ঢাকা ০৯:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ




‘আমি ভিপি নুরকে গুনিনা’ আর তুই কিসের সাংবাদিক

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:৫৮:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ মার্চ ২০২০ ১৮৭ বার পড়া হয়েছে

সকালের সংবাদ ডেস্ক;

ডব্লিউ নিউজের সম্পাদক সাগর চৌধুরীর উপর ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বড় মানিকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন হায়দারের ছোট ছেলে নাবিল হায়দারের বিরুদ্ধে সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে।

মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) সকালে বোরহানউদ্দিনে রাজমনি সিনেমা হলের সামনে মারধরের এ ঘটনা ঘটে।

মারধরের শিকার সাগর চৌধুরী সকালের সংবাদকে জানান, তাকে নাবিল ফোন করে বাসা থেকে বড়দিন রাজমনি সিনেমার কাছে নিয়েই মারধর শুরু করে।

তিনি বলেন, নাবিল তার মোবাইল দিয়ে লাইভ করে বলে আমি নাকি তার মোবাইল নিয়েছি।

ভিডিওতে দেখা যায়, সাগরের জামার কলার ধরে তাকে মোবাইল চুরির অপবাদ দিচ্ছেন নাবিল।

সাগরের দাবি, ইউনিয়নের জেলেদের ১ মণ করে চাল দেওয়ার কথা, কিন্তু চাল দেওয়া হচ্ছে মাত্র ১৪-১৫ কেজি করে। বিষয়টা আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানাই এবং চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞাসা করি কেন চাল কম দিচ্ছেন? যে কারণে বোরহানউদ্দিন বড় মানিকা ইউনিয়ন পরিষদের (ভোলা) চেয়ারম্যান জসিমউদ্দিন হায়দারের ছেলে নাবিল হায়দার আজকে আমাকে ডেকে নেয় দেখা করার জন্য। তারপর মারধর করে।

স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নাবিলকে রিকশায় করে কয়েক বস্তা চাল নিয়ে যেতে দেখেন সাগর। সাগরের দাবি, ওই ছবিও তিনি ইউএনওকে পাঠিয়েছেন।

মোহাম্মদ বশির গাজী বলেন, চারদিন আগে সাগর তাকে একটা ভিডিও দেখান। যেখানে দুই জেলে বলেন, তারা ১৪ কেজি করে চাল পেয়েছেন।

ওই জেলেদের কেনো চাল কম দেয়া হয়েছে, ইউপি চেয়ারম্যানের সচিবের কাছে জানতে চান ইউএনও। এরপর ইউপি চেয়ারম্যান জসিমউদ্দিন হয়দার আলী ওই দুই জেলেকে নিয়ে ইউএনওর কাছে আসেন।

ইউএনও বলেন, তারা আমার কাছে এসে জানান যে, সাগর তাদের ওই কথা শিখিয়ে দিয়েছেন বলার জন্য।

তবে নাবিল যে রিকশায় করে চাল নিয়েছেন এমন কোনো ছবি তার কাছে পাঠাও হয়নি বলে জানান ইউএনও।

নাবিল হায়দার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি নুরুল হক নুরকে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। ওই সময় নূর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগও দিয়েছিলেন।

সাগরের দাবি, ভিপি নুরকে হত্যার হুমকি দেয়ার সেই ঘটনার ভিডিও দেখিয়ে নাবিল তাকে বলেছেন, আমি ভিপি নুরকে গুনি না, আর তুমি তো কোথাকার সাংবাদিক।

তিনি বলেন, একথা বলতে বলতে আমাকে প্রচণ্ড রকম মারধর করে এবং মোবাইল ছিনতাইকারী হিসেবে অপবাদ দেয়।

এ বিষয়ে জানার জন্য নাবিলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে। তার বাবা ইউপি চেয়ারম্যান জসিমউদ্দিন হায়দারের ফোন নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া গেছে।

সাগর চৌধুরীর উপর সন্ত্রাসী হামলায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ অনলাইন প্রেসক্লাবসহ অন্যান্য সাংবাদিক সংগঠন। তারা এই ঘটনার মূলহোতা নাবিল সহ তার সন্ত্রাসী বাহিনীকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




‘আমি ভিপি নুরকে গুনিনা’ আর তুই কিসের সাংবাদিক

আপডেট সময় : ১০:৫৮:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ মার্চ ২০২০

সকালের সংবাদ ডেস্ক;

ডব্লিউ নিউজের সম্পাদক সাগর চৌধুরীর উপর ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বড় মানিকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন হায়দারের ছোট ছেলে নাবিল হায়দারের বিরুদ্ধে সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে।

মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) সকালে বোরহানউদ্দিনে রাজমনি সিনেমা হলের সামনে মারধরের এ ঘটনা ঘটে।

মারধরের শিকার সাগর চৌধুরী সকালের সংবাদকে জানান, তাকে নাবিল ফোন করে বাসা থেকে বড়দিন রাজমনি সিনেমার কাছে নিয়েই মারধর শুরু করে।

তিনি বলেন, নাবিল তার মোবাইল দিয়ে লাইভ করে বলে আমি নাকি তার মোবাইল নিয়েছি।

ভিডিওতে দেখা যায়, সাগরের জামার কলার ধরে তাকে মোবাইল চুরির অপবাদ দিচ্ছেন নাবিল।

সাগরের দাবি, ইউনিয়নের জেলেদের ১ মণ করে চাল দেওয়ার কথা, কিন্তু চাল দেওয়া হচ্ছে মাত্র ১৪-১৫ কেজি করে। বিষয়টা আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানাই এবং চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞাসা করি কেন চাল কম দিচ্ছেন? যে কারণে বোরহানউদ্দিন বড় মানিকা ইউনিয়ন পরিষদের (ভোলা) চেয়ারম্যান জসিমউদ্দিন হায়দারের ছেলে নাবিল হায়দার আজকে আমাকে ডেকে নেয় দেখা করার জন্য। তারপর মারধর করে।

স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নাবিলকে রিকশায় করে কয়েক বস্তা চাল নিয়ে যেতে দেখেন সাগর। সাগরের দাবি, ওই ছবিও তিনি ইউএনওকে পাঠিয়েছেন।

মোহাম্মদ বশির গাজী বলেন, চারদিন আগে সাগর তাকে একটা ভিডিও দেখান। যেখানে দুই জেলে বলেন, তারা ১৪ কেজি করে চাল পেয়েছেন।

ওই জেলেদের কেনো চাল কম দেয়া হয়েছে, ইউপি চেয়ারম্যানের সচিবের কাছে জানতে চান ইউএনও। এরপর ইউপি চেয়ারম্যান জসিমউদ্দিন হয়দার আলী ওই দুই জেলেকে নিয়ে ইউএনওর কাছে আসেন।

ইউএনও বলেন, তারা আমার কাছে এসে জানান যে, সাগর তাদের ওই কথা শিখিয়ে দিয়েছেন বলার জন্য।

তবে নাবিল যে রিকশায় করে চাল নিয়েছেন এমন কোনো ছবি তার কাছে পাঠাও হয়নি বলে জানান ইউএনও।

নাবিল হায়দার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি নুরুল হক নুরকে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। ওই সময় নূর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগও দিয়েছিলেন।

সাগরের দাবি, ভিপি নুরকে হত্যার হুমকি দেয়ার সেই ঘটনার ভিডিও দেখিয়ে নাবিল তাকে বলেছেন, আমি ভিপি নুরকে গুনি না, আর তুমি তো কোথাকার সাংবাদিক।

তিনি বলেন, একথা বলতে বলতে আমাকে প্রচণ্ড রকম মারধর করে এবং মোবাইল ছিনতাইকারী হিসেবে অপবাদ দেয়।

এ বিষয়ে জানার জন্য নাবিলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে। তার বাবা ইউপি চেয়ারম্যান জসিমউদ্দিন হায়দারের ফোন নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া গেছে।

সাগর চৌধুরীর উপর সন্ত্রাসী হামলায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ অনলাইন প্রেসক্লাবসহ অন্যান্য সাংবাদিক সংগঠন। তারা এই ঘটনার মূলহোতা নাবিল সহ তার সন্ত্রাসী বাহিনীকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছেন।