিছুটা লাভে থাকত। এখন তারা যা বিক্রি করছে সব লোকসান করে বিক্রি করছে। ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় পেঁয়াজ কিনে এখন ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি করছে। দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ৫০ টাকার ওপর; এখন সেগুলোর দাম হয়েছে ৩৫ টাকা।’

খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, ‘রোববার ৫০ মেট্রিক টনের মতো ভারতীয় পেঁয়াজ খাতুনগঞ্জে এসেছে। এছাড়া বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের গুদামে মজুত রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘মিসর, তুরস্ক, মিয়ানমারসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ এখনো চট্টগ্রাম বন্দরে খালাসের অপেক্ষায়। এ অবস্থায় স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আসতে থাকায় চাহিদার তুলনায় শত শত টন বেশি পেঁয়াজ গুদামে মজুত থেকে যাবে। এতে পেঁয়াজের মূল্যে রীতিমতো ধস নেমেছে, এ অবস্থায় পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে বড় ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দেবে।’

প্রসঙ্গত, অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে গত ১৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয় ভারত। এতে দেশে প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতের অভ্যন্তরে আটকা পড়ে ২৫০টি পেঁয়াজবাহী ট্রাক। আটকা পড়ে আমদানির জন্য খোলা ১০ হাজার টনের মতো এলসি করা পেঁয়াজ।

এর পাঁচদিন পর ১৯ সেপ্টেম্বর অনুমতি সাপেক্ষে আগের টেন্ডার করা ১১টি ট্রাকে ২৪৬ টন পেঁয়াজ রফতানি করে ভারত, যার অধিকাংশ পেঁয়াজ পচা ও নষ্ট হওয়ায় পুঁজি হারিয়ে ব্যাপকভাবে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন দেশের আমদানিকারকরা। ফলে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে আমদানিকারকরা মিয়ানমার, পাকিস্তান, মিসর, তুরস্ক, নেদারল্যান্ডস, ইউক্রেন ও চীন থেকে বিপুল পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




ভারতীয় পেঁয়াজে আমদানিকারকদের মাথায় হাত

আপডেট সময় : ০৯:৪৭:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ জানুয়ারী ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম;

সোমবার (৪ জানুয়ারি) দেশের সবচেয়ে বড় ভোগ্যপণ্যের বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি আড়তেই চীন, তুরস্ক, ইউক্রেন, নেদারল্যান্ডস ও মিসর থেকে আমদানি করা হাজার হাজার বস্তা পেঁয়াজের মজুত। ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে প্রবেশ করেছে এ খবর পেয়ে অধিকাংশ আড়তদার লোকসান হলেও অন্য দেশ থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি করে দেয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু পেঁয়াজের দাম আরও কমবে এ আশায় খুচরা বিক্রেতারা তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

পাঁচদিন আগেও খাতুনগঞ্জে ৩৫ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে চীন, তুরস্ক, ইউক্রেন, নেদারল্যান্ডস ও মিসর থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ। কিন্তু বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ প্রবেশের খবর চাউর হতেই এক ধাক্কায় ওই সব পেঁয়াজের দাম নেমে এসেছে অর্ধেকেরও নিচে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখনই যদি ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করা না হয়, তাহলে সঙ্কটের সময় পাশে থাকা আমদানিকারকরা এবার পথে বসবেন।

ব্যবসায়ীরা জানান, সোমবার খাতুনগঞ্জে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৫ টাকায়। বিপরীতে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, তুরস্কের পেঁয়াজ ২০ এবং নেদারল্যান্ডস ও চীনা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৪ থেকে ১৫ টাকা কেজি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন চীন, তুরস্ক, নেদারল্যান্ডস ও মিসর থেকে পেঁয়াজের আমদানিকারকরা।

মূলত মাসখানেক আগে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় এসব দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। কিন্তু দুই সপ্তাহ ধরে এর দাম কমে ২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছিল। কিন্তু গতকাল রোববার (৩ জানুয়ারি) সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানির খবর খাতুনগঞ্জে পৌঁছাতেই চীন, তুরস্ক, ইউক্রেন, নেদারল্যান্ডস ও মিসরের পেঁয়াজের দাম কমে ঠেকেছে ১৪ টাকায়; দেশি পেঁয়াজের দাম নেমে এসেছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়।

খাতুনগঞ্জে মেসার্স গোলাম ব্রাদার্সের ম্যানেজার মোহাম্মদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘বাজারে খুব বেশি ভারতীয় পেঁয়াজ প্রবেশ করেছে তা কিন্তু নয়; তবে এ খবরটি বাজারে অস্থিরতা তৈরি করেছে। এখন অধিকাংশ পাইকারি বিক্রেতা দাম আরও পড়ে যাওয়ার ভয়ে কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। খুচরা বিক্রেতারাও আরও কমে পেঁয়াজ পাবেন সে আশায় বাজারমুখী হচ্ছেন না। এভাবে চলতে থাকলে অধিকাংশ বিদেশি পেঁয়াজ আড়তেই পচে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে আসার খবরে সাধারণ জনগণ ভাবছে পেঁয়াজের দাম কমে যাবে; আসলেও তাই হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা ভয়ে কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করে দিচ্ছেন।’

খাতুনগঞ্জের চৌধুরী ট্রেডার্সে গিয়ে দেখা যায়, আড়তের সামনেই বেশ কয়েক বস্তা পচা পেঁয়াজ। জিজ্ঞেস করতেই প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী আকবর চৌধুরী জানান, এসব পেঁয়াজ মিয়ানমার থেকে আমদানি করা। কিন্তু বর্তমানে বাজারে প্রায় পাঁচ দেশের পেঁয়াজ মজুত থাকায় মিয়ানমারের পেঁয়াজ বিক্রি করা যায়নি। এখন ভারতীয় পেঁয়াজ আসতে থাকলে বাকিগুলোও বিক্রি করা যাবে না।

আকবর চৌধুরী বলেন, ‘আমরা তো জলে ভেসেছি, কৃষকরাও মরে যাবে; যারা দেশি পেঁয়াজ চাষ করেছেন। ৪৩ থেকে ৪৪ টাকায় তুরস্ক, ইউক্রেন ও নেদারল্যান্ডস থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে এখন ১৪ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি করছি। আমদানিকারকরা লাখে হয়তো ৩০ হাজার টাকা পাবেন, বাকি ৭০ হাজার থাকবে না।’

বাজার ঘুরে ভারতীয় পেঁয়াজের তেমন বেচাকেনা চোখে পড়েনি। আড়তদাররা জানান, গত তিনদিনে মাত্র ২০ ট্রাক ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে প্রবেশ করেছে; যা সঙ্গে সঙ্গে খুচরা বাজারে চলে গেছে। কিন্তু ভারতীয় পেঁয়াজ প্রবেশের খবর পুরো বাজারকে অস্থির করে তুলেছে।

প্রায় তিন মাস ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকার পর গত শনিবার পুনরায় ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে । এ নিয়ে গত দুদিনে ৩১টি ট্রাকে প্রায় ৮০০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ দেশের বাজারে প্রবেশ করেছে।

মিতালী ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মোস্তফা মিয়া বলেন, ‘এই মুহূর্তে যদি ভারতীয় পেঁয়াজ না আসত, তাহলে যারা বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেছে তারা কিছুটা লাভে থাকত। এখন তারা যা বিক্রি করছে সব লোকসান করে বিক্রি করছে। ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় পেঁয়াজ কিনে এখন ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি করছে। দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ৫০ টাকার ওপর; এখন সেগুলোর দাম হয়েছে ৩৫ টাকা।’

খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, ‘রোববার ৫০ মেট্রিক টনের মতো ভারতীয় পেঁয়াজ খাতুনগঞ্জে এসেছে। এছাড়া বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের গুদামে মজুত রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘মিসর, তুরস্ক, মিয়ানমারসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ এখনো চট্টগ্রাম বন্দরে খালাসের অপেক্ষায়। এ অবস্থায় স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আসতে থাকায় চাহিদার তুলনায় শত শত টন বেশি পেঁয়াজ গুদামে মজুত থেকে যাবে। এতে পেঁয়াজের মূল্যে রীতিমতো ধস নেমেছে, এ অবস্থায় পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে বড় ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দেবে।’

প্রসঙ্গত, অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে গত ১৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয় ভারত। এতে দেশে প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতের অভ্যন্তরে আটকা পড়ে ২৫০টি পেঁয়াজবাহী ট্রাক। আটকা পড়ে আমদানির জন্য খোলা ১০ হাজার টনের মতো এলসি করা পেঁয়াজ।

এর পাঁচদিন পর ১৯ সেপ্টেম্বর অনুমতি সাপেক্ষে আগের টেন্ডার করা ১১টি ট্রাকে ২৪৬ টন পেঁয়াজ রফতানি করে ভারত, যার অধিকাংশ পেঁয়াজ পচা ও নষ্ট হওয়ায় পুঁজি হারিয়ে ব্যাপকভাবে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন দেশের আমদানিকারকরা। ফলে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে আমদানিকারকরা মিয়ানমার, পাকিস্তান, মিসর, তুরস্ক, নেদারল্যান্ডস, ইউক্রেন ও চীন থেকে বিপুল পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি করেন।