ঢাকা ১১:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের অঙ্গীকারঃ ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী  Logo মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির নতুন বাসের উদ্বোধন Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য: ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার!




অদম্য মা! মেয়ের সঙ্গে এইচএসসি পাস

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:১৪:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ মে ২০১৯ ১২০ বার পড়া হয়েছে

বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি;
লেখাপড়া করার এক অদম্য ইচ্ছে কুরে কুরে খেয়েছে মাসুমা খাতুনকে। কিন্তু সেই ইচ্ছে বুকের মধ্যে চাপা রেখেই বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন তিনি।

১৯৯৭ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। কিন্তু পরীক্ষার আগেই পরিবার থেকে তার বিয়ে দিয়ে দেন। এরপর আর পরীক্ষা দিতে পারেননি।

কিন্তু বুকের ভেতরের সেই ইচ্ছে পূরণে অবশেষে তিনি নতুন করে শুরু করেছেন লেখাপড়া। নিজের মেয়ের সঙ্গে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিলেন। মেয়ের সঙ্গে এসএসসি পাস করেন। এবার সেই মেয়ের সঙ্গে একসঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন নাটোরের বাগাতিপাড়ার মাসুমা খাতুন।

তিনি বাগাতিপাড়া পৌর মহিলা বিএম কলেজ থেকে চলতি বছর কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইন্সটিটিউট কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেন। আর মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে রাজশাহী সিটি কলেজ কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন।

মাসুমা খাতুনের বাবার বাড়ি বাগাতিপাড়া উপজেলার বারইপাড়া গ্রামে। বিয়ে হয় বাগাতিপাড়া উপজেলা সদরে। স্বামী আবদুল মজিদ আনসার ব্যাটালিয়নে সিপাহি (প্রশিক্ষক) পদে চাকরি করেন। তার কর্মস্থল গাজীপুরে।

মাসুমা খাতুনের দুই সন্তানের বড় ছেলে বনি আমিন বাগাতিপাড়া সরকারি ডিগ্রি কলেজের স্নাতক শ্রেণির ছাত্র।

মাসুমা খাতুন বলেন, ‘বিয়ের ১৮ বছর পেরিয়ে গেছে। পিঠাপিঠি দুই ছেলেমেয়েকে মানুষ করতে গিয়ে নিজের পড়ার কথা ভাবারই সময় পাইনি। অবশেষে ছোট মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে নতুন করে পড়ালেখা শুরু করেছি। সমাজে আর ১০টা মানুষের মতো নিজেকেও একজন শিক্ষিত মানুষ হিসেবে যাতে পরিচয় দিতে পারি, সে কারণেই এই বয়সে কষ্ট করে লেখাপড়া করছি।’

মাসুমা খাতুনের স্বামী আব্দুল মজিদ বলেন, ‘আমার জন্য একটু কষ্ট হলেও আমি তার ইচ্ছাটার মর্যাদা দিয়েছি। সে যতদূর পড়াশোনা করতে পারে, আমি চালিয়ে নেয়ার চেষ্টা করব।’

কেন্দ্র সচিব শরিফ উদ্দিন আহম্মদ বলেন, তার কেন্দ্রে উদ্যমী মা মাসুমা খাতুন এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। তার মেয়েও চলতি বছর একই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে বলে তিনি জেনেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




অদম্য মা! মেয়ের সঙ্গে এইচএসসি পাস

আপডেট সময় : ১০:১৪:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ মে ২০১৯

বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি;
লেখাপড়া করার এক অদম্য ইচ্ছে কুরে কুরে খেয়েছে মাসুমা খাতুনকে। কিন্তু সেই ইচ্ছে বুকের মধ্যে চাপা রেখেই বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন তিনি।

১৯৯৭ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। কিন্তু পরীক্ষার আগেই পরিবার থেকে তার বিয়ে দিয়ে দেন। এরপর আর পরীক্ষা দিতে পারেননি।

কিন্তু বুকের ভেতরের সেই ইচ্ছে পূরণে অবশেষে তিনি নতুন করে শুরু করেছেন লেখাপড়া। নিজের মেয়ের সঙ্গে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিলেন। মেয়ের সঙ্গে এসএসসি পাস করেন। এবার সেই মেয়ের সঙ্গে একসঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন নাটোরের বাগাতিপাড়ার মাসুমা খাতুন।

তিনি বাগাতিপাড়া পৌর মহিলা বিএম কলেজ থেকে চলতি বছর কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইন্সটিটিউট কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেন। আর মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে রাজশাহী সিটি কলেজ কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন।

মাসুমা খাতুনের বাবার বাড়ি বাগাতিপাড়া উপজেলার বারইপাড়া গ্রামে। বিয়ে হয় বাগাতিপাড়া উপজেলা সদরে। স্বামী আবদুল মজিদ আনসার ব্যাটালিয়নে সিপাহি (প্রশিক্ষক) পদে চাকরি করেন। তার কর্মস্থল গাজীপুরে।

মাসুমা খাতুনের দুই সন্তানের বড় ছেলে বনি আমিন বাগাতিপাড়া সরকারি ডিগ্রি কলেজের স্নাতক শ্রেণির ছাত্র।

মাসুমা খাতুন বলেন, ‘বিয়ের ১৮ বছর পেরিয়ে গেছে। পিঠাপিঠি দুই ছেলেমেয়েকে মানুষ করতে গিয়ে নিজের পড়ার কথা ভাবারই সময় পাইনি। অবশেষে ছোট মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে নতুন করে পড়ালেখা শুরু করেছি। সমাজে আর ১০টা মানুষের মতো নিজেকেও একজন শিক্ষিত মানুষ হিসেবে যাতে পরিচয় দিতে পারি, সে কারণেই এই বয়সে কষ্ট করে লেখাপড়া করছি।’

মাসুমা খাতুনের স্বামী আব্দুল মজিদ বলেন, ‘আমার জন্য একটু কষ্ট হলেও আমি তার ইচ্ছাটার মর্যাদা দিয়েছি। সে যতদূর পড়াশোনা করতে পারে, আমি চালিয়ে নেয়ার চেষ্টা করব।’

কেন্দ্র সচিব শরিফ উদ্দিন আহম্মদ বলেন, তার কেন্দ্রে উদ্যমী মা মাসুমা খাতুন এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। তার মেয়েও চলতি বছর একই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে বলে তিনি জেনেছেন।