ঢাকা ০৫:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ




প্রমোশনের সুপারিশ না করলে করোনা ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:৫১:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ অগাস্ট ২০২০ ৬৯ বার পড়া হয়েছে

অধ্যাপক পদে আপগ্রেডেশনের সুপারিশ না করলে বিভাগে করোনা ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে বিভাগীয় চেয়ারম্যানকে হুমকি প্রদান করেছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিন প্রকৌশল ও জৈবপ্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল হাসান। জিন প্রকৌশল ও জৈবপ্রযুক্তি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. জিয়াউল আমিন রেজিষ্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব বরাবর লিখিত অভিযোগ করলে রেজিষ্ট্রার ড. নাজমুল হাসানকে অবহিতকরণের জন্য চিঠি দেন যা সম্প্রতি প্রতিবেদকের নিকট পৌছেছে।

গত ২২ জুলাই ২০২০ খ্রি. রেজিষ্ট্রার দপ্তর কর্তৃক ড. নাজমুল হাসানের নিকট প্রেরিত চিঠিতে জানানো হয়, ‘সহযোগী অধ্যাপক পদে পাঁচ বছর চাকরীর অভিজ্ঞতা না থাকায় এবং সংযুক্ত প্রকাশনাসমূহ মানসম্মত না হওয়ায় ড. নাজমুল হাসানকে অধ্যাপক পদে আপগ্রেডেশনের সুপারিশ করা হয়নি। এছাড়া ওই শিক্ষক পূর্ববর্তী সময়ের অভিজ্ঞতার সনদ যথাযথভাবে উল্লেখ করেননি বা যে অভিজ্ঞতা উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলোও যথাযথ প্রক্রিয়ায় হয়নি। এসব বিষয় নিয়ে বিভাগীয় প্লানিং কমিটি করোনাকালীন সময়ে কোনো সিদ্ধান্তে উপণীত হতে না পারায় তার বিষয়ে কোনো সুপারিশ করতে পারে নি। পরবর্তীতে করোনা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হলে আর মিটিং করা সম্ভব না হলে বিভাগে করোনা ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে বিভাগীয় চেয়ারম্যানকে হুমকি প্রদান করেন ড. নাজমুল হাসান।’

ড. মো. নাজমুল হাসানের নিকট বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘করোনা ছড়িয়ে দেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার প্রমোশনের জন্য সকল নথি প্লানিং কমিটির নিকট পাঠালে বিভাগীয় চেয়ারম্যান অফিস দীর্ঘদিন ধরে তা আটকে রাখে। যেহেতু আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনোম সেন্টারে করোনা পরীক্ষণ দলের সাথে কাজ করি তাই আমাকে যদি বারবার বিভাগীয় অফিসে যাওয়া-আসা করতে হয় তাহলে ডিপার্টমেন্টের করোনা ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে বারবার তাদেরকে অবগত করি। এখন করোনা ছড়িয়ে দেওয়ার মিথ্যা অভিযোগের মাধ্যমে আমার প্রমোশন আটকে দেওয়ার চেষ্টা করছে। ইতিপূর্বেও অধ্যাপক ড. শেখ মিজানুর রহমান ও অধ্যাপক ড. মো. জিয়াউল আমিন প্রমোশন আটকে রেখেছিলেন। এছাড়া বিভাগে করোনা ছড়ানোর হুমকি ও ফেসবুকে যদি শিক্ষকদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করি তাহলে তারা কেন আমার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাজে লিখিত অভিযোগ দেয়নি? আমি যদি এমন কিছু করে থাকি তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিবে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমার বিরুদ্ধে এমন কোনো অভিযোগের বিষয় আমাকে অবহিত করা হয় নি।’

এ বিষয়ে মুঠোফোনে জিন প্রকৌশল ও জৈবপ্রযুক্তি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. জিয়াউল আমিন জানান, ‘আপনাদের নিকট যে ডকুমেন্টস আছে সেগুলো কাজে লাগিয়ে কাজ করেন, আমি এ বিষয়ে এখন কিছু বলতে পারবো না।’

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন জানান, করোনার বিষয়ে তাকে নিয়ে কেউ যেন তাকে বিতর্কিত করতে না পারে সেজন্য অনেক আগেই ড. নাজমুল হাসান করোনা পরীক্ষণ দল থেকে পদত্যাগ করেছেন। আর কারও পক্ষেই উদ্দেশ্যমূলকভাবে করোনা ছড়ানো সম্ভব না, কারন জিনোম সেন্টার পুরোপুরিভাবে সিসি ক্যামেরা নিয়ন্ত্রিত, আর শিক্ষক নাজমুল পিসিআর ল্যাবে কাজ করেন। জিনোম সেন্টারের পিসিআর আর ভাইরোলোজি ল্যাব সম্পূর্ণ আলাদা। তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে, ইতিপূর্বে যখন করোনা পরীক্ষা শুরু হয়েছিলো তখনও একদল দুষ্টু লোক কাজকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য এমন মিথ্যাচার করেছিলো।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




প্রমোশনের সুপারিশ না করলে করোনা ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি!

আপডেট সময় : ০৫:৫১:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ অগাস্ট ২০২০

অধ্যাপক পদে আপগ্রেডেশনের সুপারিশ না করলে বিভাগে করোনা ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে বিভাগীয় চেয়ারম্যানকে হুমকি প্রদান করেছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিন প্রকৌশল ও জৈবপ্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল হাসান। জিন প্রকৌশল ও জৈবপ্রযুক্তি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. জিয়াউল আমিন রেজিষ্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব বরাবর লিখিত অভিযোগ করলে রেজিষ্ট্রার ড. নাজমুল হাসানকে অবহিতকরণের জন্য চিঠি দেন যা সম্প্রতি প্রতিবেদকের নিকট পৌছেছে।

গত ২২ জুলাই ২০২০ খ্রি. রেজিষ্ট্রার দপ্তর কর্তৃক ড. নাজমুল হাসানের নিকট প্রেরিত চিঠিতে জানানো হয়, ‘সহযোগী অধ্যাপক পদে পাঁচ বছর চাকরীর অভিজ্ঞতা না থাকায় এবং সংযুক্ত প্রকাশনাসমূহ মানসম্মত না হওয়ায় ড. নাজমুল হাসানকে অধ্যাপক পদে আপগ্রেডেশনের সুপারিশ করা হয়নি। এছাড়া ওই শিক্ষক পূর্ববর্তী সময়ের অভিজ্ঞতার সনদ যথাযথভাবে উল্লেখ করেননি বা যে অভিজ্ঞতা উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলোও যথাযথ প্রক্রিয়ায় হয়নি। এসব বিষয় নিয়ে বিভাগীয় প্লানিং কমিটি করোনাকালীন সময়ে কোনো সিদ্ধান্তে উপণীত হতে না পারায় তার বিষয়ে কোনো সুপারিশ করতে পারে নি। পরবর্তীতে করোনা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হলে আর মিটিং করা সম্ভব না হলে বিভাগে করোনা ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে বিভাগীয় চেয়ারম্যানকে হুমকি প্রদান করেন ড. নাজমুল হাসান।’

ড. মো. নাজমুল হাসানের নিকট বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘করোনা ছড়িয়ে দেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার প্রমোশনের জন্য সকল নথি প্লানিং কমিটির নিকট পাঠালে বিভাগীয় চেয়ারম্যান অফিস দীর্ঘদিন ধরে তা আটকে রাখে। যেহেতু আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনোম সেন্টারে করোনা পরীক্ষণ দলের সাথে কাজ করি তাই আমাকে যদি বারবার বিভাগীয় অফিসে যাওয়া-আসা করতে হয় তাহলে ডিপার্টমেন্টের করোনা ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে বারবার তাদেরকে অবগত করি। এখন করোনা ছড়িয়ে দেওয়ার মিথ্যা অভিযোগের মাধ্যমে আমার প্রমোশন আটকে দেওয়ার চেষ্টা করছে। ইতিপূর্বেও অধ্যাপক ড. শেখ মিজানুর রহমান ও অধ্যাপক ড. মো. জিয়াউল আমিন প্রমোশন আটকে রেখেছিলেন। এছাড়া বিভাগে করোনা ছড়ানোর হুমকি ও ফেসবুকে যদি শিক্ষকদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করি তাহলে তারা কেন আমার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাজে লিখিত অভিযোগ দেয়নি? আমি যদি এমন কিছু করে থাকি তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিবে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমার বিরুদ্ধে এমন কোনো অভিযোগের বিষয় আমাকে অবহিত করা হয় নি।’

এ বিষয়ে মুঠোফোনে জিন প্রকৌশল ও জৈবপ্রযুক্তি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. জিয়াউল আমিন জানান, ‘আপনাদের নিকট যে ডকুমেন্টস আছে সেগুলো কাজে লাগিয়ে কাজ করেন, আমি এ বিষয়ে এখন কিছু বলতে পারবো না।’

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন জানান, করোনার বিষয়ে তাকে নিয়ে কেউ যেন তাকে বিতর্কিত করতে না পারে সেজন্য অনেক আগেই ড. নাজমুল হাসান করোনা পরীক্ষণ দল থেকে পদত্যাগ করেছেন। আর কারও পক্ষেই উদ্দেশ্যমূলকভাবে করোনা ছড়ানো সম্ভব না, কারন জিনোম সেন্টার পুরোপুরিভাবে সিসি ক্যামেরা নিয়ন্ত্রিত, আর শিক্ষক নাজমুল পিসিআর ল্যাবে কাজ করেন। জিনোম সেন্টারের পিসিআর আর ভাইরোলোজি ল্যাব সম্পূর্ণ আলাদা। তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে, ইতিপূর্বে যখন করোনা পরীক্ষা শুরু হয়েছিলো তখনও একদল দুষ্টু লোক কাজকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য এমন মিথ্যাচার করেছিলো।