ঢাকা ১২:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার! Logo ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হওয়া শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোর সংস্কার শুরু Logo বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির দাবিতে শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের মানববন্ধন Logo কুবি উপাচার্যের বক্তব্যের প্রমাণ দিতে শিক্ষক সমিতির সাত দিনের আল্টিমেটাম




সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিজ্ঞাপনে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:২৬:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১১৩ বার পড়া হয়েছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জনপ্রিয়তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে পণ্যের বিজ্ঞাপনের জন্যেও হুমড়ি খেয়ে পড়ছে দেশীয় ও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো। এই বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রতি বছর ফেসবুক, ইউটিউব এবং গুগল বাংলাদেশ থেকে প্রায় এক হাজার কোটি টাকারও বেশি আয় করে। যার বেশিরভাগ অংশই ব্যাংকিং চ্যানেল ছাড়াই বাইরে চলে যাচ্ছে। একই সঙ্গে নিয়ম অনুসারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এখান থেকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট এবং অগ্রিম আয়করের ৪ শতাংশ পাওয়ার কথা। কিন্তু সরকার ফেসবুক, ইউটিউব, গুগল এবং অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলিতে চলমান বিজ্ঞাপনগুলি থেকে ভ্যাটের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পায় না। এছাড়া নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর হওয়ার তিন মাস পরেও সরকার তার কর নেটওয়ার্কের আওতায় ফেসবুক, গুগল, ইউটিউব এবং অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মকে আনতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে শুধু ভ্যাট, অগ্রিম আয়কর ফাঁকিই নয় এই ডিজিটাল মার্কেটিং সেবা গ্রহণের বিপরীতে সরকারকে সারচার্জ ফাঁকি দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো। যদিও ইতোমধ্যে এসব প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে খঁতিয়ে দেখছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অর্থ আইন, ২০১৭ এর মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর ধারা ৫৬ (সংশোধন) অনুযায়ী ডিজিটাল মার্কেটিং সেবা গ্রহণ করলে ভোক্তাকে বিজ্ঞাপন বা প্রচারণার খরচের উপর ১৫ শতাংশ হারে আয়কর প্রদান করতে হবে। ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে আয়করের এই পরিপত্র জারি হলেও, তা মানছে নাÑ ইমামি, কোকাকোলা বাংলাদেশ, টিভিএস’র মতো ভোক্তা প্রতিষ্ঠানগুলো।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফেসবুক, গুগল বা ইউটিউবে বিজ্ঞাপন প্রদানের জন্যে মূল খরচের সঙ্গে যেমন ভ্যাট প্রদান করতে হয়, তেমনি সারচার্জও প্রদান করতে হয়। তবে এসব নিয়মের কোন তোয়াক্কা না করে বছরের পর বছর হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাচার করে যাচ্ছে এই প্রতিষ্ঠানগুলো। ডিজিটাল মাধ্যমে বিজ্ঞাপনের নামে এই অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে নড়েচড়ে বসেছে সরকার। সিআইডি’র তদন্তে অপরাধ প্রমানিত হলে এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থাÑবাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) শাখার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা।

অনুসন্ধানের জানা যায়, ফেসবুক ও গুগল মিলিয়ে ইমামি বছরে প্রায় ৫০ লাখ টাকার বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। যা থেকে সারচার্জ হিসেবে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ টাকা সারচার্জ পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেখানে একটি টাকাও আয়কর কর্তন বা সারচার্জ হিসেবে প্রদান করা হয়নি। কোকাকোলা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই অর্থের পরিমান আরও বেশি।

সূত্র জানিয়েছে, কোকাকোলা বাংলাদেশ প্রায় অর্ধ কোটি টাকার সারচার্জ প্রদান থেকে বিরত থেকেছে। অথচ দীর্ঘদিন ধরেই একের পর এক ক্যাম্পেইন ও বিজ্ঞাপন প্রদান করে আসছে ফেসবুক ও গুগলে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইউই’র ওই কর্মকর্তা বলেন, মাসেই প্রায় কয়েক কোটি টাকার সারচার্জ ফাঁকি দিয়ে ফেসবুক ও গুগলে বিজ্ঞাপন দিয়ে যাচ্ছে এই প্রতিষ্ঠানগুলো। যা শুধু আয়কর আইনের লঙ্ঘনই নয়, অর্থ পাচারের ঘটনাতেও অপরাধ।

সারচার্র্জ ফাঁকির বিষয়ে কোকাকোলা ইন্টারন্যাশনাল বেভারেজ প্রাইভেট লিমিটেড বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কান্ট্রি ম্যানেজার তাপস মন্ডল ইনকিলাবকে জানান, সারচার্জ নিয়ে আমি বলতে পারবো না। কারণ বিষয়টি আমি দেখি না। তাই আমার জানা নেই।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিজ্ঞাপনে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

আপডেট সময় : ০৯:২৬:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জনপ্রিয়তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে পণ্যের বিজ্ঞাপনের জন্যেও হুমড়ি খেয়ে পড়ছে দেশীয় ও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো। এই বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রতি বছর ফেসবুক, ইউটিউব এবং গুগল বাংলাদেশ থেকে প্রায় এক হাজার কোটি টাকারও বেশি আয় করে। যার বেশিরভাগ অংশই ব্যাংকিং চ্যানেল ছাড়াই বাইরে চলে যাচ্ছে। একই সঙ্গে নিয়ম অনুসারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এখান থেকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট এবং অগ্রিম আয়করের ৪ শতাংশ পাওয়ার কথা। কিন্তু সরকার ফেসবুক, ইউটিউব, গুগল এবং অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলিতে চলমান বিজ্ঞাপনগুলি থেকে ভ্যাটের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পায় না। এছাড়া নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর হওয়ার তিন মাস পরেও সরকার তার কর নেটওয়ার্কের আওতায় ফেসবুক, গুগল, ইউটিউব এবং অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মকে আনতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে শুধু ভ্যাট, অগ্রিম আয়কর ফাঁকিই নয় এই ডিজিটাল মার্কেটিং সেবা গ্রহণের বিপরীতে সরকারকে সারচার্জ ফাঁকি দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো। যদিও ইতোমধ্যে এসব প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে খঁতিয়ে দেখছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অর্থ আইন, ২০১৭ এর মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর ধারা ৫৬ (সংশোধন) অনুযায়ী ডিজিটাল মার্কেটিং সেবা গ্রহণ করলে ভোক্তাকে বিজ্ঞাপন বা প্রচারণার খরচের উপর ১৫ শতাংশ হারে আয়কর প্রদান করতে হবে। ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে আয়করের এই পরিপত্র জারি হলেও, তা মানছে নাÑ ইমামি, কোকাকোলা বাংলাদেশ, টিভিএস’র মতো ভোক্তা প্রতিষ্ঠানগুলো।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফেসবুক, গুগল বা ইউটিউবে বিজ্ঞাপন প্রদানের জন্যে মূল খরচের সঙ্গে যেমন ভ্যাট প্রদান করতে হয়, তেমনি সারচার্জও প্রদান করতে হয়। তবে এসব নিয়মের কোন তোয়াক্কা না করে বছরের পর বছর হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাচার করে যাচ্ছে এই প্রতিষ্ঠানগুলো। ডিজিটাল মাধ্যমে বিজ্ঞাপনের নামে এই অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে নড়েচড়ে বসেছে সরকার। সিআইডি’র তদন্তে অপরাধ প্রমানিত হলে এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থাÑবাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) শাখার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা।

অনুসন্ধানের জানা যায়, ফেসবুক ও গুগল মিলিয়ে ইমামি বছরে প্রায় ৫০ লাখ টাকার বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। যা থেকে সারচার্জ হিসেবে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ টাকা সারচার্জ পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেখানে একটি টাকাও আয়কর কর্তন বা সারচার্জ হিসেবে প্রদান করা হয়নি। কোকাকোলা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই অর্থের পরিমান আরও বেশি।

সূত্র জানিয়েছে, কোকাকোলা বাংলাদেশ প্রায় অর্ধ কোটি টাকার সারচার্জ প্রদান থেকে বিরত থেকেছে। অথচ দীর্ঘদিন ধরেই একের পর এক ক্যাম্পেইন ও বিজ্ঞাপন প্রদান করে আসছে ফেসবুক ও গুগলে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইউই’র ওই কর্মকর্তা বলেন, মাসেই প্রায় কয়েক কোটি টাকার সারচার্জ ফাঁকি দিয়ে ফেসবুক ও গুগলে বিজ্ঞাপন দিয়ে যাচ্ছে এই প্রতিষ্ঠানগুলো। যা শুধু আয়কর আইনের লঙ্ঘনই নয়, অর্থ পাচারের ঘটনাতেও অপরাধ।

সারচার্র্জ ফাঁকির বিষয়ে কোকাকোলা ইন্টারন্যাশনাল বেভারেজ প্রাইভেট লিমিটেড বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কান্ট্রি ম্যানেজার তাপস মন্ডল ইনকিলাবকে জানান, সারচার্জ নিয়ে আমি বলতে পারবো না। কারণ বিষয়টি আমি দেখি না। তাই আমার জানা নেই।