ঢাকা ০১:৩৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের অঙ্গীকারঃ ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী  Logo মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির নতুন বাসের উদ্বোধন Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য: ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার!




৪১ বছর ঘুরে সৌরজগতের সীমানা পেরুল ‘ভয়েজার-২’

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:৫৫:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ডিসেম্বর ২০১৮ ১১৫ বার পড়া হয়েছে

 

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক: ৪১ বছর পর ইন্টারস্টেলার স্পেসে ঢুকতে পেরেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার তৈরি ভয়েজার-২ নভোযান। ১৯৭৭ সালে মহাকাশে পাঠানো হয় এই যান। এর ফলে চার দশক পর নভোযানটি ১১০০ কোটি মাইল দূরত্ব অতিক্রম করে তার গন্তব্যে পৌঁছাল।

সোমবার মহাকাশ সংস্থাটি জানায়, নভোযানটি শেষ পর্যন্ত তার গন্তব্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। খবর সিএনএন

এর আগে অবশ্য অক্টোবরে গবেষকেরা বলেছিলেন, গত আগস্ট মাস থেকে ভয়েজার-২ মহাকাশযান মহাজাগতিক রশ্মি বৃদ্ধির মুখে পড়েছে। ভয়েজার-২ যে রশ্মির মুখোমুখি হয়েছে, তা সৌরজগতের বাইরে উদ্ভূত। এ রশ্মি থেকেই বোঝা যায়, মহাকাশযানটি ইন্টারস্টেলার স্পেসের কাছাকাছি পৌঁছেছে। বর্তমানে এটি হেলিওপজ এলাকা অতিক্রম করছে। ওই এলাকা সৌরঝড়ে তৈরি বুদবুদের প্রান্ত বা হেলিওস্ফেয়ার হিসেবে পরিচিত।

এর আগে ২০১২ সালের মে মাসে ভয়েজার-১ নভোযানটিও একই ধরনের রশ্মির মুখোমুখি হয়েছিল। হেলিওস্ফিয়ারের বাইরের সীমানা, অর্থাৎ হেলিওপোজে পৌঁছানোর জন্য মহাকাশযানটির দিকে লক্ষ্য রাখছিলেন মহাকাশযানবিদরা।

হেলিওস্ফেয়ার হলো সূর্যের চারপাশে ও গ্রহগুলোর চারপাশের সুবিশাল বুদবুদ, যা সৌর উপাদান এবং চুম্বকক্ষেত্র দ্বারা প্রভাবিত। এটিকে সূর্যের শেষ সীমাও বলা হয়ে থাকে। ভয়েজার-১ এর পরে এটিই মানুষের তৈরি দ্বিতীয় মহাকাশ যান, যা ইন্টারস্টেলার স্পেসে ভ্রমণ করল।

এর আগে অক্টোবরে বলা হয়, বর্তমানে পৃথিবী থেকে ১৭ দশমিক ৭ বিলিয়ন কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে ভয়েজার-২। এ মহাকাশযান বৃহস্পতি (১৯৭৯), শনি (১৯৮১) ইউরেনাস (১৯৮১) ও নেপচুন (১৯৮৯) ভ্রমণ করেছে।

এক বিবৃতিতে ভয়েজার প্রজেক্টের বিজ্ঞানী এড স্টোন বলেছেন, যদিও ভয়েজার-২ ইন্টারস্টেলার স্পেস স্পর্শ করতে সক্ষম হয়েছে, তারপরও আমাদের হেলিওস্ফেয়ার সম্পর্কে অনেক অজানা রয়ে গেছে। আমাদের কাজ হবে সেই অজানাকে জানা।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, নভোযানটির হেলিওস্ফেয়ার ছুঁয়ে যাওয়া মানে এই নয় যে, এটা পুরো সৌরজগত পরিদর্শন করে ফেলেছে। এর শেষ সীমা ওর্ট ক্লাউড থেকে সবচেয়ে দূরবর্তী জায়গা পর্যন্ত গেছে।

‘ওর্ট ক্লাউড’ সৌরজগতের অনেক দূরে অবস্থিত একটি এলাকা। অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল ‘লেটার’-এ প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়, সূর্য থেকে দশমিক ৮ আলোক বছর দূরে অবস্থিত সৌরজগতের প্রান্ত, যা ‘ওর্ট ক্লাউড’ নামে পরিচিত

মিশনটির বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, ক্লাউডের শেষসীমা পর্যন্ত ভয়েজারকে পৌঁছাতে আরও ২৩০০ বছর পাড়ি দিতে হবে।

ভয়েজার-২-তে এমন কিছু অনন্য যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়েছে যা শুরু থেকে এখনও কাজ করে যাচ্ছে। নভোযানটি পৃথিবী থেকে ১১০০ কোটি মাইল দূরত্ব অবস্থান করছে। তারপরও বিজ্ঞানীরা যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন নভোযানটির সঙ্গে। ইন্টারস্টেলার স্পেস থেকে সাড়ে ১৬ ঘণ্টার মাথায় পৃথিবীতে ডাটা পাঠিয়ে দিচ্ছে নভোযানটি।

ভয়েজার-২-তে এমন কিছু অনন্য যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়েছে যা শুরু থেকে এখনও কাজ করে যাচ্ছে। নভোযানটি পৃথিবী থেকে ১১০০ কোটি মাইল দূরত্ব অবস্থান করছে। তারপরও বিজ্ঞানীরা যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন নভোযানটির সঙ্গে। ইন্টারস্টেলার স্পেস থেকে সাড়ে ১৬ ঘণ্টার মাথায় পৃথিবীতে ডাটা পাঠিয়ে দিচ্ছে নভোযানটি।

নভোযানটি ৪১ বছর আগে পাঠানো হলেও এখনও ভালোভাবেই কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভয়েজার প্রজেক্ট ম্যানেজার সুজানে দদ। সোমবার তিনি বলেন, ‘বয়সের বিবেচনায় এখনও ভালোভাবেই কাজ করছে এই নভোযানটি।’

তবে যানটি ভালোভাবে কাজ করলেও বিজ্ঞানীদের যে এটিকে নিয়ে দুশ্চিন্তা নেই তা কিন্তু নয়। নভোযান দুটির (ভয়েজার-১, ভয়েজার-২) চালিকা শক্তি ও তাপ ঠিক রাখা বিজ্ঞানীদের ভাবাচ্ছে। ভাবার কারণ হলো প্রতিবছর চার ওয়াট করে শক্তি হারিয়ে ফেলছে ভয়েজার-২। নভোযান দুটির ক্যামেরাও হারিয়ে ফেলেছে তাদের কার্যকারিতা।

স্বাভাবিক তাপ ক্রমে হারিয়ে ফেলে খুবই শীতল অবস্থায় রয়েছে ভয়েজার-২। বর্তমানে যানটির তাপমাত্রা ৩.৬ ডিগ্রি কেলভিনের মতো। এই তাপমাত্রায় সাধারণত হাইড্রোজেন জমে যায়। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, এই অবস্থায় এটি কোনো দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে কি না।

যদিও মনে করা হচ্ছে, নভোযানটি বড়জোর ৫-১০ বছর পর্যন্ত মহাকাশে টিকে থাকতে পারবে, তারপরও এটির কার্যকারিতা আরও ৫০ বছর পর্যন্ত টিকিয়ে রাখা যায় কিনা তা নিয়ে চেষ্টা চালাচ্ছেন নাসার বিজ্ঞানীরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




৪১ বছর ঘুরে সৌরজগতের সীমানা পেরুল ‘ভয়েজার-২’

আপডেট সময় : ০২:৫৫:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ডিসেম্বর ২০১৮

 

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক: ৪১ বছর পর ইন্টারস্টেলার স্পেসে ঢুকতে পেরেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার তৈরি ভয়েজার-২ নভোযান। ১৯৭৭ সালে মহাকাশে পাঠানো হয় এই যান। এর ফলে চার দশক পর নভোযানটি ১১০০ কোটি মাইল দূরত্ব অতিক্রম করে তার গন্তব্যে পৌঁছাল।

সোমবার মহাকাশ সংস্থাটি জানায়, নভোযানটি শেষ পর্যন্ত তার গন্তব্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। খবর সিএনএন

এর আগে অবশ্য অক্টোবরে গবেষকেরা বলেছিলেন, গত আগস্ট মাস থেকে ভয়েজার-২ মহাকাশযান মহাজাগতিক রশ্মি বৃদ্ধির মুখে পড়েছে। ভয়েজার-২ যে রশ্মির মুখোমুখি হয়েছে, তা সৌরজগতের বাইরে উদ্ভূত। এ রশ্মি থেকেই বোঝা যায়, মহাকাশযানটি ইন্টারস্টেলার স্পেসের কাছাকাছি পৌঁছেছে। বর্তমানে এটি হেলিওপজ এলাকা অতিক্রম করছে। ওই এলাকা সৌরঝড়ে তৈরি বুদবুদের প্রান্ত বা হেলিওস্ফেয়ার হিসেবে পরিচিত।

এর আগে ২০১২ সালের মে মাসে ভয়েজার-১ নভোযানটিও একই ধরনের রশ্মির মুখোমুখি হয়েছিল। হেলিওস্ফিয়ারের বাইরের সীমানা, অর্থাৎ হেলিওপোজে পৌঁছানোর জন্য মহাকাশযানটির দিকে লক্ষ্য রাখছিলেন মহাকাশযানবিদরা।

হেলিওস্ফেয়ার হলো সূর্যের চারপাশে ও গ্রহগুলোর চারপাশের সুবিশাল বুদবুদ, যা সৌর উপাদান এবং চুম্বকক্ষেত্র দ্বারা প্রভাবিত। এটিকে সূর্যের শেষ সীমাও বলা হয়ে থাকে। ভয়েজার-১ এর পরে এটিই মানুষের তৈরি দ্বিতীয় মহাকাশ যান, যা ইন্টারস্টেলার স্পেসে ভ্রমণ করল।

এর আগে অক্টোবরে বলা হয়, বর্তমানে পৃথিবী থেকে ১৭ দশমিক ৭ বিলিয়ন কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে ভয়েজার-২। এ মহাকাশযান বৃহস্পতি (১৯৭৯), শনি (১৯৮১) ইউরেনাস (১৯৮১) ও নেপচুন (১৯৮৯) ভ্রমণ করেছে।

এক বিবৃতিতে ভয়েজার প্রজেক্টের বিজ্ঞানী এড স্টোন বলেছেন, যদিও ভয়েজার-২ ইন্টারস্টেলার স্পেস স্পর্শ করতে সক্ষম হয়েছে, তারপরও আমাদের হেলিওস্ফেয়ার সম্পর্কে অনেক অজানা রয়ে গেছে। আমাদের কাজ হবে সেই অজানাকে জানা।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, নভোযানটির হেলিওস্ফেয়ার ছুঁয়ে যাওয়া মানে এই নয় যে, এটা পুরো সৌরজগত পরিদর্শন করে ফেলেছে। এর শেষ সীমা ওর্ট ক্লাউড থেকে সবচেয়ে দূরবর্তী জায়গা পর্যন্ত গেছে।

‘ওর্ট ক্লাউড’ সৌরজগতের অনেক দূরে অবস্থিত একটি এলাকা। অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল ‘লেটার’-এ প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়, সূর্য থেকে দশমিক ৮ আলোক বছর দূরে অবস্থিত সৌরজগতের প্রান্ত, যা ‘ওর্ট ক্লাউড’ নামে পরিচিত

মিশনটির বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, ক্লাউডের শেষসীমা পর্যন্ত ভয়েজারকে পৌঁছাতে আরও ২৩০০ বছর পাড়ি দিতে হবে।

ভয়েজার-২-তে এমন কিছু অনন্য যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়েছে যা শুরু থেকে এখনও কাজ করে যাচ্ছে। নভোযানটি পৃথিবী থেকে ১১০০ কোটি মাইল দূরত্ব অবস্থান করছে। তারপরও বিজ্ঞানীরা যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন নভোযানটির সঙ্গে। ইন্টারস্টেলার স্পেস থেকে সাড়ে ১৬ ঘণ্টার মাথায় পৃথিবীতে ডাটা পাঠিয়ে দিচ্ছে নভোযানটি।

ভয়েজার-২-তে এমন কিছু অনন্য যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়েছে যা শুরু থেকে এখনও কাজ করে যাচ্ছে। নভোযানটি পৃথিবী থেকে ১১০০ কোটি মাইল দূরত্ব অবস্থান করছে। তারপরও বিজ্ঞানীরা যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন নভোযানটির সঙ্গে। ইন্টারস্টেলার স্পেস থেকে সাড়ে ১৬ ঘণ্টার মাথায় পৃথিবীতে ডাটা পাঠিয়ে দিচ্ছে নভোযানটি।

নভোযানটি ৪১ বছর আগে পাঠানো হলেও এখনও ভালোভাবেই কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভয়েজার প্রজেক্ট ম্যানেজার সুজানে দদ। সোমবার তিনি বলেন, ‘বয়সের বিবেচনায় এখনও ভালোভাবেই কাজ করছে এই নভোযানটি।’

তবে যানটি ভালোভাবে কাজ করলেও বিজ্ঞানীদের যে এটিকে নিয়ে দুশ্চিন্তা নেই তা কিন্তু নয়। নভোযান দুটির (ভয়েজার-১, ভয়েজার-২) চালিকা শক্তি ও তাপ ঠিক রাখা বিজ্ঞানীদের ভাবাচ্ছে। ভাবার কারণ হলো প্রতিবছর চার ওয়াট করে শক্তি হারিয়ে ফেলছে ভয়েজার-২। নভোযান দুটির ক্যামেরাও হারিয়ে ফেলেছে তাদের কার্যকারিতা।

স্বাভাবিক তাপ ক্রমে হারিয়ে ফেলে খুবই শীতল অবস্থায় রয়েছে ভয়েজার-২। বর্তমানে যানটির তাপমাত্রা ৩.৬ ডিগ্রি কেলভিনের মতো। এই তাপমাত্রায় সাধারণত হাইড্রোজেন জমে যায়। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, এই অবস্থায় এটি কোনো দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে কি না।

যদিও মনে করা হচ্ছে, নভোযানটি বড়জোর ৫-১০ বছর পর্যন্ত মহাকাশে টিকে থাকতে পারবে, তারপরও এটির কার্যকারিতা আরও ৫০ বছর পর্যন্ত টিকিয়ে রাখা যায় কিনা তা নিয়ে চেষ্টা চালাচ্ছেন নাসার বিজ্ঞানীরা।