ঢাকা ০৮:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের অঙ্গীকারঃ ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী  Logo মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির নতুন বাসের উদ্বোধন Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য: ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার!




ঢাকা-পাটুরিয়া ৭০ কিমি মৃত্যুফাঁদ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:১৮:০৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০১৯ ১৩৫ বার পড়া হয়েছে
নেই পর্যাপ্ত ওভারব্রিজ, ডিভাইডার, নজরদারি

দিন দিন যেন মৃৃত্যুপুরী হয়ে উঠছে সময়ের ব্যস্ততম ঢাকা-পাটুরিয়া ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ মহাসড়ক। সড়ক দুর্ঘটনার ভয়াল আঘাত যেন থামছেই না। রাজধানী ঢাকা শহর থেকে দেশের পশ্চিমাঞ্চল ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই মহাসড়ক। যেখানে প্রতিনিয়তই প্রাণ হারাচ্ছেন অনেকে। অকালে পঙ্গুত্ব বরণের উদাহরণও রয়েছে শত শত। তবে এ সমস্যা উত্তরণে চোখে পড়ার মতো তেমন কোনো কার্যক্রমই নেই কোনো সংস্থার। সম্প্রতি কিছু কার্যক্রম হাতে নিলেও কবে নাগাদ এগুলো আশার মুখ দেখবে এ নিয়ে ধোঁয়াশা কাজ করছে জনমনে। ফলে এই মহাসড়কে চলাচলকারী জনগণকে প্রতিনিয়ত হাতের মুঠোয় মৃত্যুকে সঙ্গে নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। তবে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের মানিকগঞ্জ জেলার প্রকৌশলী মানজুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ মহাসড়কের বিপজ্জনক বাঁকগুলো সোজাকরণ করা হয়েছে। ফলে সড়ক দুর্ঘটনা কমে গেছে।’ তবে এ মহাসড়কে দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে অনেকেই সাভার উপজেলার বাসিন্দা। রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত দেশের অন্যতম বৃহৎ বাস টার্মিনাল গাবতলী। এ বাস টার্মিনাল থেকে মানিকগঞ্জ জেলার আরিচা ও পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত বিস্তৃত এই সড়কে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহনের চলাচল। শুধু অভ্যন্তরীণ নয়। বরং যশোর ও দর্শনা হয়ে সরাসরি ভারতের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থারও একমাত্র মাধ্যম এই ঢাকা-পাটুরিয়া মহাসড়ক। ব্যস্ত মহাসড়কটি গাবতলী থেকে ঢাকা জেলার অন্তর্গত সমগ্র সাভার ও ধামরাই উপজেলা এবং সমগ্র মানিকগঞ্জ জেলার ওপর দিয়ে দীর্ঘ পথ অতিক্রম শেষে আরিচায় পদ্মাপাড়ে গিয়ে নিজের অস্তিত্বের ইতি ঘটিয়েছে। মহাসড়কের গাবতলী থেকে সাভারের নবীনগর বাসস্ট্যান্ড অংশ পর্যন্ত ৪ লেন থাকায় সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা খুবই নগণ্য। তবে সড়কের মৃত্যুথাবা শুরু হয় এর পরের অংশ থেকে। এই মহাসড়কেই প্রাণ দিতে হয়েছিল খ্যাতনামা চলচ্চিত্র পরিচালক তারেক মাসুদ ও মিশুক মনিরকে। দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া গাড়িতে থাকা অন্যদেরও বিসর্জন দিতে হয়েছিল নিজেদের অস্তিত্ব। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধারাবাহিকতা বজায় রেখে সাম্প্রতিক পরিস্থিতিও বেশ উদ্বেগজনক। কয়েক দিন আগে ঢুলিভিটা স্ট্যান্ডে ট্রাকচাপায় প্রাণ হারান এক নারী। একই দিনে ধামরাই থানাস্ট্যান্ড এলাকায় দ্রুতগামী একটি ট্রাক পিছন থেকে ধাক্কা দেয় এক প্রাইভেট কারকে।

আহত হন ৩ জন। এর কিছুদিন আগে শ্রীরামপুর এলাকায় ট্রাকের ধাক্কায় ভ্যানে থাকা একই পরিবারের ৩ জন মারা যান। শোকের মাতম সৃষ্টি হয়েছিল গোপালকৃষ্ণপুর গ্রামে। কেলিয়া এলাকায় বাসের ধাক্কায় একই সঙ্গে নিহত হয়েছিলেন দুই মোটরসাইকেল আরোহী। ওই ঘটনায় মহাসড়কে তাজা রক্ত দেখেছিল ধামরাইবাসী। কসমস বাসস্ট্যান্ডে দুই বাসের সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছিলেন কমপক্ষে ৪ থেকে ৫ জন। এরকম অনেক উদাহরণ রয়েছে বিগত কয়েক মাসে। প্রথমত নবীনগর থেকে পাটুরিয়া অংশের সড়ক দুই লেনের। ফলে অপ্রশস্ত সড়কে বেপরোয়া গতি কিংবা একটু অসাবধানে ওভারটেকিংয়ে ঘটে বড় দুর্ঘটনা। দূরপাল্লার গাড়িগুলোর সঙ্গে একই সড়কে মিনিবাস ও লেগুনা চলাকালে গতির তারতম্যে ওভারটেকিংয়ে প্রাণ যায় অনেকের। দুই লেনবিশিষ্ট সড়ক হওয়াতে বিপাকে পড়তে হয় চালকদের। কোন সময় উল্টোদিক থেকে ওভারটেকিংয়ের মুহূর্তে কোন গাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে যায় ঠিক এমনটা মাথায় নিয়ে গাড়ি সড়কে নামাতে হয় তাদের। আবার অপ্রশস্ততার ফলে উল্টোদিক থেকে আসা বেপরোয়া কোনো গাড়িকে সাইড দিতে গিয়ে মাঝে মাঝেই খাদে পড়ছে গাড়ি। আর ঢাকা-পাটুরিয়া মহাসড়কের ধামরাই ও মানিকগঞ্জ অংশটি মাটির স্তর থেকে অনেক উঁচুতে হওয়ায় খাদে পড়লে প্রাণে রক্ষা পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এভাবেও প্রাণ যায় অনেকের। অবাক করা ব্যাপার, নবীনগর থেকে পাটুরিয়া পর্যন্ত বিশাল লম্বা সড়কে চোখে পড়েনি তেমন ফুটওভারব্রিজ। মহাসড়কজুড়ে ট্রাফিক পুলিশের উপস্থিতিও খুবই নাজুক। ফলে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না পরিস্থিতি। প্রশাসন ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আশার বাণী শোনাচ্ছে অনেক দিন ধরেই।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




ঢাকা-পাটুরিয়া ৭০ কিমি মৃত্যুফাঁদ

আপডেট সময় : ১২:১৮:০৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০১৯
নেই পর্যাপ্ত ওভারব্রিজ, ডিভাইডার, নজরদারি

দিন দিন যেন মৃৃত্যুপুরী হয়ে উঠছে সময়ের ব্যস্ততম ঢাকা-পাটুরিয়া ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ মহাসড়ক। সড়ক দুর্ঘটনার ভয়াল আঘাত যেন থামছেই না। রাজধানী ঢাকা শহর থেকে দেশের পশ্চিমাঞ্চল ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই মহাসড়ক। যেখানে প্রতিনিয়তই প্রাণ হারাচ্ছেন অনেকে। অকালে পঙ্গুত্ব বরণের উদাহরণও রয়েছে শত শত। তবে এ সমস্যা উত্তরণে চোখে পড়ার মতো তেমন কোনো কার্যক্রমই নেই কোনো সংস্থার। সম্প্রতি কিছু কার্যক্রম হাতে নিলেও কবে নাগাদ এগুলো আশার মুখ দেখবে এ নিয়ে ধোঁয়াশা কাজ করছে জনমনে। ফলে এই মহাসড়কে চলাচলকারী জনগণকে প্রতিনিয়ত হাতের মুঠোয় মৃত্যুকে সঙ্গে নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। তবে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের মানিকগঞ্জ জেলার প্রকৌশলী মানজুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ মহাসড়কের বিপজ্জনক বাঁকগুলো সোজাকরণ করা হয়েছে। ফলে সড়ক দুর্ঘটনা কমে গেছে।’ তবে এ মহাসড়কে দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে অনেকেই সাভার উপজেলার বাসিন্দা। রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত দেশের অন্যতম বৃহৎ বাস টার্মিনাল গাবতলী। এ বাস টার্মিনাল থেকে মানিকগঞ্জ জেলার আরিচা ও পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত বিস্তৃত এই সড়কে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহনের চলাচল। শুধু অভ্যন্তরীণ নয়। বরং যশোর ও দর্শনা হয়ে সরাসরি ভারতের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থারও একমাত্র মাধ্যম এই ঢাকা-পাটুরিয়া মহাসড়ক। ব্যস্ত মহাসড়কটি গাবতলী থেকে ঢাকা জেলার অন্তর্গত সমগ্র সাভার ও ধামরাই উপজেলা এবং সমগ্র মানিকগঞ্জ জেলার ওপর দিয়ে দীর্ঘ পথ অতিক্রম শেষে আরিচায় পদ্মাপাড়ে গিয়ে নিজের অস্তিত্বের ইতি ঘটিয়েছে। মহাসড়কের গাবতলী থেকে সাভারের নবীনগর বাসস্ট্যান্ড অংশ পর্যন্ত ৪ লেন থাকায় সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা খুবই নগণ্য। তবে সড়কের মৃত্যুথাবা শুরু হয় এর পরের অংশ থেকে। এই মহাসড়কেই প্রাণ দিতে হয়েছিল খ্যাতনামা চলচ্চিত্র পরিচালক তারেক মাসুদ ও মিশুক মনিরকে। দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া গাড়িতে থাকা অন্যদেরও বিসর্জন দিতে হয়েছিল নিজেদের অস্তিত্ব। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধারাবাহিকতা বজায় রেখে সাম্প্রতিক পরিস্থিতিও বেশ উদ্বেগজনক। কয়েক দিন আগে ঢুলিভিটা স্ট্যান্ডে ট্রাকচাপায় প্রাণ হারান এক নারী। একই দিনে ধামরাই থানাস্ট্যান্ড এলাকায় দ্রুতগামী একটি ট্রাক পিছন থেকে ধাক্কা দেয় এক প্রাইভেট কারকে।

আহত হন ৩ জন। এর কিছুদিন আগে শ্রীরামপুর এলাকায় ট্রাকের ধাক্কায় ভ্যানে থাকা একই পরিবারের ৩ জন মারা যান। শোকের মাতম সৃষ্টি হয়েছিল গোপালকৃষ্ণপুর গ্রামে। কেলিয়া এলাকায় বাসের ধাক্কায় একই সঙ্গে নিহত হয়েছিলেন দুই মোটরসাইকেল আরোহী। ওই ঘটনায় মহাসড়কে তাজা রক্ত দেখেছিল ধামরাইবাসী। কসমস বাসস্ট্যান্ডে দুই বাসের সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছিলেন কমপক্ষে ৪ থেকে ৫ জন। এরকম অনেক উদাহরণ রয়েছে বিগত কয়েক মাসে। প্রথমত নবীনগর থেকে পাটুরিয়া অংশের সড়ক দুই লেনের। ফলে অপ্রশস্ত সড়কে বেপরোয়া গতি কিংবা একটু অসাবধানে ওভারটেকিংয়ে ঘটে বড় দুর্ঘটনা। দূরপাল্লার গাড়িগুলোর সঙ্গে একই সড়কে মিনিবাস ও লেগুনা চলাকালে গতির তারতম্যে ওভারটেকিংয়ে প্রাণ যায় অনেকের। দুই লেনবিশিষ্ট সড়ক হওয়াতে বিপাকে পড়তে হয় চালকদের। কোন সময় উল্টোদিক থেকে ওভারটেকিংয়ের মুহূর্তে কোন গাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে যায় ঠিক এমনটা মাথায় নিয়ে গাড়ি সড়কে নামাতে হয় তাদের। আবার অপ্রশস্ততার ফলে উল্টোদিক থেকে আসা বেপরোয়া কোনো গাড়িকে সাইড দিতে গিয়ে মাঝে মাঝেই খাদে পড়ছে গাড়ি। আর ঢাকা-পাটুরিয়া মহাসড়কের ধামরাই ও মানিকগঞ্জ অংশটি মাটির স্তর থেকে অনেক উঁচুতে হওয়ায় খাদে পড়লে প্রাণে রক্ষা পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এভাবেও প্রাণ যায় অনেকের। অবাক করা ব্যাপার, নবীনগর থেকে পাটুরিয়া পর্যন্ত বিশাল লম্বা সড়কে চোখে পড়েনি তেমন ফুটওভারব্রিজ। মহাসড়কজুড়ে ট্রাফিক পুলিশের উপস্থিতিও খুবই নাজুক। ফলে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না পরিস্থিতি। প্রশাসন ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আশার বাণী শোনাচ্ছে অনেক দিন ধরেই।