ঢাকা ০৭:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের অঙ্গীকারঃ ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী  Logo মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির নতুন বাসের উদ্বোধন Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য: ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার!




কৃষকদের নিয়ে ওবায়দুল কাদেরের মন্তব্যে ফখরুলের নিন্দা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:৩৫:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০১৯ ৭৮ বার পড়া হয়েছে

কৃষকদের নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সরকার কৃষকদের ন্যায্য দাবির কথা কানেও নিচ্ছে না। বরং সরকারের একজন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের কৃষকদের এই বিক্ষোভকে ‘স্যাবোটেজ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

‘কৃষকদের বাস্তব এই সেন্টিমেন্টকে সরকার দলীয় শীর্ষ নেতার এহেন মন্তব্যে নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের নেই। এদেশের কৃষকদের বর্তমানে যে দুরাবস্থা তা সরকারের ভুল নীতির প্রতিফলন।’

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের ১৬ কোটি মানুষের খাদ্যের যোগানদাতা কৃষক পরিবারের অবস্থা আজ খুবই নাজুক ও দুর্বিষহ। কিন্তু কৃষকরা ধানের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে হতাশাগ্রস্ত। দেশের প্রায় ১.৫ কোটি কৃষক পরিবারের আজ ত্রাহি অবস্থা।

তিনি বলেন, খাদ্য শস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে কৃষকের বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে। দেশের কৃষককুল তাদের উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে বহু স্থানে ধানের জমিতে আগুন দিয়ে রাস্তায় ধান ফেলে দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারি ভাষ্য অনুযায়ী দেশ খাদ্যে বিশেষ করে চাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পন্ন। ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে চাল উৎপাদনের পরিমাণ ৩ কোটি ৬২ লাখ টন। অথচ এই সময়ে সরকারি চ্যানেলে বা ব্যবস্থায় খাদ্য শস্য আমদানি হয়েছে ৯৭.৭ লাখ মে. টন, যার মধ্যে চাল ৩৮.৯ লাখ মে. টন এবং গম ৫৮.৮ লাখ মে. টন।

তিনি বলেন, একই সময়ে বেসরকারি চ্যানেলে খাদ্য আমদানির পরিমাণ ৮৩.৮ লাখ মে. টন; যার মধ্যে চাল ৩০.১ লাখ মে. টন এবং গম ৫৩.৭ লাখ মে. টন

‘অর্থাৎ সরকারি ও বেসরকারিভাবে মোট খাদ্যশস্যের আমদানি ছিল (২০১৭-১৮) ১৮১.৫ লাখ মে. টন, এর মধ্যে চাল আমদানির পরিমাণ ৬৯ লাখ মে. টন। (সূত্র-বাংলাদেশ ইকোনোমিক রিভিউ ২০১৭-১৮)। গত ১০ মাসে ৩ লাখ ৩ হাজার টন চাল আমদানি হয়েছে। আমদানির অপেক্ষায় রয়েছে ৯৭ হাজার টন চাল। (সূত্র-দৈনিক প্রথম আলো ১৭ মে ২০১৯ ও ২৩ মে ২০১৯)।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার ধান/চাল সংগ্রহের মাধ্যমে দলীয় ব্যবসায়ী চালকল মালিকদের মুনাফা পাইয়ে দিচ্ছে। বাজার থেকে কম মূল্যে ধান কিনে চালকল মালিকরা চাল তৈরি করে সরকারের কাছে বিক্রি করে প্রতি কেজিতে মুনাফা করছে ১০ টাকা। আর কৃষক তার জমিতে উৎপাদিত ধান বাজারে বিক্রি করে কেজি প্রতি লোকসান গুনছে ১০/১২ টাকা। (সূত্র-২৩.৫.২০১৯ প্রথম আলো)।

তিনি আরও বলেন, গত বছরের উৎপাদনকে হিসেবে নিলে বোরো ধানের উৎপাদন হবে প্রায় ২ কোটি মে. টন। আর সরকার সংগ্রহ করবে মাত্র ১৩ লাখ টন, যা উৎপাদনের মাত্র ৬.৫ শতাংশ। আমাদের দাবি ধান অথবা চাল সংগ্রহের পরিমাণ কমপক্ষে বোরো উৎপাদনের ১৫ শতাংশ করা হোক। এতে বেশি পরিমাণ কৃষককে সহায়তা দেয়া যাবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমানে ব্যাংক ব্যবস্থায় খেলাপিঋণের পরিমাণ প্রায় এক লাখ কোটি টাকা। এই খেলাপিঋণ গ্রহীতাদের জন্য সরকার বিশেষ ছাড় দিয়েছে। যদিও এই ছাড় মহামান্য হাইকোর্ট আটকে দিয়েছে।

‘সরকার ব্যাংক লুটপাটকারীদের দুধকলা দিয়ে পুষছেন। অথচ এই খেলাপিঋণের মাত্র ১০ শতাংশ বরাদ্দ দিলে সরকার আরও প্রায় ৩৬ লাখ মে. টন ধান কৃষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করতে পারে। এতে দেশের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীরা উপকৃত হবে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকারের দুর্নীতি ও অদূরদর্শীতার কারণে কৃষিনির্ভর বাংলাদেশের কৃষি আজ ধ্বংসের মুখে। বারবার গরীব কৃষক তার উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে ফসল উৎপাদনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ সাংগঠনিক সম্পাদক আদুস সালাম আজাদ প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




কৃষকদের নিয়ে ওবায়দুল কাদেরের মন্তব্যে ফখরুলের নিন্দা

আপডেট সময় : ০১:৩৫:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০১৯

কৃষকদের নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সরকার কৃষকদের ন্যায্য দাবির কথা কানেও নিচ্ছে না। বরং সরকারের একজন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের কৃষকদের এই বিক্ষোভকে ‘স্যাবোটেজ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

‘কৃষকদের বাস্তব এই সেন্টিমেন্টকে সরকার দলীয় শীর্ষ নেতার এহেন মন্তব্যে নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের নেই। এদেশের কৃষকদের বর্তমানে যে দুরাবস্থা তা সরকারের ভুল নীতির প্রতিফলন।’

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের ১৬ কোটি মানুষের খাদ্যের যোগানদাতা কৃষক পরিবারের অবস্থা আজ খুবই নাজুক ও দুর্বিষহ। কিন্তু কৃষকরা ধানের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে হতাশাগ্রস্ত। দেশের প্রায় ১.৫ কোটি কৃষক পরিবারের আজ ত্রাহি অবস্থা।

তিনি বলেন, খাদ্য শস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে কৃষকের বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে। দেশের কৃষককুল তাদের উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে বহু স্থানে ধানের জমিতে আগুন দিয়ে রাস্তায় ধান ফেলে দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারি ভাষ্য অনুযায়ী দেশ খাদ্যে বিশেষ করে চাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পন্ন। ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে চাল উৎপাদনের পরিমাণ ৩ কোটি ৬২ লাখ টন। অথচ এই সময়ে সরকারি চ্যানেলে বা ব্যবস্থায় খাদ্য শস্য আমদানি হয়েছে ৯৭.৭ লাখ মে. টন, যার মধ্যে চাল ৩৮.৯ লাখ মে. টন এবং গম ৫৮.৮ লাখ মে. টন।

তিনি বলেন, একই সময়ে বেসরকারি চ্যানেলে খাদ্য আমদানির পরিমাণ ৮৩.৮ লাখ মে. টন; যার মধ্যে চাল ৩০.১ লাখ মে. টন এবং গম ৫৩.৭ লাখ মে. টন

‘অর্থাৎ সরকারি ও বেসরকারিভাবে মোট খাদ্যশস্যের আমদানি ছিল (২০১৭-১৮) ১৮১.৫ লাখ মে. টন, এর মধ্যে চাল আমদানির পরিমাণ ৬৯ লাখ মে. টন। (সূত্র-বাংলাদেশ ইকোনোমিক রিভিউ ২০১৭-১৮)। গত ১০ মাসে ৩ লাখ ৩ হাজার টন চাল আমদানি হয়েছে। আমদানির অপেক্ষায় রয়েছে ৯৭ হাজার টন চাল। (সূত্র-দৈনিক প্রথম আলো ১৭ মে ২০১৯ ও ২৩ মে ২০১৯)।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার ধান/চাল সংগ্রহের মাধ্যমে দলীয় ব্যবসায়ী চালকল মালিকদের মুনাফা পাইয়ে দিচ্ছে। বাজার থেকে কম মূল্যে ধান কিনে চালকল মালিকরা চাল তৈরি করে সরকারের কাছে বিক্রি করে প্রতি কেজিতে মুনাফা করছে ১০ টাকা। আর কৃষক তার জমিতে উৎপাদিত ধান বাজারে বিক্রি করে কেজি প্রতি লোকসান গুনছে ১০/১২ টাকা। (সূত্র-২৩.৫.২০১৯ প্রথম আলো)।

তিনি আরও বলেন, গত বছরের উৎপাদনকে হিসেবে নিলে বোরো ধানের উৎপাদন হবে প্রায় ২ কোটি মে. টন। আর সরকার সংগ্রহ করবে মাত্র ১৩ লাখ টন, যা উৎপাদনের মাত্র ৬.৫ শতাংশ। আমাদের দাবি ধান অথবা চাল সংগ্রহের পরিমাণ কমপক্ষে বোরো উৎপাদনের ১৫ শতাংশ করা হোক। এতে বেশি পরিমাণ কৃষককে সহায়তা দেয়া যাবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমানে ব্যাংক ব্যবস্থায় খেলাপিঋণের পরিমাণ প্রায় এক লাখ কোটি টাকা। এই খেলাপিঋণ গ্রহীতাদের জন্য সরকার বিশেষ ছাড় দিয়েছে। যদিও এই ছাড় মহামান্য হাইকোর্ট আটকে দিয়েছে।

‘সরকার ব্যাংক লুটপাটকারীদের দুধকলা দিয়ে পুষছেন। অথচ এই খেলাপিঋণের মাত্র ১০ শতাংশ বরাদ্দ দিলে সরকার আরও প্রায় ৩৬ লাখ মে. টন ধান কৃষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করতে পারে। এতে দেশের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীরা উপকৃত হবে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকারের দুর্নীতি ও অদূরদর্শীতার কারণে কৃষিনির্ভর বাংলাদেশের কৃষি আজ ধ্বংসের মুখে। বারবার গরীব কৃষক তার উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে ফসল উৎপাদনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ সাংগঠনিক সম্পাদক আদুস সালাম আজাদ প্রমুখ।