ঢাকা ১২:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo বুড়িচংয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউএনও’র! Logo ইবি উপাচার্যকে ১০লাখ ঘুষ প্রস্তাব এক তরুনীর! Logo মামলায় জর্জরিত কুলাউড়ার ছাত্রদল নেতা মিতুল পালিয়ে আছেন প্রবাসে Logo ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে শাবি ছাত্রলীগের কার্যক্রম শুরু Logo থিয়েটার কুবির ইফতার মাহফিল Logo রাজধানীর শান্তিনগর বাজার নিয়ে শত কোটি টাকার লুটপাট Logo ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি শিক্ষক সমিতির শোক Logo ঢাবি শিক্ষক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo ময়মনসিংহ স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের নতুন সভাপতি সজীব, সম্পাদক আশিক Logo পুরান ঢাকায় জুতার কারখানার আগুন




ডঃ আরিফঃ স্বাস্থ্যখাতকে অসুস্থ করার মূলহোতা!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:৩৫:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ৯৮ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্কঃ

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এটি সরকারের সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি। অতি গুরত্বপূর্ণ হওয়ার সুবাদে এই মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন হাসপাতালের টেন্ডার পেতে অনেকেই মরিয়া হয়ে থাকে। টেন্ডারের জন্য বিভিন্ন দুর্নীতির ঘটনাও ঘটেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে জাহেদ মালেক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই সিন্ডিকেট ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেন।

ফলশ্রুতিতে অনেকটাই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছিলো দুর্নীতি ও টেন্ডার সিন্ডিকেট গুলো। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সকল কাজে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নেন জাহেদ মালেক। তবে সরেজমিনে দেখা যায়, স্বাস্থমন্ত্রীর সকল উদ্যোগ ব্যর্থতায় রূপ নিচ্ছে তাঁর কাছের কিছু অনুসারীদের কারণে। অনুসন্ধানে জানা গেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অগোচরেই তাঁর ছেলে রাহাত মালেক ও তাঁর এপিএস ডঃ আরিফের সহায়তায় আবারো সিন্ডিকেটের খপ্পরে স্বাস্থ্যখাত। বিপুল পরিমাণ কমিশনের বিনিময়ে বিভিন্ন টেন্ডার নির্দিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠানকে পাইয়ে দিতে হস্তক্ষেপ করছেন মন্ত্রীর ছেলে মন্ত্রীর এপিএস ডঃ আরিফ। আর এই সিন্ডিকেট বাণিজ্যে সবচাইতে অধিপত্য যার, তিনি মন্ত্রীর এপিএস ডঃ আরিফুল হক। টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন কোম্পানিকে টেন্ডার পাইয়ে দিয়ে ইতোমধ্যে গড়েছেন কালো টাকার পাহাড়।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন হাসপাতালের, কেনাকাটা, নিয়োগ, বদলি, টেন্ডারসহ সব কিছুই নিয়ন্ত্রণ করে মন্ত্রীর এপিএস ডঃ আরিফ। মন্ত্রীর অগোচরে যেহেতু আরিফের এই অবৈধ বাণিজ্য সম্ভব না, তাই ধরেই নেয়া যায় মন্ত্রীর গোচরেই এই অবৈধ বাণিজ্যের সম্রাজ্য গড়েছেন আরিফ। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় মন্ত্রীপুত্র রাহাত মালিকের সাথে এপিএস আরিফের রয়েছে বিশেষ লেনদেনের সম্পর্ক। দুজনের ভাগ বাটোয়ারাতেই স্বাস্থ্যখাত নিজেই দিন দিন হচ্ছে অসুস্থ!

এপিএস আরিফের অতীত ইতিহাস জানতে গেলে দেখা যায়, তিনি ছাত্র জীবনে জামায়াত মতবাদে বিশ্বাসী সংগঠন ছাত্র শিবিরের সাথে জড়িত ছিলেন। এর আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী যিনি ছিলেন তারই পিএস ছিলেন এই আরিফ। কিন্তু জাহেদ মালেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর থেকে আরিফ মন্ত্রীর পিএস হবার কথা থাকলেও এপিএস পদে থেকে দুর্নীতির সুযোগ বেশি থাকায় আরিফ তার প্রমোশন ঠেকিয়ে এপিএস পদেই বহাল থাকে।

একাধিক সূত্র মতে, ডঃ আরিফ তার দায়িত্ব পালন শেষে সন্ধ্যার পর বিভিন্ন সাপ্লাইয়ারদের সঙ্গে রাজধানীর একাধিক এলাকায় ঘুরে বেড়ায়। সেখান থেকে সে তাদের থেকে টাকা কালেক্ট করে নিয়ে আসে। তার কালেক্ট করা টাকা থেকে একটি বড় অংশ পায় মন্ত্রীর ছেলে আর একটি অংশ নিয়ে যায় ডঃ আরিফ নিজেই। আর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এই সিন্ডিকেটকে নতুন ভাবে জাগ্রত করেছে আরিফ। এর মধ্যে লেক্সিকন প্রতিষ্ঠানের মিঠু, বেঙ্গল সায়েন্টিফিকের মালিক জহির, সাজ্জাদ মুন্সি, আফতাব আহমেদ, সিটি কোম্পানিসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে খোঁজ পাওয়া গিয়েছে।

এছাড়াও বেশ কয়েকজন সাপ্লাইয়ারের তথ্য পাওয়া গেছে যারা আরিফের ডিরেক্ট পার্টনার। যারা সবসময় আরিফের সাথে সর্বদা থাকে। মেডিকেল সরঞ্জামাদি কেনার ক্ষেত্রেও ডঃ আরিফের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। মেডিকেল ইকুয়াপমেন্ট কোবাল মেশিন ক্রয়ের ক্ষেত্রেও তার দুর্নীতি প্রকাশ পেয়েছে। ১০ কোটি টাকারও বেশি অর্থ দিয়ে কোবাল্ট মেশিন ক্রয় করলেও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে এই মেশিনের দাম তিন কোটি রুপির বেশি নয়। এই বিপুল সংখ্যক টাকা হাতবদল হয়েছে বলে বিভিন্ন মাধ্যম নিশ্চিত করেছে। আর এটি পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করেছেন ডঃ আরিফ স্বয়ং। এই প্রতিবেদন অনুসন্ধানকালীন সময়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জড়িত একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে, জড়িতদের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ জানানোর জন্য অনুরোধ জানান। যতদিন মন্ত্রীর এই খামখেয়ালি থাকবে, যতদিন মন্ত্রীর হয়ে মন্ত্রণালয় চালাবে তার এপিএস, পুত্র- ততদিন বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত অসুস্থই থেকে যাবে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত হোক দুর্নীতিমুক্ত!

 

তথ্য সূত্র; থলের বেড়াল

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




ডঃ আরিফঃ স্বাস্থ্যখাতকে অসুস্থ করার মূলহোতা!

আপডেট সময় : ০৬:৩৫:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯

অনলাইন ডেস্কঃ

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এটি সরকারের সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি। অতি গুরত্বপূর্ণ হওয়ার সুবাদে এই মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন হাসপাতালের টেন্ডার পেতে অনেকেই মরিয়া হয়ে থাকে। টেন্ডারের জন্য বিভিন্ন দুর্নীতির ঘটনাও ঘটেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে জাহেদ মালেক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই সিন্ডিকেট ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেন।

ফলশ্রুতিতে অনেকটাই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছিলো দুর্নীতি ও টেন্ডার সিন্ডিকেট গুলো। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সকল কাজে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নেন জাহেদ মালেক। তবে সরেজমিনে দেখা যায়, স্বাস্থমন্ত্রীর সকল উদ্যোগ ব্যর্থতায় রূপ নিচ্ছে তাঁর কাছের কিছু অনুসারীদের কারণে। অনুসন্ধানে জানা গেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অগোচরেই তাঁর ছেলে রাহাত মালেক ও তাঁর এপিএস ডঃ আরিফের সহায়তায় আবারো সিন্ডিকেটের খপ্পরে স্বাস্থ্যখাত। বিপুল পরিমাণ কমিশনের বিনিময়ে বিভিন্ন টেন্ডার নির্দিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠানকে পাইয়ে দিতে হস্তক্ষেপ করছেন মন্ত্রীর ছেলে মন্ত্রীর এপিএস ডঃ আরিফ। আর এই সিন্ডিকেট বাণিজ্যে সবচাইতে অধিপত্য যার, তিনি মন্ত্রীর এপিএস ডঃ আরিফুল হক। টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন কোম্পানিকে টেন্ডার পাইয়ে দিয়ে ইতোমধ্যে গড়েছেন কালো টাকার পাহাড়।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন হাসপাতালের, কেনাকাটা, নিয়োগ, বদলি, টেন্ডারসহ সব কিছুই নিয়ন্ত্রণ করে মন্ত্রীর এপিএস ডঃ আরিফ। মন্ত্রীর অগোচরে যেহেতু আরিফের এই অবৈধ বাণিজ্য সম্ভব না, তাই ধরেই নেয়া যায় মন্ত্রীর গোচরেই এই অবৈধ বাণিজ্যের সম্রাজ্য গড়েছেন আরিফ। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় মন্ত্রীপুত্র রাহাত মালিকের সাথে এপিএস আরিফের রয়েছে বিশেষ লেনদেনের সম্পর্ক। দুজনের ভাগ বাটোয়ারাতেই স্বাস্থ্যখাত নিজেই দিন দিন হচ্ছে অসুস্থ!

এপিএস আরিফের অতীত ইতিহাস জানতে গেলে দেখা যায়, তিনি ছাত্র জীবনে জামায়াত মতবাদে বিশ্বাসী সংগঠন ছাত্র শিবিরের সাথে জড়িত ছিলেন। এর আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী যিনি ছিলেন তারই পিএস ছিলেন এই আরিফ। কিন্তু জাহেদ মালেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর থেকে আরিফ মন্ত্রীর পিএস হবার কথা থাকলেও এপিএস পদে থেকে দুর্নীতির সুযোগ বেশি থাকায় আরিফ তার প্রমোশন ঠেকিয়ে এপিএস পদেই বহাল থাকে।

একাধিক সূত্র মতে, ডঃ আরিফ তার দায়িত্ব পালন শেষে সন্ধ্যার পর বিভিন্ন সাপ্লাইয়ারদের সঙ্গে রাজধানীর একাধিক এলাকায় ঘুরে বেড়ায়। সেখান থেকে সে তাদের থেকে টাকা কালেক্ট করে নিয়ে আসে। তার কালেক্ট করা টাকা থেকে একটি বড় অংশ পায় মন্ত্রীর ছেলে আর একটি অংশ নিয়ে যায় ডঃ আরিফ নিজেই। আর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এই সিন্ডিকেটকে নতুন ভাবে জাগ্রত করেছে আরিফ। এর মধ্যে লেক্সিকন প্রতিষ্ঠানের মিঠু, বেঙ্গল সায়েন্টিফিকের মালিক জহির, সাজ্জাদ মুন্সি, আফতাব আহমেদ, সিটি কোম্পানিসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে খোঁজ পাওয়া গিয়েছে।

এছাড়াও বেশ কয়েকজন সাপ্লাইয়ারের তথ্য পাওয়া গেছে যারা আরিফের ডিরেক্ট পার্টনার। যারা সবসময় আরিফের সাথে সর্বদা থাকে। মেডিকেল সরঞ্জামাদি কেনার ক্ষেত্রেও ডঃ আরিফের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। মেডিকেল ইকুয়াপমেন্ট কোবাল মেশিন ক্রয়ের ক্ষেত্রেও তার দুর্নীতি প্রকাশ পেয়েছে। ১০ কোটি টাকারও বেশি অর্থ দিয়ে কোবাল্ট মেশিন ক্রয় করলেও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে এই মেশিনের দাম তিন কোটি রুপির বেশি নয়। এই বিপুল সংখ্যক টাকা হাতবদল হয়েছে বলে বিভিন্ন মাধ্যম নিশ্চিত করেছে। আর এটি পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করেছেন ডঃ আরিফ স্বয়ং। এই প্রতিবেদন অনুসন্ধানকালীন সময়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জড়িত একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে, জড়িতদের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ জানানোর জন্য অনুরোধ জানান। যতদিন মন্ত্রীর এই খামখেয়ালি থাকবে, যতদিন মন্ত্রীর হয়ে মন্ত্রণালয় চালাবে তার এপিএস, পুত্র- ততদিন বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত অসুস্থই থেকে যাবে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত হোক দুর্নীতিমুক্ত!

 

তথ্য সূত্র; থলের বেড়াল