ঢাকা ১০:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার! Logo ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হওয়া শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোর সংস্কার শুরু Logo বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির দাবিতে শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের মানববন্ধন Logo কুবি উপাচার্যের বক্তব্যের প্রমাণ দিতে শিক্ষক সমিতির সাত দিনের আল্টিমেটাম




উত্তরায় ট্রাফিক পুলিশের অনিয়ম-চাঁদাবাজি!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:৩০:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জানুয়ারী ২০১৯ ১০৯ বার পড়া হয়েছে

তরিক শিবলী; বেশিদিন হয়নি সড়ক দুর্ঘটনা ও যানজট নিরসনের দাবিতে স্কুলের ছেলেমেয়েরা রাস্তায় নেমে এসেছিল। তাদের একটি শ্লোগান ছিল- ‘ইউ ওয়ান্ট জাস্টিস’। সেই ন্যায়বিচারটা তারা পায়নি বলতে হয়। সরেজমিন দেখা গেছে, রাজধানীর উত্তরা এলাকার মূল সড়কে, শপিংমল ও সুপার মার্কেটের সামনে এলোপাতাড়ি গাড়ি পার্কিং হচ্ছে। দিনের বেশির ভাগ সময় অসহনীয় যানজট লেগে থাকে। ফলে নগরবাসীর কর্মঘণ্টা নষ্ট ও মানুষকে পোহাতে হচ্ছে অসহনীয় ভোগান্তি।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বিশৃঙ্খল উত্তরার সড়কের জন্য দায়ী পুলিশের ১০ ব্যর্থতা। নিরাপদ সড়কের জন্য ঘুষ ও হয়রানি বন্ধ, আলাদা লেন বাস্তবায়ন, প্রভাবশালীদের আইন মান্য করতে বাধ্য করা, চালকের যোগ্যতা যাচাই, গাড়ির ফিটনেস নিশ্চিতকরণ, স্বয়ংক্রিয় বাতি ব্যবহার, অটোরিকশার নিয়ম বাস্তবায়ন, উল্টো পথে গাড়ি চলাচল প্রতিরোধ এবং বিশেষ নির্দেশনা বাস্তবায়ন অত্যাবশ্যক ছিল। কিন্তু বাস্তবায়ন করতে পারেনি ট্রাফিক পুলিশ। উল্টো পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের কিছু কর্মকা- সমস্যাকে আরো সঙ্গিন করে তুলছে বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের। রাস্তায় গাড়ি আটক করে হয়রানি, টাকা আদায় (চাঁদাবাজি), টাকা না দিলে ভুল বা মিথ্যা অভিযোগে মামলা দেওয়াসহ ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ নগরবাসীর।

উত্তরার ব্যস্ততম শপিংমল রাজলীক্ষতে গিয়ে দেখা গেছে, পার্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত জায়গা নির্ধারণ করে দিলেও সেখানে গাড়ি উঠছে না। অথচ ব্যস্ত সড়কের দুই পাশে দিনভর গাড়ি পার্ক করে রাখা হয়। এভাবে উত্তরার ১ নং সেক্টর, জসিম উদ্দিন রোডসহ বিভিন্ন সেক্টরের শপিংমলগুলোতে গাড়ি পার্ক করার জায়গা থাকলেও তা মানছেন না চালকরা। অন্যদিকে অনেক শপিংমলের পার্কিং এর জায়গা থাকলেও তা অন্য কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। আবার কোনো কোনো মার্কেটে পার্ক করার জায়গায় দোকান ভাড়া দেওয়া হয়েছে। ফলে এয়ারপোর্ট থেকে আব্দুলাহ-পুর পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কেও জ্যাম লেগে থাকে। এ ছাড়া সেক্টরের ভেতরের সড়কগুলোতেও গাড়ি পার্ক করে শপিং করেন লোকজন। ফলে উত্তরাবাসীর জন্য অবৈধ পার্কিং যেন অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উত্তরা ১ নং সেক্টর কল্যাণ সমিতির সাবেক নির্বাহী সদস্য বলেন, মানুষের অভ্যাস খুব খারাপ। কিছু মানুষের নিয়ম না মানার কারণে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে লক্ষাধিক মানুষকে।এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উত্তরা বলেন, অবৈধ পার্কিং ঠেকাতে বিভিন্ন এলাকায় গাড়ি পার্ক করার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা নির্ধারণ করে দিয়েছে পুলিশ। যারা অবৈধ গাড়ি পার্ক করছেন তাদের দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তারা মামলা দিচ্ছেন ও জরিমানা আদায় করছেন। এ ছাড়া এসব জায়গায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে, যারা অবৈধ পার্কিং করছেন, তাদের ভিডিও দেখে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। এ ছাড়া ২২ টি জায়গা চিহ্নিত করে পার্কিং স্পটের জন্য সিটি করপোরেশনকে সুপারিশ করেছে ডিএমপি। তিনি বলেন, যারা আইন অমান্য করে গাড়ি পার্ক করে, তাদের কোনো ছাড় দিচ্ছে না পুলিশ।

পথচারী, গাড়ি চালকসহ সবারই ট্রাফিক আইন যথাসম্ভব মেনে চলা জরুরি। তবে মূল কাজটা তো ট্রাফিক পুলিশের। সারা দেশে প্রায় ১০ হাজার ট্রাফিক পুলিশের মধ্যে প্রায় ৪ হাজার ঢাকাতেই দায়িত্ব পালন করছে। কিন্তু তাদের বেশিরভাগই অদক্ষ, কিছু ক্ষেত্রে দুর্নীতিবাজ বলেই প্রমাণিত হচ্ছে। তাই যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশদের উন্নত দেশের মতো আধুনিক কৌশলে প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তোলা জরুরি।এক্ষেত্রে আরও জরুরি উন্নত দেশগুলোকে অনুসরণ করে আধুনিক স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু করা। একসময় ঢাকায় স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু ছিল। সময় এসেছে আবারও সেই ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার। জানা গেল রাজধানীতে শিগগিরই পরীক্ষামূল কভাবে রিমোট সিস্টেমে ট্রাফিক সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ইন্টিগ্রেটেড ট্রাফিক সিস্টেম নামে একটি আধুনিক ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা ঢাকার সড়কে চালুর কথা থাকলেও তা এখনও সফলতার মুখ দেখেনি। এক্ষেত্রে দুর্নীতি, সমন্বয়হীনতা কতটা দায়ী তা খুঁজে বের করা উচিত।

পুলিশের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে জানাতে পুলিশপ্রধানের (আইজিপি) কাছে সরাসরি অভিযোগ করার ব্যবস্থা করা হয় গত বছরের ১৩ নভেম্বর।‘আইজিপিস কমপ্লেইন সেলে’ ফোন করে, ই-মেইল করে বা কুরিয়ারে চিঠি লিখে অভিযোগ করা যায়। এ পর্যন্ত সেখানে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে। জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘প্রতিদিন গড়ে ২০টির মতো অভিযোগ আসে। সব বিভাগের সেবা নিয়ে অসন্তোষের অভিযোগ পাচ্ছি আমরা। বেশি অভিযোগ ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে। প্রথম দুই মাসের মধ্যে যে অভিযোগ জমা পড়ে তার অর্ধেকই ছিল ট্রাফিক পুলিশের। হয়রানি ও ঘুষ দাবির অভিযোগই বেশি।’
ওই কর্মকর্তা জানান, আইজিপিস কমপ্লেইন সেলে ০১৭৬৯৬৯৩৫৩৫০ অথবা ১৭৬৯৬৯৩৫৩৬০ মোবাইল নম্বরে কল করে এবং পড়সঢ়ষধরহ@ঢ়ড়ষরপব.মড়া.নফ-তে মেইল করে অভিযোগ করা যায়। ট্রাফিক পুলিশের কয়েকজন সদস্য বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, অনেকে ঘুষ দিয়ে চাকরিতে ঢুকেছে। এ কারণে প্রথমেই অতিরিক্ত টাকা আয় করার ফন্দি খোঁজে। আবার পুলিশের অন্য বিভাগের বাড়তি আয়ের সুযোগ থাকলেও ট্রাফিক পুলিশের নেই। এ কারণে রাস্তায় অবৈধ সুবিধা নেওয়ার দিকে ঝুঁকে পড়ে কেউ কেউ। লেন থেকেও নেই : ঢাকার রাজপথে দাগ দিয়ে লেন ভাগ করা থাকলেও সেগুলো মানে না চালকরা। মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার, বাস নিজের লেন অনুযায়ী না চলে ইচ্ছামতো চলে এবং বিশৃঙ্খলা তৈরি করে। ট্রাাফিক পুলিশের সদস্যদের বিরুদ্ধে নিজস্ব সিএনজি অটোরিকশা চালানো, লেগুনার লাইন চালানো এবং বাসস্ট্যান্ড থেকে চাঁদা আদায়েরও অভিযোগ আছে। রাতে রাজধানীর প্রবেশ পথ উত্তরাতে ট্রাক থামিয়ে টাকা আদায়েরও অভিযোগ রয়েছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
নগর বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, রাজধানীর যানজট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পরিকল্পিত পার্কিং ব্যবস্থা গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। এ ছাড়া প্রতিটি মার্কেটের বড় পরিসরে নিজস্ব পার্কিং ব্যবস্থাও গড়ে তোলা উচিত। তা হলে কমে আসবে যানজট আর লাঘব হবে জনগণের দুর্ভোগ। তবে পার্কিং নৈরাজ্যের সঙ্গে এক শ্রেণির ইজারাদার, পুলিশ ও রাজনৈতিক সুবিধাভোগীর স্বাথের সম্পর্ক থাকায় এটা বন্ধ করা যাচ্ছে না বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




উত্তরায় ট্রাফিক পুলিশের অনিয়ম-চাঁদাবাজি!

আপডেট সময় : ০৪:৩০:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জানুয়ারী ২০১৯

তরিক শিবলী; বেশিদিন হয়নি সড়ক দুর্ঘটনা ও যানজট নিরসনের দাবিতে স্কুলের ছেলেমেয়েরা রাস্তায় নেমে এসেছিল। তাদের একটি শ্লোগান ছিল- ‘ইউ ওয়ান্ট জাস্টিস’। সেই ন্যায়বিচারটা তারা পায়নি বলতে হয়। সরেজমিন দেখা গেছে, রাজধানীর উত্তরা এলাকার মূল সড়কে, শপিংমল ও সুপার মার্কেটের সামনে এলোপাতাড়ি গাড়ি পার্কিং হচ্ছে। দিনের বেশির ভাগ সময় অসহনীয় যানজট লেগে থাকে। ফলে নগরবাসীর কর্মঘণ্টা নষ্ট ও মানুষকে পোহাতে হচ্ছে অসহনীয় ভোগান্তি।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বিশৃঙ্খল উত্তরার সড়কের জন্য দায়ী পুলিশের ১০ ব্যর্থতা। নিরাপদ সড়কের জন্য ঘুষ ও হয়রানি বন্ধ, আলাদা লেন বাস্তবায়ন, প্রভাবশালীদের আইন মান্য করতে বাধ্য করা, চালকের যোগ্যতা যাচাই, গাড়ির ফিটনেস নিশ্চিতকরণ, স্বয়ংক্রিয় বাতি ব্যবহার, অটোরিকশার নিয়ম বাস্তবায়ন, উল্টো পথে গাড়ি চলাচল প্রতিরোধ এবং বিশেষ নির্দেশনা বাস্তবায়ন অত্যাবশ্যক ছিল। কিন্তু বাস্তবায়ন করতে পারেনি ট্রাফিক পুলিশ। উল্টো পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের কিছু কর্মকা- সমস্যাকে আরো সঙ্গিন করে তুলছে বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের। রাস্তায় গাড়ি আটক করে হয়রানি, টাকা আদায় (চাঁদাবাজি), টাকা না দিলে ভুল বা মিথ্যা অভিযোগে মামলা দেওয়াসহ ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ নগরবাসীর।

উত্তরার ব্যস্ততম শপিংমল রাজলীক্ষতে গিয়ে দেখা গেছে, পার্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত জায়গা নির্ধারণ করে দিলেও সেখানে গাড়ি উঠছে না। অথচ ব্যস্ত সড়কের দুই পাশে দিনভর গাড়ি পার্ক করে রাখা হয়। এভাবে উত্তরার ১ নং সেক্টর, জসিম উদ্দিন রোডসহ বিভিন্ন সেক্টরের শপিংমলগুলোতে গাড়ি পার্ক করার জায়গা থাকলেও তা মানছেন না চালকরা। অন্যদিকে অনেক শপিংমলের পার্কিং এর জায়গা থাকলেও তা অন্য কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। আবার কোনো কোনো মার্কেটে পার্ক করার জায়গায় দোকান ভাড়া দেওয়া হয়েছে। ফলে এয়ারপোর্ট থেকে আব্দুলাহ-পুর পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কেও জ্যাম লেগে থাকে। এ ছাড়া সেক্টরের ভেতরের সড়কগুলোতেও গাড়ি পার্ক করে শপিং করেন লোকজন। ফলে উত্তরাবাসীর জন্য অবৈধ পার্কিং যেন অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উত্তরা ১ নং সেক্টর কল্যাণ সমিতির সাবেক নির্বাহী সদস্য বলেন, মানুষের অভ্যাস খুব খারাপ। কিছু মানুষের নিয়ম না মানার কারণে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে লক্ষাধিক মানুষকে।এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উত্তরা বলেন, অবৈধ পার্কিং ঠেকাতে বিভিন্ন এলাকায় গাড়ি পার্ক করার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা নির্ধারণ করে দিয়েছে পুলিশ। যারা অবৈধ গাড়ি পার্ক করছেন তাদের দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তারা মামলা দিচ্ছেন ও জরিমানা আদায় করছেন। এ ছাড়া এসব জায়গায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে, যারা অবৈধ পার্কিং করছেন, তাদের ভিডিও দেখে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। এ ছাড়া ২২ টি জায়গা চিহ্নিত করে পার্কিং স্পটের জন্য সিটি করপোরেশনকে সুপারিশ করেছে ডিএমপি। তিনি বলেন, যারা আইন অমান্য করে গাড়ি পার্ক করে, তাদের কোনো ছাড় দিচ্ছে না পুলিশ।

পথচারী, গাড়ি চালকসহ সবারই ট্রাফিক আইন যথাসম্ভব মেনে চলা জরুরি। তবে মূল কাজটা তো ট্রাফিক পুলিশের। সারা দেশে প্রায় ১০ হাজার ট্রাফিক পুলিশের মধ্যে প্রায় ৪ হাজার ঢাকাতেই দায়িত্ব পালন করছে। কিন্তু তাদের বেশিরভাগই অদক্ষ, কিছু ক্ষেত্রে দুর্নীতিবাজ বলেই প্রমাণিত হচ্ছে। তাই যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশদের উন্নত দেশের মতো আধুনিক কৌশলে প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তোলা জরুরি।এক্ষেত্রে আরও জরুরি উন্নত দেশগুলোকে অনুসরণ করে আধুনিক স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু করা। একসময় ঢাকায় স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু ছিল। সময় এসেছে আবারও সেই ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার। জানা গেল রাজধানীতে শিগগিরই পরীক্ষামূল কভাবে রিমোট সিস্টেমে ট্রাফিক সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ইন্টিগ্রেটেড ট্রাফিক সিস্টেম নামে একটি আধুনিক ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা ঢাকার সড়কে চালুর কথা থাকলেও তা এখনও সফলতার মুখ দেখেনি। এক্ষেত্রে দুর্নীতি, সমন্বয়হীনতা কতটা দায়ী তা খুঁজে বের করা উচিত।

পুলিশের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে জানাতে পুলিশপ্রধানের (আইজিপি) কাছে সরাসরি অভিযোগ করার ব্যবস্থা করা হয় গত বছরের ১৩ নভেম্বর।‘আইজিপিস কমপ্লেইন সেলে’ ফোন করে, ই-মেইল করে বা কুরিয়ারে চিঠি লিখে অভিযোগ করা যায়। এ পর্যন্ত সেখানে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে। জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘প্রতিদিন গড়ে ২০টির মতো অভিযোগ আসে। সব বিভাগের সেবা নিয়ে অসন্তোষের অভিযোগ পাচ্ছি আমরা। বেশি অভিযোগ ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে। প্রথম দুই মাসের মধ্যে যে অভিযোগ জমা পড়ে তার অর্ধেকই ছিল ট্রাফিক পুলিশের। হয়রানি ও ঘুষ দাবির অভিযোগই বেশি।’
ওই কর্মকর্তা জানান, আইজিপিস কমপ্লেইন সেলে ০১৭৬৯৬৯৩৫৩৫০ অথবা ১৭৬৯৬৯৩৫৩৬০ মোবাইল নম্বরে কল করে এবং পড়সঢ়ষধরহ@ঢ়ড়ষরপব.মড়া.নফ-তে মেইল করে অভিযোগ করা যায়। ট্রাফিক পুলিশের কয়েকজন সদস্য বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, অনেকে ঘুষ দিয়ে চাকরিতে ঢুকেছে। এ কারণে প্রথমেই অতিরিক্ত টাকা আয় করার ফন্দি খোঁজে। আবার পুলিশের অন্য বিভাগের বাড়তি আয়ের সুযোগ থাকলেও ট্রাফিক পুলিশের নেই। এ কারণে রাস্তায় অবৈধ সুবিধা নেওয়ার দিকে ঝুঁকে পড়ে কেউ কেউ। লেন থেকেও নেই : ঢাকার রাজপথে দাগ দিয়ে লেন ভাগ করা থাকলেও সেগুলো মানে না চালকরা। মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার, বাস নিজের লেন অনুযায়ী না চলে ইচ্ছামতো চলে এবং বিশৃঙ্খলা তৈরি করে। ট্রাাফিক পুলিশের সদস্যদের বিরুদ্ধে নিজস্ব সিএনজি অটোরিকশা চালানো, লেগুনার লাইন চালানো এবং বাসস্ট্যান্ড থেকে চাঁদা আদায়েরও অভিযোগ আছে। রাতে রাজধানীর প্রবেশ পথ উত্তরাতে ট্রাক থামিয়ে টাকা আদায়েরও অভিযোগ রয়েছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
নগর বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, রাজধানীর যানজট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পরিকল্পিত পার্কিং ব্যবস্থা গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। এ ছাড়া প্রতিটি মার্কেটের বড় পরিসরে নিজস্ব পার্কিং ব্যবস্থাও গড়ে তোলা উচিত। তা হলে কমে আসবে যানজট আর লাঘব হবে জনগণের দুর্ভোগ। তবে পার্কিং নৈরাজ্যের সঙ্গে এক শ্রেণির ইজারাদার, পুলিশ ও রাজনৈতিক সুবিধাভোগীর স্বাথের সম্পর্ক থাকায় এটা বন্ধ করা যাচ্ছে না বলে মত বিশেষজ্ঞদের।