ঢাকা ০৫:০৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার! Logo ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হওয়া শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোর সংস্কার শুরু Logo বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির দাবিতে শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের মানববন্ধন Logo কুবি উপাচার্যের বক্তব্যের প্রমাণ দিতে শিক্ষক সমিতির সাত দিনের আল্টিমেটাম




আসক্ত তারা মিয়ার আর্জি ‘আমাকে অ্যারেস্ট করে জেলে দিন’

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:৩৫:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ মে ২০১৯ ১২৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক;
তারা মিয়া। বয়স ১৯ বছর। থাকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানা এলাকার সিটিপল্লীতে। সড়কের পিচ ঢালাইয়ের শ্রমিক। দিন হাজিরা যা পায়, তার প্রায় সবটাই খরচ হয় ইয়াবা সেবনে। টানা দুই বছর ইয়াবায় আসক্ত থাকার পর এখন সে ওই পথ থেকে বের হতে চায়। মাদক ছাড়তে কারাগারে বন্দি থাকা ‘নিরাপদ’ মনে করে এই তরুণ। কিন্তু তার বিরুদ্ধে তো কোনো মামলা নেই, কীভাবে বন্দি হিসেবে কারাগারে থাকতে পারবে- এ নিয়ে কয়েকদিন ধরে ভাবছিল তারা মিয়া। একপর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেয়-স্বেচ্ছায় থানা পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করবে। রোববার সন্ধ্যায় পুরনো কাপড়ে পেঁচানো চাপাতি হাতে দ্রুতবেগে হাজির হয় যাত্রাবাড়ী থানার ডিউটি অফিসারের কক্ষে। ডিউটি অফিসারকে বলে, ‘আমাকে অ্যারেস্ট করে জেলে দিন। আমি জেলে যাবো।’ এরপরই হাতে থাকা চাপাতিটা ডিউটি অফিসারের সামনে রাখে। স্বেচ্ছায় গ্রেফতারের কথা শুনে বিষ্মিত হয়ে হয়ে পড়েন ডিউটি অফিসার এসআই জহির।

যাত্রাবাড়ী থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ বলেন, ছেলেটি মাদক ছাড়তে চায়। এ কারণেই সে থানায় স্বেচ্ছায় গ্রেফতার হতে এসেছে। চাপাতি দিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করে। তাকে কোনো মামলায় গ্রেফতার দেখানো বা তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়নি। মাদক ছাড়তে পুলিশ তাকে সহযোগিতা করবে। রোববার থেকে তাকে থানায় রাখা হয়েছে। দু’দিন সে মাদক সেবন করেনি।

পুলিশ জানিয়েছে, মাদকাসক্ত বন্ধুদের সংস্পর্শে এসে দুই বছর আগে তারা মিয়া গাঁজা সেবন শুরু করে। এরপর ইয়াবা। বাবা ও ভাইয়ের সঙ্গে সিটিপল্লীতে থাকে সে। তার বাবাও সড়কে পিচ ঢালাইশের শ্রমিক। তারা মিয়ার একজন পরিচিত মাদকসেবী সম্প্রতি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। কারাবন্দি থাকার পর জামিনে বের হয়েছে সেই মাদকসেবী। তবে এখন সে পুরোপুরি সুস্থ। স্ত্রী নিয়ে সংসার করছে। একটা চাকরিও করে। মাদক সেবন করছে না। কারাবন্দি থাকার পর ওই ব্যক্তি মাদক থেকে দূরে রয়েছে। তাকে দেখে উদ্বুদ্ধ হয়েছে তারা মিয়া। তার একমাত্র ছোটো ভাই সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। মাদক সেবন করায় সে ভাইয়ের পড়ালেখার খরচ দিতে পারে না। এ নিয়ে আত্মদহনে ভুগছে সে। এখন তার উপার্জনের অর্থে ভাইয়ের লেখাপড়া করাতে চাই। ভাইকে মানুষের মত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে চায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




আসক্ত তারা মিয়ার আর্জি ‘আমাকে অ্যারেস্ট করে জেলে দিন’

আপডেট সময় : ০৭:৩৫:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ মে ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক;
তারা মিয়া। বয়স ১৯ বছর। থাকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানা এলাকার সিটিপল্লীতে। সড়কের পিচ ঢালাইয়ের শ্রমিক। দিন হাজিরা যা পায়, তার প্রায় সবটাই খরচ হয় ইয়াবা সেবনে। টানা দুই বছর ইয়াবায় আসক্ত থাকার পর এখন সে ওই পথ থেকে বের হতে চায়। মাদক ছাড়তে কারাগারে বন্দি থাকা ‘নিরাপদ’ মনে করে এই তরুণ। কিন্তু তার বিরুদ্ধে তো কোনো মামলা নেই, কীভাবে বন্দি হিসেবে কারাগারে থাকতে পারবে- এ নিয়ে কয়েকদিন ধরে ভাবছিল তারা মিয়া। একপর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেয়-স্বেচ্ছায় থানা পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করবে। রোববার সন্ধ্যায় পুরনো কাপড়ে পেঁচানো চাপাতি হাতে দ্রুতবেগে হাজির হয় যাত্রাবাড়ী থানার ডিউটি অফিসারের কক্ষে। ডিউটি অফিসারকে বলে, ‘আমাকে অ্যারেস্ট করে জেলে দিন। আমি জেলে যাবো।’ এরপরই হাতে থাকা চাপাতিটা ডিউটি অফিসারের সামনে রাখে। স্বেচ্ছায় গ্রেফতারের কথা শুনে বিষ্মিত হয়ে হয়ে পড়েন ডিউটি অফিসার এসআই জহির।

যাত্রাবাড়ী থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ বলেন, ছেলেটি মাদক ছাড়তে চায়। এ কারণেই সে থানায় স্বেচ্ছায় গ্রেফতার হতে এসেছে। চাপাতি দিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করে। তাকে কোনো মামলায় গ্রেফতার দেখানো বা তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়নি। মাদক ছাড়তে পুলিশ তাকে সহযোগিতা করবে। রোববার থেকে তাকে থানায় রাখা হয়েছে। দু’দিন সে মাদক সেবন করেনি।

পুলিশ জানিয়েছে, মাদকাসক্ত বন্ধুদের সংস্পর্শে এসে দুই বছর আগে তারা মিয়া গাঁজা সেবন শুরু করে। এরপর ইয়াবা। বাবা ও ভাইয়ের সঙ্গে সিটিপল্লীতে থাকে সে। তার বাবাও সড়কে পিচ ঢালাইশের শ্রমিক। তারা মিয়ার একজন পরিচিত মাদকসেবী সম্প্রতি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। কারাবন্দি থাকার পর জামিনে বের হয়েছে সেই মাদকসেবী। তবে এখন সে পুরোপুরি সুস্থ। স্ত্রী নিয়ে সংসার করছে। একটা চাকরিও করে। মাদক সেবন করছে না। কারাবন্দি থাকার পর ওই ব্যক্তি মাদক থেকে দূরে রয়েছে। তাকে দেখে উদ্বুদ্ধ হয়েছে তারা মিয়া। তার একমাত্র ছোটো ভাই সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। মাদক সেবন করায় সে ভাইয়ের পড়ালেখার খরচ দিতে পারে না। এ নিয়ে আত্মদহনে ভুগছে সে। এখন তার উপার্জনের অর্থে ভাইয়ের লেখাপড়া করাতে চাই। ভাইকে মানুষের মত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে চায়।