রাজধানীতে র্যাব পরিচয়ে ডাকাতি, গ্রেফতার ২
- আপডেট সময় : ০৯:১৩:৫৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২০ ৯৯ বার পড়া হয়েছে
সকালের সংবাদ; রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে র্যাব পরিচয়ে ডাকাতি চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ওরফে স্বাধীন (৪৭) ও আলমগীর খাঁ (৩৫)।
পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর) এর বিশেষ পুলিশ সুপার মোঃ বশির আহমেদ ডিএমপি নিউজকে জানান, মোঃ মাহামুদুল হাসান (২২) নামের এক ব্যক্তি ২৮ ডিসেম্বর,২০১৯ সকাল ৯.০০ টায় খিলক্ষেত থেকে বাসে করে যাত্রাবাড়ী যাচ্ছিলেন। গাড়িটি সকাল ১১.০০ টায় যাত্রাবাড়ী থানার শনির আখরা ফুটওভার ব্রীজের নিচে এসে পৌঁছায়। এরপর র্যাবের জ্যাকেট পরিহিত অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন লোক নিজেদেরকে র্যাব সদস্য পরিচয় দিয়ে পিস্তলের ভয় দেখিয়ে তাকে গাড়ি থেকে নামায়। তার নামে অভিযোগ আছে বলে বাস থেকে নামিয়ে তার নিকটে থাকা একটি আইফোন, একটি শাওমি রেডমি নোট এবং নগদ ৩ লক্ষ টাকা লুটে নেয়। পরে তার মুখ চেপে ধরে মারতে মারতে ব্রীজের নীচে থাকা ডাকাত দলের এক্স করোলা গাড়িতে উঠায়। গাড়িতে উঠালে সে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে থাকে। তার চিৎকার শুনে একজন উবার চালক ও ট্রাফিক পুলিশ কনস্টেবল এবং উপস্থিত জনতা এগিয়ে আসেন। তাদের এগিয়ে আসতে দেখে ডাকাত দল তাদের গাড়ি ও র্যাবের জ্যাকেট ফেলে রেখে দৌড়ে পালিয়ে যায়। ট্রাফিক পুলিশের মুঠো ফোন থেকে তার ভাইকে ফোন করে ঘটনা সম্পর্কে জানানো হয়। তার ভাই তাৎক্ষণিক ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে পুলিশের সহায়তা চাইলে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে আসে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ডাকাতদের ফেলে যাওয়া এক্স করোলা গাড়ি, র্যাবের জ্যাকেট, গাড়ির কাগজ ও আইডি কার্ড উদ্ধার করে। উক্ত ঘটনায় তার ভাই যাত্রাবাড়ী থানায় একটি মামলা রুজু করেন।
তিনি বলেন, মামলাটি অধিগ্রহণ করে তদন্ত শুরু করে পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর)। তদন্তকালে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর) এর একটি বিশেষ টিম ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ০৯.৩০ টায় দারুসসালাম খালেক ফিলিং স্টেশনের সামনে অভিযান চালিয়ে মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ওরফে স্বাধীনকে গ্রেফতার করে। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই দিন রাত ০৮.৩০ টায় মোহাম্মদপুর কলেজ গেটের সামনে অভিযান চালিয়ে আলমগীর খাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তিনি ডিএমপি নিউজকে জানান, গ্রেফতারকৃতরা সংঘবদ্ধ একটি ডাকাত দলের সদস্য। তাদের পরিচয় হয় জেলখানায়। এরপর শুরু হয় তাদের ডাকাতি কার্যক্রম। তারা কখনো র্যাব, কখনো ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ঢাকা মহানগরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রথমে অপহরণ ও পরে ডাকাতি করে সর্বস্ব লুটে নিত। ডাকাত দলের এ সদস্যরা দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যবসায়ীদের বড় অংকের নগদ টাকার লেনদেন সর্ম্পকে তথ্য সংগ্রহ করে টাকা নিয়ে যাওয়ার সময় অনুসরণ করত। পথিমধ্যে উক্ত ব্যবসায়ীদের কাছে নিজেদেরকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাদের কাছে অবৈধ জিনিস আছে বলে আটক করত এবং তাদের নির্ধারিত মাইক্রোবাসে করে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যেত। পরবর্তী সময়ে নিরিবিলি ও সুবিধাজনক স্থানে নিয়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মারধর করে ব্যবসায়ীদের কাছে থাকা টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুটে নিত। ডাকাতি করার জন্য তারা সাধারণত মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকার ভাড়া করে নিত। ডাকাতি শেষে উক্ত গাড়ি জমা দিয়ে তারা চলে যেত।
তিনি আরো বলেন, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
তিনি বলেন, এর আগে সংঘবদ্ধ এই ডাকাত দলের দুই সদস্য মোঃ মেহেদী হাসান ও মোঃ আশিক পারভেজকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন।