ঢাকা ০৩:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার! Logo ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হওয়া শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোর সংস্কার শুরু Logo বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির দাবিতে শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের মানববন্ধন Logo কুবি উপাচার্যের বক্তব্যের প্রমাণ দিতে শিক্ষক সমিতির সাত দিনের আল্টিমেটাম




মন্ত্রী, সচিব পরিচয়ে অভিনব প্রতারণা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৩৫:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুন ২০২০ ১০৪ বার পড়া হয়েছে

কখনো মন্ত্রী, কখনো সচিব বলে পরিচয় দেন নিজেকে। পরিবার বা স্বজনের সমস্যার কথা বলে টাকা নেন। এভাবে নানা পরিচয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের পর গোয়েন্দা জালে ধরা পড়তে হয়েছে প্রতারক সোহেল রানাকে।

নিজেকে মন্ত্রী বা সচিব পরিচয় দেয়ার পর অধীনস্থ কর্মকর্তাদের ফোন দিয়ে প্রতারণা করাই কুষ্টিয়ার সোহেলের পেশা। ভুক্তভোগীরাও যাচাই-বাছাই না করেই দিয়ে দেন টাকা। জানুয়ারি মাসে খুলনার প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক আফরোজা খান মিতুর কাছ থেকে নেন ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। তিনি টেলিফোনে ডিবিসি নিউজকে জানান, ‘ফোন দিয়ে আমাকে বললেন আমাদের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বাবু মহোদয় উনার বোন ও বোনের জামাই ভারতে যাওয়ার পথে বিপদে পড়েছেন। তাদের কিছু অর্থ সাহায্য লাগবে। তো আমি টাকা পাঠালাম।’

সোহেল গত কয়েক বছরে নিজেকে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, অতিরিক্ত সচিব, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রীর ছেলের বন্ধু, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, অতিরিক্ত সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিবসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের পরিচয় দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা। করোনা সংকট দেখা দিলে সোহেল বেছে নেয় নতুন কৌশল। ত্রাণ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগে যেসব চেয়ারম্যান মেম্বারদের বহিষ্কার করা হয়েছে তাদেরকে পদে বহাল রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয় সে।

প্রতারক সোহেল বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগে মন্ত্রণালয়ের অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি কাজী আশরাফুজ্জামান নামে পরিচয় দিতাম। বরখাস্তকৃত ওই চেয়ারম্যান বা মেম্বারের নাম্বারটা চাইতাম। বলতাম আপনাদের এই বিষয়টা তদন্তের জন্য আমাকে দিয়েছে। চেয়ারম্যানেরা বলতো, আমরা আওয়ামী লীগের সভাপতি এই সেই। তারা দিতো না, তবে মেম্বাররা গরীব এরা দিতো।’

যেসব মন্ত্রীর নামে প্রতারণা করা হয়েছে তারা আইনি ব্যবস্থার কথা ভাবছেন। সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বাবু বলেন, ‘আলাদা আলাদা মামলা হলে সুবিধা হবে। একটাতে তার জামিন হওয়া মানে সবগুলোতেই জামিন হয়ে যাওয়া। মামলা তো অবশ্যই করা উচিত কিভাবে করা যায় সেটা আমরা দেখছি।’

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, ‘গোয়েন্দা বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেছিলেন আমার নাম ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিবো।’

স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কাজী আশরাফ উদ্দীন বলেন, ‘মোবাইল নাম্বার তো লাগেনা ওয়েবসাইটে গেলেই তো জানা যায় কোন জায়গায় কোন অফিসার আছেন। পুলিশ ধরেছে তারাই তো অ্যাকশন নেবে তাইনা।’

ফোনে এরকম টাকা চাইলে না দেয়ার পরামর্শ পুলিশের। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, ‘মন্ত্রী হোক, সেক্রেটারি হোক, পুলিশ অফিসার হোক কারও কাছে টাকা চাওয়ার আইনগত ও নৈতিক অধিকার নাই। সেজন্য আপনারা টাকা দিবেনও না প্রতারিত হতেও যাবেন না।’

প্রতারিতরা মামলা করলে তদন্ত অনেক সহজ হয়। পুলিশের অনুরোধ এমন কোনো ঘটনার শিকার হলে যেন মামলা করেন ভুক্তভোগীরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




মন্ত্রী, সচিব পরিচয়ে অভিনব প্রতারণা

আপডেট সময় : ১১:৩৫:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুন ২০২০

কখনো মন্ত্রী, কখনো সচিব বলে পরিচয় দেন নিজেকে। পরিবার বা স্বজনের সমস্যার কথা বলে টাকা নেন। এভাবে নানা পরিচয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের পর গোয়েন্দা জালে ধরা পড়তে হয়েছে প্রতারক সোহেল রানাকে।

নিজেকে মন্ত্রী বা সচিব পরিচয় দেয়ার পর অধীনস্থ কর্মকর্তাদের ফোন দিয়ে প্রতারণা করাই কুষ্টিয়ার সোহেলের পেশা। ভুক্তভোগীরাও যাচাই-বাছাই না করেই দিয়ে দেন টাকা। জানুয়ারি মাসে খুলনার প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক আফরোজা খান মিতুর কাছ থেকে নেন ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। তিনি টেলিফোনে ডিবিসি নিউজকে জানান, ‘ফোন দিয়ে আমাকে বললেন আমাদের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বাবু মহোদয় উনার বোন ও বোনের জামাই ভারতে যাওয়ার পথে বিপদে পড়েছেন। তাদের কিছু অর্থ সাহায্য লাগবে। তো আমি টাকা পাঠালাম।’

সোহেল গত কয়েক বছরে নিজেকে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, অতিরিক্ত সচিব, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রীর ছেলের বন্ধু, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, অতিরিক্ত সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিবসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের পরিচয় দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা। করোনা সংকট দেখা দিলে সোহেল বেছে নেয় নতুন কৌশল। ত্রাণ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগে যেসব চেয়ারম্যান মেম্বারদের বহিষ্কার করা হয়েছে তাদেরকে পদে বহাল রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয় সে।

প্রতারক সোহেল বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগে মন্ত্রণালয়ের অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি কাজী আশরাফুজ্জামান নামে পরিচয় দিতাম। বরখাস্তকৃত ওই চেয়ারম্যান বা মেম্বারের নাম্বারটা চাইতাম। বলতাম আপনাদের এই বিষয়টা তদন্তের জন্য আমাকে দিয়েছে। চেয়ারম্যানেরা বলতো, আমরা আওয়ামী লীগের সভাপতি এই সেই। তারা দিতো না, তবে মেম্বাররা গরীব এরা দিতো।’

যেসব মন্ত্রীর নামে প্রতারণা করা হয়েছে তারা আইনি ব্যবস্থার কথা ভাবছেন। সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বাবু বলেন, ‘আলাদা আলাদা মামলা হলে সুবিধা হবে। একটাতে তার জামিন হওয়া মানে সবগুলোতেই জামিন হয়ে যাওয়া। মামলা তো অবশ্যই করা উচিত কিভাবে করা যায় সেটা আমরা দেখছি।’

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, ‘গোয়েন্দা বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেছিলেন আমার নাম ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিবো।’

স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কাজী আশরাফ উদ্দীন বলেন, ‘মোবাইল নাম্বার তো লাগেনা ওয়েবসাইটে গেলেই তো জানা যায় কোন জায়গায় কোন অফিসার আছেন। পুলিশ ধরেছে তারাই তো অ্যাকশন নেবে তাইনা।’

ফোনে এরকম টাকা চাইলে না দেয়ার পরামর্শ পুলিশের। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, ‘মন্ত্রী হোক, সেক্রেটারি হোক, পুলিশ অফিসার হোক কারও কাছে টাকা চাওয়ার আইনগত ও নৈতিক অধিকার নাই। সেজন্য আপনারা টাকা দিবেনও না প্রতারিত হতেও যাবেন না।’

প্রতারিতরা মামলা করলে তদন্ত অনেক সহজ হয়। পুলিশের অনুরোধ এমন কোনো ঘটনার শিকার হলে যেন মামলা করেন ভুক্তভোগীরা।