ঢাকা ১০:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo বুড়িচংয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউএনও’র! Logo ইবি উপাচার্যকে ১০লাখ ঘুষ প্রস্তাব এক তরুনীর! Logo মামলায় জর্জরিত কুলাউড়ার ছাত্রদল নেতা মিতুল পালিয়ে আছেন প্রবাসে Logo ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে শাবি ছাত্রলীগের কার্যক্রম শুরু Logo থিয়েটার কুবির ইফতার মাহফিল Logo রাজধানীর শান্তিনগর বাজার নিয়ে শত কোটি টাকার লুটপাট Logo ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি শিক্ষক সমিতির শোক Logo ঢাবি শিক্ষক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo ময়মনসিংহ স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের নতুন সভাপতি সজীব, সম্পাদক আশিক Logo পুরান ঢাকায় জুতার কারখানার আগুন




হাকিমপুরীসহ ২২ জর্দা খয়েরে ক্যান্সারের বিষাক্ত কেমিক্যাল

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৫৪:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ নভেম্বর ২০১৯ ৯০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

তামাকজাতীয় পণ্য হাকিমপুরীসহ ২২ জর্দা ও খয়েরে মানবদেহের ক্ষতিকর এবং ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার মতো মাত্রাতিরিক্ত বিষাক্ত কেমিক্যাল লেড, ক্যাডমিয়াম ও ক্রোমিয়াম পেয়েছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ-বিএফএসএ। সংস্থাটি ২২ প্রতিষ্ঠানের নমুনা পরীক্ষা করে বলেছে- দেশের অনেক মানুষ পান-জর্দায় আসক্ত। বাজারে পাওয়া এই জর্দা, খয়ের ও গুলে ক্ষতিকর ধাতু আছে। এগুলো নিয়মিত খেলে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। ওই সব তামাক পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠানগুলো সিলগালা করার ঘোষণা দিয়েছে বিএফএসএ। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ- বিএফএসএ চেয়ারম্যান সৈয়দা সারওয়ার জাহান গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, জনগণকে সজাগ হতে হবে যে, এই জর্দা ও খয়ের এক ধরনের মাদক। এগুলো শিগগিরই বাজার থেকে প্রত্যাহার করা হবে। অন্যথায় মোবাইল কোড পরিচালনা করে ওই সব প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হবে। প্রয়োজনে মামলাও করা হবে।

দেশের তামাক জাতীয় ২২টি প্রতিষ্ঠান উৎপাদিত জর্দা, খয়ের ও গুলের নমুনা পরীক্ষা করে বিএফএসএ। গত বৃহস্পতিবার নমুনা পরীক্ষার ওই ফল প্রকাশ করে সরকারি এই সংস্থাটি বলেছে- হাকিমপুরী, শাহজাদী ও রতন জর্দাসহ দেশের ২২টি জর্দা-গুল ও খয়েরে বিষাক্ত হেভি কেমিক্যাল লেড, ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়াম পাওয়া গেছে। যা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এগুলো দীর্ঘদিন খাওয়ার কারণে মাড়ি ও লিভার ক্যান্সারের মতো জটিল রোগ হয়। এর মধ্যে ১৩ প্রতিষ্ঠানের জর্দা, ছয় প্রতিষ্ঠানের খয়ের ও তিন প্রতিষ্ঠানের গুলের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। যার সবকটিতে হেভি কেমিক্যাল লেড, ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়ামের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।

বিএফএসএ জানিয়ছে, নমুনা পরীক্ষা করা পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে হাকিমপুরী জর্দা, গিলা খয়ের, তীর মার্কা খয়ের, মালাই খয়ের, অন্তরা খয়ের, কালো পাথর বাল্ক খয়ের, সাদা বাল্ক খয়ের, ঈগল গুল, মোস্তফা গুল, শাহজাদা গুল, রতন জর্দা, গুরুদেব জর্দা, শাহজাদী জর্দা (নির্মলের), মহিউদ্দিন জর্দা, ঢাকা জর্দা, মকিমপুর জর্দা, শাহী হীরা জর্দা, জাফরানী জর্দা, শাহজাদী জর্দা (আলম), বউ শাহজাদী জর্দা এবং চাঁদপুরী জর্দা। বিএফএসএ জানিয়েছে, যারা পানের সঙ্গে খয়ের খান তাদের জন্য রয়েছে আরও দুঃসংবাদ। কারণ এক ধরনের গাছের বাকল থেকে এই পণ্যটি তৈরির কথা থাকলেও, সেটি কোনো কোনো ক্ষেত্রে শুধু কেমিক্যাল রং দিয়ে তৈরি করা হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা গেছে, ফার্নিচারের বার্নিশে ব্যবহারের জন্য যেসব কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় সেগুলো দিয়েই সরাসরি খয়ের তৈরি হচ্ছে। যার মধ্যে ক্ষতিকর ভারী ধাতু লেড, ক্রোমিয়াম ও ক্যাডমিয়ামের মতো পদার্থ পাওয়া গেছে। বিএফএসএ তথ্য বলছে, বাজারে বিক্রি হওয়া ২২টি ব্র্যান্ডের জর্দা-গুল ও খয়েরের নমুনা পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করে প্রত্যেকটিতে বিষাক্ত হেভি কেমিক্যাল লেড, ক্যাডমিয়াম ও ক্রোমিয়াম পাওয়া গেছে। যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। বিএফএসএ প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছি। প্রয়োজনে এসব প্রতিষ্ঠান সিলগালা করা হবে। কারণ- বাজারে যেসব জর্দা, গুল ও খয়ের বিক্রি হচ্ছে তার সবকটিই ক্ষতিকর। এগুলো খেলে মানুষ বেশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ে। এসব পণ্য মানুষ সরাসরি খায়। ফলে পাকস্থলী আক্রান্ত হয়। এতে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভোগে। এ জন্য মানুষকে সচেতন হতে হবে। একই সঙ্গে এসব ক্ষতিকর পণ্য সেবন থেকে বিরত থাকতে হবে। মানুষের সচেতনতা বাড়াতে প্রচার-প্রচারণাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। এসব পণ্যের চাহিদা না কমালে বন্ধ করা সম্ভব হবে না।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




হাকিমপুরীসহ ২২ জর্দা খয়েরে ক্যান্সারের বিষাক্ত কেমিক্যাল

আপডেট সময় : ১১:৫৪:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ নভেম্বর ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক

তামাকজাতীয় পণ্য হাকিমপুরীসহ ২২ জর্দা ও খয়েরে মানবদেহের ক্ষতিকর এবং ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার মতো মাত্রাতিরিক্ত বিষাক্ত কেমিক্যাল লেড, ক্যাডমিয়াম ও ক্রোমিয়াম পেয়েছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ-বিএফএসএ। সংস্থাটি ২২ প্রতিষ্ঠানের নমুনা পরীক্ষা করে বলেছে- দেশের অনেক মানুষ পান-জর্দায় আসক্ত। বাজারে পাওয়া এই জর্দা, খয়ের ও গুলে ক্ষতিকর ধাতু আছে। এগুলো নিয়মিত খেলে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। ওই সব তামাক পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠানগুলো সিলগালা করার ঘোষণা দিয়েছে বিএফএসএ। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ- বিএফএসএ চেয়ারম্যান সৈয়দা সারওয়ার জাহান গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, জনগণকে সজাগ হতে হবে যে, এই জর্দা ও খয়ের এক ধরনের মাদক। এগুলো শিগগিরই বাজার থেকে প্রত্যাহার করা হবে। অন্যথায় মোবাইল কোড পরিচালনা করে ওই সব প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হবে। প্রয়োজনে মামলাও করা হবে।

দেশের তামাক জাতীয় ২২টি প্রতিষ্ঠান উৎপাদিত জর্দা, খয়ের ও গুলের নমুনা পরীক্ষা করে বিএফএসএ। গত বৃহস্পতিবার নমুনা পরীক্ষার ওই ফল প্রকাশ করে সরকারি এই সংস্থাটি বলেছে- হাকিমপুরী, শাহজাদী ও রতন জর্দাসহ দেশের ২২টি জর্দা-গুল ও খয়েরে বিষাক্ত হেভি কেমিক্যাল লেড, ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়াম পাওয়া গেছে। যা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এগুলো দীর্ঘদিন খাওয়ার কারণে মাড়ি ও লিভার ক্যান্সারের মতো জটিল রোগ হয়। এর মধ্যে ১৩ প্রতিষ্ঠানের জর্দা, ছয় প্রতিষ্ঠানের খয়ের ও তিন প্রতিষ্ঠানের গুলের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। যার সবকটিতে হেভি কেমিক্যাল লেড, ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়ামের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।

বিএফএসএ জানিয়ছে, নমুনা পরীক্ষা করা পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে হাকিমপুরী জর্দা, গিলা খয়ের, তীর মার্কা খয়ের, মালাই খয়ের, অন্তরা খয়ের, কালো পাথর বাল্ক খয়ের, সাদা বাল্ক খয়ের, ঈগল গুল, মোস্তফা গুল, শাহজাদা গুল, রতন জর্দা, গুরুদেব জর্দা, শাহজাদী জর্দা (নির্মলের), মহিউদ্দিন জর্দা, ঢাকা জর্দা, মকিমপুর জর্দা, শাহী হীরা জর্দা, জাফরানী জর্দা, শাহজাদী জর্দা (আলম), বউ শাহজাদী জর্দা এবং চাঁদপুরী জর্দা। বিএফএসএ জানিয়েছে, যারা পানের সঙ্গে খয়ের খান তাদের জন্য রয়েছে আরও দুঃসংবাদ। কারণ এক ধরনের গাছের বাকল থেকে এই পণ্যটি তৈরির কথা থাকলেও, সেটি কোনো কোনো ক্ষেত্রে শুধু কেমিক্যাল রং দিয়ে তৈরি করা হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা গেছে, ফার্নিচারের বার্নিশে ব্যবহারের জন্য যেসব কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় সেগুলো দিয়েই সরাসরি খয়ের তৈরি হচ্ছে। যার মধ্যে ক্ষতিকর ভারী ধাতু লেড, ক্রোমিয়াম ও ক্যাডমিয়ামের মতো পদার্থ পাওয়া গেছে। বিএফএসএ তথ্য বলছে, বাজারে বিক্রি হওয়া ২২টি ব্র্যান্ডের জর্দা-গুল ও খয়েরের নমুনা পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করে প্রত্যেকটিতে বিষাক্ত হেভি কেমিক্যাল লেড, ক্যাডমিয়াম ও ক্রোমিয়াম পাওয়া গেছে। যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। বিএফএসএ প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছি। প্রয়োজনে এসব প্রতিষ্ঠান সিলগালা করা হবে। কারণ- বাজারে যেসব জর্দা, গুল ও খয়ের বিক্রি হচ্ছে তার সবকটিই ক্ষতিকর। এগুলো খেলে মানুষ বেশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ে। এসব পণ্য মানুষ সরাসরি খায়। ফলে পাকস্থলী আক্রান্ত হয়। এতে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভোগে। এ জন্য মানুষকে সচেতন হতে হবে। একই সঙ্গে এসব ক্ষতিকর পণ্য সেবন থেকে বিরত থাকতে হবে। মানুষের সচেতনতা বাড়াতে প্রচার-প্রচারণাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। এসব পণ্যের চাহিদা না কমালে বন্ধ করা সম্ভব হবে না।