ঢাকা ০৮:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের অঙ্গীকারঃ ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী  Logo মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির নতুন বাসের উদ্বোধন Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য: ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার!




প্রতিবন্ধী নারী চাঁদের কনা’র আমরন অনশনের টানা ২৪ দিন, দেখার কেউ নেই!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:৩৪:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ নভেম্বর ২০১৯ ৬৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চাকরির বয়স আছে আর মাত্র ৪ মাস। ইডেন বিশ্বিবিদ্যালয় থেকে মাস্টার্সে প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে ঘুরতে চাকরির শেষ মুহুর্তে এসে এক পর্যায়ে হতাশ হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাত প্রার্থনার দাবিতে আমরন অনশন কর্মসূচি পালন করছে। দেখতে দেখতে ২১ দিন পার হয়ে গেল। এখনো পাশে এসে কেউ দাঁড়ায়নি। বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা সংহতি প্রকাশ করতে আজ ৫ নভেম্বর বিকালে প্রেসক্লাবের সামনে মাহাবুব হক চাঁদের কনার পাশে গিয়ে দাঁড়ান। সে কাঁদতে কাঁদতে বলেন প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাত প্রাপ্তির জন্য চিঠি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বহুবার গিয়েছে। কিন্তু কেউ আমার চিঠিটিও গ্রহণ করেনি।

সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার বিয়ারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন চাঁদের কনা। জন্মের ৯ মাস বয়সেই পলিওতে আক্রান্ত হয়ে হাঁটার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। হাতের উপর ভর দিয়ে এবং হুইল চেয়ারে চলাফেরা করতে হয়। তার বাবা ব্রেন স্ট্রোক করে অসুস্থ। মা অনেক আগেই মারা গেছেন। ছোট দুই ভাই টাকার অভাবে ঠিকমত লেখাপড়া করতে পারে না। জীবনে অনেক স্বপ্ন ছিল এক দিন বড় চাকরি করে পরিবারের হাল ধরবে। সেই স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হল। চাঁদের কনার অনেক প্রতিভা। সে আবৃত্তি শিল্পী, অভিনয় শিল্পী, সাহিত্য ও কবিতায় লেখার হাত অনেক চমৎকার, পাশাপাশি কম্পিউটারেও বিশেষ কোর্স অর্জন করেছে। নৃত্য শিল্পী হিসেবেও তার সুনাম রয়েছে। প্রতিবন্ধীকে জয় করে এগিয়ে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু এখন চরম হতাশায় প্রতিটি মুহুর্ত কাটছে। প্রধানমন্ত্রী তার সাথে সাক্ষাত না করলে সে তার জীবনকে কোথায় নিয়ে যাবে এখনো ভেবে পাচ্ছে না।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমার যোগ্যতা আছে কিন্তু কেউ আমাকে চাকরি দিতে চায় না। আমি তো কারো কাছে ভিক্ষা চায় না। আমার যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ চাই। কিন্তু সেই সোনার হরিন আমার কাছে কখনো ধরা দিল না। বিয়ের বয়সও পার হয়ে গেছে। পঙ্গু বলে কেউ বিয়েও করতে আসেনি। যদি একটি ভাল চাকরি থাকতো পরিবারের পাশাপাশি একজন জীবনসঙ্গীও পেতাম। এখন আমার কোথাও কেউ নেই। প্রধানমন্ত্রী এত মানুষের পাশে দাঁড়ান। তিনি কেন আমাকে বঞ্চিত করছেন।

সংগঠনের পক্ষ থেকে তাকে প্রশ্ন করা হয় স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছে গিয়েছিলেন কিনা ? এর জবাবে চাঁদের কনা বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য তিনি সাবেক মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও ১৪ দলের সমন্বয়কারী মোহাম্মদ নাসিম এম.পি। তার কাছে বহুবার গিয়েছি কিন্তু একবারও দেখা করতে পারিনি। আমার মৃত্যু যদি তার দেখা মেলে ! এছাড়া এ বিষয়ে আর কিছু বলতে পারছি না। তিনি আক্ষেপ করে আরো বলেন, আমার মৃত্যু নয় স্বপ্নপুরণ এর বাইরে আমি আর কিছু ভাবতে চাই না। যেদেশে মেধার মূল্য নেই সেদেশে বেঁচে থেকে লাভ কি। আমিও তো আওয়ামী লীগে ভোট দিয়েছিলাম। আমার পরিবারও আওয়ামী লীগ করে। আর এখন ক্ষমতায়ও আওয়ামী লীগ। অথচ আমার কিছুই হল না।

মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, একজন মেধাবী প্রতিভাবান প্রতিবন্ধী চাঁদের কনার পাশে প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছা করলেই দাঁড়াতে পারেন। তার স্বপ্ন পূরণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর একটি নির্দেশই যথেষ্ট। আশা করছি প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।”

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




প্রতিবন্ধী নারী চাঁদের কনা’র আমরন অনশনের টানা ২৪ দিন, দেখার কেউ নেই!

আপডেট সময় : ১০:৩৪:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ নভেম্বর ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চাকরির বয়স আছে আর মাত্র ৪ মাস। ইডেন বিশ্বিবিদ্যালয় থেকে মাস্টার্সে প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে ঘুরতে চাকরির শেষ মুহুর্তে এসে এক পর্যায়ে হতাশ হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাত প্রার্থনার দাবিতে আমরন অনশন কর্মসূচি পালন করছে। দেখতে দেখতে ২১ দিন পার হয়ে গেল। এখনো পাশে এসে কেউ দাঁড়ায়নি। বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা সংহতি প্রকাশ করতে আজ ৫ নভেম্বর বিকালে প্রেসক্লাবের সামনে মাহাবুব হক চাঁদের কনার পাশে গিয়ে দাঁড়ান। সে কাঁদতে কাঁদতে বলেন প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাত প্রাপ্তির জন্য চিঠি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বহুবার গিয়েছে। কিন্তু কেউ আমার চিঠিটিও গ্রহণ করেনি।

সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার বিয়ারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন চাঁদের কনা। জন্মের ৯ মাস বয়সেই পলিওতে আক্রান্ত হয়ে হাঁটার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। হাতের উপর ভর দিয়ে এবং হুইল চেয়ারে চলাফেরা করতে হয়। তার বাবা ব্রেন স্ট্রোক করে অসুস্থ। মা অনেক আগেই মারা গেছেন। ছোট দুই ভাই টাকার অভাবে ঠিকমত লেখাপড়া করতে পারে না। জীবনে অনেক স্বপ্ন ছিল এক দিন বড় চাকরি করে পরিবারের হাল ধরবে। সেই স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হল। চাঁদের কনার অনেক প্রতিভা। সে আবৃত্তি শিল্পী, অভিনয় শিল্পী, সাহিত্য ও কবিতায় লেখার হাত অনেক চমৎকার, পাশাপাশি কম্পিউটারেও বিশেষ কোর্স অর্জন করেছে। নৃত্য শিল্পী হিসেবেও তার সুনাম রয়েছে। প্রতিবন্ধীকে জয় করে এগিয়ে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু এখন চরম হতাশায় প্রতিটি মুহুর্ত কাটছে। প্রধানমন্ত্রী তার সাথে সাক্ষাত না করলে সে তার জীবনকে কোথায় নিয়ে যাবে এখনো ভেবে পাচ্ছে না।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমার যোগ্যতা আছে কিন্তু কেউ আমাকে চাকরি দিতে চায় না। আমি তো কারো কাছে ভিক্ষা চায় না। আমার যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ চাই। কিন্তু সেই সোনার হরিন আমার কাছে কখনো ধরা দিল না। বিয়ের বয়সও পার হয়ে গেছে। পঙ্গু বলে কেউ বিয়েও করতে আসেনি। যদি একটি ভাল চাকরি থাকতো পরিবারের পাশাপাশি একজন জীবনসঙ্গীও পেতাম। এখন আমার কোথাও কেউ নেই। প্রধানমন্ত্রী এত মানুষের পাশে দাঁড়ান। তিনি কেন আমাকে বঞ্চিত করছেন।

সংগঠনের পক্ষ থেকে তাকে প্রশ্ন করা হয় স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছে গিয়েছিলেন কিনা ? এর জবাবে চাঁদের কনা বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য তিনি সাবেক মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও ১৪ দলের সমন্বয়কারী মোহাম্মদ নাসিম এম.পি। তার কাছে বহুবার গিয়েছি কিন্তু একবারও দেখা করতে পারিনি। আমার মৃত্যু যদি তার দেখা মেলে ! এছাড়া এ বিষয়ে আর কিছু বলতে পারছি না। তিনি আক্ষেপ করে আরো বলেন, আমার মৃত্যু নয় স্বপ্নপুরণ এর বাইরে আমি আর কিছু ভাবতে চাই না। যেদেশে মেধার মূল্য নেই সেদেশে বেঁচে থেকে লাভ কি। আমিও তো আওয়ামী লীগে ভোট দিয়েছিলাম। আমার পরিবারও আওয়ামী লীগ করে। আর এখন ক্ষমতায়ও আওয়ামী লীগ। অথচ আমার কিছুই হল না।

মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, একজন মেধাবী প্রতিভাবান প্রতিবন্ধী চাঁদের কনার পাশে প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছা করলেই দাঁড়াতে পারেন। তার স্বপ্ন পূরণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর একটি নির্দেশই যথেষ্ট। আশা করছি প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।”