ঢাকা ১১:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার! Logo ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হওয়া শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোর সংস্কার শুরু Logo বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির দাবিতে শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের মানববন্ধন Logo কুবি উপাচার্যের বক্তব্যের প্রমাণ দিতে শিক্ষক সমিতির সাত দিনের আল্টিমেটাম




দেশে ১৭ হাজার কোটি টাকার জুতার বাজার, ব্র্যান্ডের দখলে ৩০%

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:৫১:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০১৯ ১০২ বার পড়া হয়েছে

সকালের সংবাদ; 

ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি রুচির পরিবর্তন ও মানের বিষয়ে সচেতনতা তৈরি হওয়ায় ব্র্যান্ডের জুতার প্রতি ঝুঁকছে দেশের মানুষ। সে জন্য ব্র্যান্ডের জুতার বিক্রি প্রতিবছর গড়ে ১২-১৫ শতাংশ হারে বাড়ছে। তাই নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান এ ব্যবসায় নামছে। তবে ব্যবসা বাড়লেও সারা বছর যে পরিমাণ জুতা বিক্রি হয়, তার বড় অংশ এখনো নন ব্র্যান্ডের।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশে জুতার বাজার বিরাট। অনেক প্রতিষ্ঠান থাকায় প্রতিযোগিতাও বেশি। তারপরও ব্র্যান্ডের জুতার ব্যবসা বাড়ানোর আরও সুযোগ আছে। প্রতিষ্ঠানগুলোও বিনিয়োগ করছে। তবে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে দোকান ভাড়া বেশি হওয়ার কারণে বিক্রয়কেন্দ্র বাড়ানো মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। এটিই ব্র্যান্ডের জুতার ব্যবসায় বর্তমানে প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশে জুতার বাজার বছরে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকার। এর মধ্যে বাজারের ৩০ শতাংশ ব্র্যান্ডের জুতার দখলে। বাকিটা নন-ব্র্যান্ড, আঞ্চলিক ব্র্যান্ড ও আমদানি করা জুতার দখলে। আগে জুতার ব্যবসা উৎসবকেন্দ্রিক থাকলেও বর্তমানে সারা বছর কম বেশি হয়। তারপরও সারা বছরের বিক্রির ২৫-৩০ শতাংশ হয়ে থাকে ঈদুল ফিতরে।

ব্র্যান্ডের জুতার ব্যবসায় শীর্ষস্থান দখল করে রেখেছে বাটা। বৈশ্বিক জুতার এই ব্র্যান্ড বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করে ১৯৬২ সালে। বর্তমানে তাদের দুটি কারখানা রয়েছে। একটি টঙ্গীতে, অন্যটি ধামরাইয়ে। এ দুটি কারখানায় দৈনিক ১ লাখ ৬০ হাজার জোড়া জুতা তৈরির সক্ষমতা রয়েছে। সারা দেশে তাদের ২৪৮টি নিজস্ব বিক্রয়কেন্দ্র আছে। দেড় হাজারের বেশি ডিলার শপও আছে।

বাটার বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৭ সালে তারা স্থানীয় বাজারে ৯০২ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করে। আর ২০১৮ সালের প্রথম নয় মাসে ৭১৪ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করে তারা। আর চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে তাদের বিক্রি দাঁড়িয়েছে ১৭৭ কোটি টাকা।

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১ হাজার ২০০ নতুন নকশার জুতা নিয়ে এসেছে বাটা-এমন তথ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক জুবায়ের ইসলাম বলেন, সারা বছর বাটার যে বিক্রি হয়, তার ২০-২২ শতাংশ ঈদে হয়। তাই সব ঈদেই নিত্যনতুন নকশার জুতা আনা বাজারে আসে।

জুবায়ের ইসলাম আরও বলেন, টঙ্গী ও ধামরাইয়ের দুই কারখানায় বাটার জুতা উৎপাদন হলেও দেশের বাইরে থেকে নাইকি, অ্যাডিডাসসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের জুতা আমদানি করা হয়। সব মিলিয়ে প্রায় ৪০ শতাংশ জুতা বিদেশ থেকে আমদানি করে বাটা। সারা দেশে বিক্রয়কেন্দ্র থাকলেও শুধু ঢাকা শহরেই বাটার মোট বিক্রির ৬০-৬৫ শতাংশ হয়ে থাকে।

দেশে জুতার বাজার প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকার
বাজারের ৩০ শতাংশ ব্র্যান্ডের জুতার দখলে
বাকিটা নন ব্র্যান্ড, আঞ্চলিক ব্র্যান্ড ও আমদানি করা জুতার দখলে
ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে আছে বাটা, অ্যাপেক্স, লোটো, বে, ওরিয়ন, লেদারেক্স

১৯৯০ সালে যাত্রা শুরু করা অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ট্যানারি ইউনিট ২০১৫ সালে বৈশ্বিক সংস্থা লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের (এলডব্লিউজি) সেরা মান বা গোল্ড কারখানার মর্যাদা পায়। এলডব্লিউজির সনদ না থাকলে বড় ব্র্যান্ডগুলো পণ্য কেনে না। অ্যাপেক্স বিশ্বের ১৩৫ টির মতো জুতার ব্র্যান্ডের কাছে পণ্য বিক্রি করে। অ্যাপেক্স স্থানীয় বাজারে জুতা বিক্রির জন্য ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা করে ১৯৯৭ সালে।

দেশে ব্র্যান্ডের জুতার বাজারে দ্বিতীয় শীর্ষস্থানে রয়েছে অ্যাপেক্স। ব্র্যান্ডের জুতার বাজারের ৭-৮ শতাংশ তাদের দখলে আছে। বর্তমানে সারা দেশে তাদের ৮০০ টির মতো নিজস্ব বিক্রয়কেন্দ্র, ফ্র্যাঞ্চাইজি ও পাইকারি বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে। গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশের বাজারে ৬২২ কোটি টাকার জুতা বিক্রি করে অ্যাপেক্স। গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তাদের বিক্রি ১১ দশমিক ৬০ শতাংশ বেড়ে ৬৯৪ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

জানতে চাইলে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির কারণে জুতার বাজার বড় হচ্ছে। গ্রামেগঞ্জের কোনো মানুষই এখন আর খালি পায়ে হাঁটে না। তবে জাতীয় ব্র্যান্ডের পাশাপাশি অনেক নন-ব্র্যান্ড ও আঞ্চলিক ব্র্যান্ড থাকায় জুতার বাজারে তীব্র প্রতিযোগিতা চলছে। তিনি বলেন, জুতার ব্যবসায় প্রতিবছর ১২-১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। এই প্রবৃদ্ধির বড় অংশ হচ্ছে মূল্যস্ফীতির কারণে। সে জন্য টাকার অঙ্কে ব্যবসা বাড়লেও জুতা বিক্রির পরিমাণ খুব একটা বাড়ছে না।

সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর আরও বলেন, ঈদে জামা-জুতার বাইরেও আসবাব, মোবাইলসহ নানা ধরনের পণ্য কেনায় ঝোঁক বাড়ছে মানুষের। তাই ঈদকেন্দ্রিক জুতার ব্যবসা খুব একটা বাড়ছে না। তারপরও সারা বছর যে পরিমাণ জুতা বিক্রি হয়, তার মধ্যে ৩০ শতাংশ জুতা এই সময়ে বিক্রি হয়।

ব্র্যান্ডের জুতার ব্যবসায় বর্তমানে আকাশচুম্বী দোকান ভাড়াই বড় চ্যালেঞ্জ-এমনটি উল্লেখ করে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের এমডি বলেন, ‘দোকান ভাড়া এতটাই বেড়ে গেছে যে সেটি কোনোভাবেই ব্যবসার সঙ্গে মেলানো যাচ্ছে না। তাই আমরা ঢাকার বাইরে ব্যবসা বাড়ানোর দিকে বর্তমানে বেশি মনোযোগ দিচ্ছি।’

বাটা ও অ্যাপেক্সের বাইরে লোটো, বে, ওরিয়ন, লেদারেক্স, জেনিস, ফরচুনা, জিলস, স্টেপ দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করছে। ভালো সম্ভাবনা থাকায় গত দুই-তিন বছরে নতুন ব্র্যান্ড বাজারে এসেছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আরএফএল গ্রুপের ওয়াকার ও ইউ-এস বাংলা গ্রুপের ভাইব্রেন্ট।

২০১৭ সালে ব্যবসা শুরু করা ওয়াকারের বর্তমানে বিক্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা ৫০ টি। নরসিংদীর ডাঙ্গা ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ওয়াকার ফুটওয়্যারের কারখানা। সেই কারখানার মাসিক উৎপাদনক্ষমতা ১২ লাখ জোড়া জুতা। বর্তমানে ওয়াকার ব্র্যান্ডে কাজ করেন ৫০০ লোক। প্রথম বছরের তুলনায় গত বছর ওয়াকার জুতা বিক্রি ৩৫ শতাংশ বেড়েছে।

ওয়াকারের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) কামরুল হাসান বলেন, মানুষ আগের চেয়ে অনেক বেশি ফ্যাশনসচেতন। পাশাপাশি স্বাস্থ্যসচেতনতাও বাড়ছে মানুষের। তাই যেনতেন নন ব্র্যান্ডের বদলে ব্র্যান্ডের জুতার চাহিদা বাড়ছে। ব্র্যান্ডগুলো সব সময় ফ্যাশনের পাশাপাশি পায়ের সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে জুতা উৎপাদন করে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




দেশে ১৭ হাজার কোটি টাকার জুতার বাজার, ব্র্যান্ডের দখলে ৩০%

আপডেট সময় : ১২:৫১:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০১৯

সকালের সংবাদ; 

ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি রুচির পরিবর্তন ও মানের বিষয়ে সচেতনতা তৈরি হওয়ায় ব্র্যান্ডের জুতার প্রতি ঝুঁকছে দেশের মানুষ। সে জন্য ব্র্যান্ডের জুতার বিক্রি প্রতিবছর গড়ে ১২-১৫ শতাংশ হারে বাড়ছে। তাই নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান এ ব্যবসায় নামছে। তবে ব্যবসা বাড়লেও সারা বছর যে পরিমাণ জুতা বিক্রি হয়, তার বড় অংশ এখনো নন ব্র্যান্ডের।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশে জুতার বাজার বিরাট। অনেক প্রতিষ্ঠান থাকায় প্রতিযোগিতাও বেশি। তারপরও ব্র্যান্ডের জুতার ব্যবসা বাড়ানোর আরও সুযোগ আছে। প্রতিষ্ঠানগুলোও বিনিয়োগ করছে। তবে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে দোকান ভাড়া বেশি হওয়ার কারণে বিক্রয়কেন্দ্র বাড়ানো মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। এটিই ব্র্যান্ডের জুতার ব্যবসায় বর্তমানে প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশে জুতার বাজার বছরে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকার। এর মধ্যে বাজারের ৩০ শতাংশ ব্র্যান্ডের জুতার দখলে। বাকিটা নন-ব্র্যান্ড, আঞ্চলিক ব্র্যান্ড ও আমদানি করা জুতার দখলে। আগে জুতার ব্যবসা উৎসবকেন্দ্রিক থাকলেও বর্তমানে সারা বছর কম বেশি হয়। তারপরও সারা বছরের বিক্রির ২৫-৩০ শতাংশ হয়ে থাকে ঈদুল ফিতরে।

ব্র্যান্ডের জুতার ব্যবসায় শীর্ষস্থান দখল করে রেখেছে বাটা। বৈশ্বিক জুতার এই ব্র্যান্ড বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করে ১৯৬২ সালে। বর্তমানে তাদের দুটি কারখানা রয়েছে। একটি টঙ্গীতে, অন্যটি ধামরাইয়ে। এ দুটি কারখানায় দৈনিক ১ লাখ ৬০ হাজার জোড়া জুতা তৈরির সক্ষমতা রয়েছে। সারা দেশে তাদের ২৪৮টি নিজস্ব বিক্রয়কেন্দ্র আছে। দেড় হাজারের বেশি ডিলার শপও আছে।

বাটার বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৭ সালে তারা স্থানীয় বাজারে ৯০২ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করে। আর ২০১৮ সালের প্রথম নয় মাসে ৭১৪ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করে তারা। আর চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে তাদের বিক্রি দাঁড়িয়েছে ১৭৭ কোটি টাকা।

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১ হাজার ২০০ নতুন নকশার জুতা নিয়ে এসেছে বাটা-এমন তথ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক জুবায়ের ইসলাম বলেন, সারা বছর বাটার যে বিক্রি হয়, তার ২০-২২ শতাংশ ঈদে হয়। তাই সব ঈদেই নিত্যনতুন নকশার জুতা আনা বাজারে আসে।

জুবায়ের ইসলাম আরও বলেন, টঙ্গী ও ধামরাইয়ের দুই কারখানায় বাটার জুতা উৎপাদন হলেও দেশের বাইরে থেকে নাইকি, অ্যাডিডাসসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের জুতা আমদানি করা হয়। সব মিলিয়ে প্রায় ৪০ শতাংশ জুতা বিদেশ থেকে আমদানি করে বাটা। সারা দেশে বিক্রয়কেন্দ্র থাকলেও শুধু ঢাকা শহরেই বাটার মোট বিক্রির ৬০-৬৫ শতাংশ হয়ে থাকে।

দেশে জুতার বাজার প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকার
বাজারের ৩০ শতাংশ ব্র্যান্ডের জুতার দখলে
বাকিটা নন ব্র্যান্ড, আঞ্চলিক ব্র্যান্ড ও আমদানি করা জুতার দখলে
ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে আছে বাটা, অ্যাপেক্স, লোটো, বে, ওরিয়ন, লেদারেক্স

১৯৯০ সালে যাত্রা শুরু করা অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ট্যানারি ইউনিট ২০১৫ সালে বৈশ্বিক সংস্থা লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের (এলডব্লিউজি) সেরা মান বা গোল্ড কারখানার মর্যাদা পায়। এলডব্লিউজির সনদ না থাকলে বড় ব্র্যান্ডগুলো পণ্য কেনে না। অ্যাপেক্স বিশ্বের ১৩৫ টির মতো জুতার ব্র্যান্ডের কাছে পণ্য বিক্রি করে। অ্যাপেক্স স্থানীয় বাজারে জুতা বিক্রির জন্য ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা করে ১৯৯৭ সালে।

দেশে ব্র্যান্ডের জুতার বাজারে দ্বিতীয় শীর্ষস্থানে রয়েছে অ্যাপেক্স। ব্র্যান্ডের জুতার বাজারের ৭-৮ শতাংশ তাদের দখলে আছে। বর্তমানে সারা দেশে তাদের ৮০০ টির মতো নিজস্ব বিক্রয়কেন্দ্র, ফ্র্যাঞ্চাইজি ও পাইকারি বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে। গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশের বাজারে ৬২২ কোটি টাকার জুতা বিক্রি করে অ্যাপেক্স। গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তাদের বিক্রি ১১ দশমিক ৬০ শতাংশ বেড়ে ৬৯৪ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

জানতে চাইলে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির কারণে জুতার বাজার বড় হচ্ছে। গ্রামেগঞ্জের কোনো মানুষই এখন আর খালি পায়ে হাঁটে না। তবে জাতীয় ব্র্যান্ডের পাশাপাশি অনেক নন-ব্র্যান্ড ও আঞ্চলিক ব্র্যান্ড থাকায় জুতার বাজারে তীব্র প্রতিযোগিতা চলছে। তিনি বলেন, জুতার ব্যবসায় প্রতিবছর ১২-১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। এই প্রবৃদ্ধির বড় অংশ হচ্ছে মূল্যস্ফীতির কারণে। সে জন্য টাকার অঙ্কে ব্যবসা বাড়লেও জুতা বিক্রির পরিমাণ খুব একটা বাড়ছে না।

সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর আরও বলেন, ঈদে জামা-জুতার বাইরেও আসবাব, মোবাইলসহ নানা ধরনের পণ্য কেনায় ঝোঁক বাড়ছে মানুষের। তাই ঈদকেন্দ্রিক জুতার ব্যবসা খুব একটা বাড়ছে না। তারপরও সারা বছর যে পরিমাণ জুতা বিক্রি হয়, তার মধ্যে ৩০ শতাংশ জুতা এই সময়ে বিক্রি হয়।

ব্র্যান্ডের জুতার ব্যবসায় বর্তমানে আকাশচুম্বী দোকান ভাড়াই বড় চ্যালেঞ্জ-এমনটি উল্লেখ করে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের এমডি বলেন, ‘দোকান ভাড়া এতটাই বেড়ে গেছে যে সেটি কোনোভাবেই ব্যবসার সঙ্গে মেলানো যাচ্ছে না। তাই আমরা ঢাকার বাইরে ব্যবসা বাড়ানোর দিকে বর্তমানে বেশি মনোযোগ দিচ্ছি।’

বাটা ও অ্যাপেক্সের বাইরে লোটো, বে, ওরিয়ন, লেদারেক্স, জেনিস, ফরচুনা, জিলস, স্টেপ দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করছে। ভালো সম্ভাবনা থাকায় গত দুই-তিন বছরে নতুন ব্র্যান্ড বাজারে এসেছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আরএফএল গ্রুপের ওয়াকার ও ইউ-এস বাংলা গ্রুপের ভাইব্রেন্ট।

২০১৭ সালে ব্যবসা শুরু করা ওয়াকারের বর্তমানে বিক্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা ৫০ টি। নরসিংদীর ডাঙ্গা ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ওয়াকার ফুটওয়্যারের কারখানা। সেই কারখানার মাসিক উৎপাদনক্ষমতা ১২ লাখ জোড়া জুতা। বর্তমানে ওয়াকার ব্র্যান্ডে কাজ করেন ৫০০ লোক। প্রথম বছরের তুলনায় গত বছর ওয়াকার জুতা বিক্রি ৩৫ শতাংশ বেড়েছে।

ওয়াকারের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) কামরুল হাসান বলেন, মানুষ আগের চেয়ে অনেক বেশি ফ্যাশনসচেতন। পাশাপাশি স্বাস্থ্যসচেতনতাও বাড়ছে মানুষের। তাই যেনতেন নন ব্র্যান্ডের বদলে ব্র্যান্ডের জুতার চাহিদা বাড়ছে। ব্র্যান্ডগুলো সব সময় ফ্যাশনের পাশাপাশি পায়ের সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে জুতা উৎপাদন করে।