ঢাকা ০৮:০৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ




ফেসবুকে ভিডিও দেখে ৪৮ বছর পর বাবাকে খুঁজে পেলেন সন্তানরা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:১১:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২০ ৫৬ বার পড়া হয়েছে

ফেসবুকে ভিডিও দেখে ৪৮ বছর পর বাবাকে খুঁজে পেলন সন্তানরা

অনলাইন ডেস্ক | সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভিডিও দেখে ৪৮ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া বাবাকে খুঁজে পেলেন সন্তানেরা। ঘটনাটি ঘটেছে সিলেটের ওসমানী হাসপাতালে।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) হাবিবুর রহমানের (৭৮) সন্তানরা হাসপাতালে গিয়ে তাকে শনাক্ত করেন। এসময় পরিবারের সদস্যরা আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন।
জানা গেছে, হাবিবুর রহমানের বাড়ি সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলায়। ১৯৭২ সালে তিনি ব্যবাসার উদ্দেশে বাড়ি থেকে চট্রগ্রামের উদ্দেশে বের হন। কিন্তু এরপর আর বাড়ি ফেরেননি। হারিয়ে যাওয়ার পর হাবিবুর রহমান বিভিন্ন মাজারে ঘুমাতেন। এক পর্যায়ে তিনি মৌলভীবাজারের হজরত শাহাব উদ্দিনের মাজারে থাকা শুরু করেন। আর সেই মাজারেই পরিচয় হয় মৌলভীবাজারের রায় শ্রী এলাকার রাজিয়া বেগমের সাথে। রাজিয়া বেগমও মাজার খুব পছন্দ করতেন। সেই থেকেই তিনি হাবিবুর রহমানের দেখাশুনা শুরু করেন।
গত এক যুগ ধরে বিছানায় পড়েছিলেন হাবিবুর রহমান। একমাস আগে তিনি নিজের খাট থেকে পড়ে যান। এতে তার ডান হাত ভেঙ্গে যায়। পরে রাজিয়া বেগম থাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। তবে গত ৬/৭দিন আগে হাবিবুর রহমানের ভাঙ্গা হাতে ইনফেকশন দেখা দিলে চিকিৎসকরা তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
পরে ওসমানী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দুই দিন আগে ভাঙ্গা হাতে অপারেশন করার সিদ্ধান্ত নিলেও প্রয়োজনীয় অর্থ জোগাড় করতে না পারায় তার অপারেশন হয়নি।
আর এই বিষয়টি হাবিবুর রহমান পাশের বেডের একজনের সঙ্গে শেয়ার করেন। পরে ঐ ব্যক্তি হাবিবুর রহমানের সামগ্রিক বিষয় জানিয়ে ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট করে সাহায্যর জন্য আবেদন করেন। এ ভিডিও দেখেন আমেরিকা প্রবাসী হাবিবুর রহমানের বড় ছেলের বউ। এরপর তিনি পরিবারের সদস্যদের দেখালে পরিবারের সদস্য অনুমান করেন তিনিই হারিয়ে যাওয়া হাবিবুর রহমান।
পরে তার ছেলে ও পরিবারের সদস্যরা শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তার সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হন তিনিই হারিয়ে যাওয়া তাদের বাবা।
হাবিবুর রহমান শুধু নিজের স্ত্রী ও ভাইদের নাম বলতে পারছিলেন। নিজের গ্রামের নামও বলতে পেরেছিলেন। পরবর্তীতে পরিবারের সদস্যরা তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বের করে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করান। বর্তমানে সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




ফেসবুকে ভিডিও দেখে ৪৮ বছর পর বাবাকে খুঁজে পেলেন সন্তানরা

আপডেট সময় : ১০:১১:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২০

অনলাইন ডেস্ক | সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভিডিও দেখে ৪৮ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া বাবাকে খুঁজে পেলেন সন্তানেরা। ঘটনাটি ঘটেছে সিলেটের ওসমানী হাসপাতালে।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) হাবিবুর রহমানের (৭৮) সন্তানরা হাসপাতালে গিয়ে তাকে শনাক্ত করেন। এসময় পরিবারের সদস্যরা আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন।
জানা গেছে, হাবিবুর রহমানের বাড়ি সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলায়। ১৯৭২ সালে তিনি ব্যবাসার উদ্দেশে বাড়ি থেকে চট্রগ্রামের উদ্দেশে বের হন। কিন্তু এরপর আর বাড়ি ফেরেননি। হারিয়ে যাওয়ার পর হাবিবুর রহমান বিভিন্ন মাজারে ঘুমাতেন। এক পর্যায়ে তিনি মৌলভীবাজারের হজরত শাহাব উদ্দিনের মাজারে থাকা শুরু করেন। আর সেই মাজারেই পরিচয় হয় মৌলভীবাজারের রায় শ্রী এলাকার রাজিয়া বেগমের সাথে। রাজিয়া বেগমও মাজার খুব পছন্দ করতেন। সেই থেকেই তিনি হাবিবুর রহমানের দেখাশুনা শুরু করেন।
গত এক যুগ ধরে বিছানায় পড়েছিলেন হাবিবুর রহমান। একমাস আগে তিনি নিজের খাট থেকে পড়ে যান। এতে তার ডান হাত ভেঙ্গে যায়। পরে রাজিয়া বেগম থাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। তবে গত ৬/৭দিন আগে হাবিবুর রহমানের ভাঙ্গা হাতে ইনফেকশন দেখা দিলে চিকিৎসকরা তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
পরে ওসমানী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দুই দিন আগে ভাঙ্গা হাতে অপারেশন করার সিদ্ধান্ত নিলেও প্রয়োজনীয় অর্থ জোগাড় করতে না পারায় তার অপারেশন হয়নি।
আর এই বিষয়টি হাবিবুর রহমান পাশের বেডের একজনের সঙ্গে শেয়ার করেন। পরে ঐ ব্যক্তি হাবিবুর রহমানের সামগ্রিক বিষয় জানিয়ে ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট করে সাহায্যর জন্য আবেদন করেন। এ ভিডিও দেখেন আমেরিকা প্রবাসী হাবিবুর রহমানের বড় ছেলের বউ। এরপর তিনি পরিবারের সদস্যদের দেখালে পরিবারের সদস্য অনুমান করেন তিনিই হারিয়ে যাওয়া হাবিবুর রহমান।
পরে তার ছেলে ও পরিবারের সদস্যরা শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তার সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হন তিনিই হারিয়ে যাওয়া তাদের বাবা।
হাবিবুর রহমান শুধু নিজের স্ত্রী ও ভাইদের নাম বলতে পারছিলেন। নিজের গ্রামের নামও বলতে পেরেছিলেন। পরবর্তীতে পরিবারের সদস্যরা তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বের করে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করান। বর্তমানে সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।