ঢাকা ০৪:৪৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার! Logo ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হওয়া শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোর সংস্কার শুরু Logo বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির দাবিতে শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের মানববন্ধন Logo কুবি উপাচার্যের বক্তব্যের প্রমাণ দিতে শিক্ষক সমিতির সাত দিনের আল্টিমেটাম




নড়াইলে তিন মাসের কাজ আড়াই বছরেও শেষ করেনি ঠিকাদার 

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০১৯ ১২৭ বার পড়া হয়েছে

তিন মাসের কাজ শেষ হয়নি আড়াই বছরেও

নড়াইল প্রতিনিধি,
লোহাগড়া-লাহুড়িয়া সড়কের তিন মাস মেয়াদের সংস্কার কাজটি শুরু করার পর পড়ে আছে আড়াই বছর ধরে। ২০১৭ সালের ১৫ মার্চ কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছিল। কাজ শেষ করার মেয়াদ ছিল একই বছরের ২৯ জুন। সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় পাঁচ ইউনিয়নের অন্তত দেড় লাখ মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। লোহাগড়া-লাহুড়িয়া সড়কের শিয়রবর থেকে মাকড়াইল পর্যন্ত অংশে এ অবস্থা।
এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, সড়কটি এলজিইডির আওতাধীন ছিল। শিয়রবর থেকে মাকড়াইল পর্যন্ত তিন দশমিক ৬৩ কিলোমিটার অংশ দীর্ঘদিন ধরে খানাখন্দ ও ভাঙাচোরা ছিল। তা সংস্কার করতে ২০১৭ সালের ১৫ মার্চ কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এক কোটি ২৮ লাখ ৮৯ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। কার্যাদেশ পান ফরিদপুরের ঠিকাদার এ কে এম আকরামুজ্জামান। সড়কটির মাটি খুড়ে খোয়া ফেলানো হয় কার্যাদেশ দেওয়ার প্রথম মাসেই। এরপর আর কাজ করেনি ঠিকাদার। চলতি বছর ১২ জুন লোহাগড়ার কালনা থেকে লাহুড়িয়া হয়ে মোহাম্মদপুর পর্যন্ত সড়কটি সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগে হস্তান্তর হয়। তখন থেকে সড়কটি সওজের। সওজ সূত্রে জানা গেছে, সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায়, এর গুরুত্ব বিবেচনা করে সওজে হস্তান্তর হয়েছে।
লোহাগড়া সদর থেকে উত্তরের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াতের প্রধান সড়ক এটি। এ সড়ক ব্যবহার করে পাশের আলফাডাঙ্গা ও মহম্মদপুর উপজেলায় যাতায়াত করতে হয়। সড়কটি দিয়ে এ এলাকার লাহুড়িয়া, শালনগর, নোয়াগ্রাম, কাশিপুর ও জয়পুর ইউনিয়নের প্রায় দেড় লাখ মানুষ উপজেলা সদরে যাতায়াত করেন। আশপাশের মাকাড়ইল কে কে এস ইনস্টিটিউশন, রঘুনাথপুর আলিম মাদরাসা, শালনগর মর্ডান অ্যাকাডেমিসহ আটটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ সড়ক ব্যবহার করে। সড়কেরর পাশে লাহুড়িয়া, মাকড়াইল, বাতাসি, মণ্ডলভাগ, শিয়রবর ও মানিকগঞ্জ এলাকার বড় বাজার রয়েছে। এসব বাজারে পণ্য পরিবহনে প্রতিনিয়ত ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান চলাচল করে। চলাচল করে যাত্রীবাহী বাস ও অসংখ্য অটোরিকশা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কটিতে খোয়া ফেলানো অবস্থায় পড়ে আছে। এর বেশিরভাগ জায়গায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে গর্তে পানি-কাদা জমেছে। সড়কের লাল ধুলায় ছেয়ে গেছে আশপাশের গাছপালা, বাড়িঘর ও দোকানপাট। যানবাহন আসা যাওয়ার সময় ধুলায় অন্ধকার হয়ে যায় গোটা এলাকা।
এই সড়কের পাশের বাসিন্দা গৃহবধূ চায়না বেগম বলেন, ‘আমাদের ঘরের কাপড়ে সড়কের ধুলার স্তূপ জমেছে। বিছানায় ও কাপড় ধুলায় লাল হয়ে যায়। দরজা-জানালা মনে হচ্ছে লাল রং করা। ধুলার কারণে ঠিকমতো রান্না পর্যন্ত করা যাচ্ছে না। খাবারের সঙ্গেও পেটে যাচ্ছে ধুলা। গেল প্রায় আড়াই বছর ধরে এই দুর্ভোগ আমাদের।
বাতাসী বাজারের ব্যবসায়ী কার্তিক কুন্ডু, রবি শেখ ও উজ্জ্বলসহ আরও কয়েকজন জানান, শুকনো মৌসুমে ফেলানো খোয়ার ধুলা ওড়ে আর বৃষ্টি বর্ষায় খানা-খন্দে ও বড় গর্তে পানি জমে। এতে যানবাহন চলাচল কঠিন হয়ে পড়ে। প্রায় গর্তে আটকে যান পরিবহন। মাঝেমধ্যে গাড়ি গর্তে পড়ে উল্টেও গেছে। এ অবস্থায় সাধারণ যাত্রীরা যেমন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে, তেমনি ব্যবসায়ীদেরও ভোগান্তি বেড়েছে।
এলজিইডির লোহাগড়া উপজেলা প্রকৌশলী অভিজিৎ মজুমদার আরটিভি অনলাইনকে জানান, সড়কটির সংস্কার কাজ শেষ করতে বারবার চাপ দেওয়ার পরও কাজ না করায় ২০১৮ সালের মে মাসে ওই ঠিকাদারের কার্যদেশ বাতিল করা হয়। এরপর বাকি কাজটুকু শেষ করতে নতুন প্রকল্প তৈরির কাজ চলছিল। তখন চিঠি আসে সড়কটি সওজে চলে গেছে। তখন প্রকল্প তৈরির কাজ বন্ধ করা হয়।
নড়াইল সওজের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. ওমর আলী জানান, ওই অংশ সংস্কার করতে সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ প্রকল্পের আওতায় প্রকল্প তৈরি করে আঞ্চলিক কার্যালয়ে এক মাস আগে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ হলে সংস্কার করা হবে। এছাড়া কালনা থেকে লাহুড়িয়া পর্যন্ত পুরো সড়ক ১৮ ফুট চওড়া করে পাকা করতে ডিপিপি তৈরির কাজ চলছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




নড়াইলে তিন মাসের কাজ আড়াই বছরেও শেষ করেনি ঠিকাদার 

আপডেট সময় : ১০:০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০১৯

নড়াইল প্রতিনিধি,
লোহাগড়া-লাহুড়িয়া সড়কের তিন মাস মেয়াদের সংস্কার কাজটি শুরু করার পর পড়ে আছে আড়াই বছর ধরে। ২০১৭ সালের ১৫ মার্চ কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছিল। কাজ শেষ করার মেয়াদ ছিল একই বছরের ২৯ জুন। সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় পাঁচ ইউনিয়নের অন্তত দেড় লাখ মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। লোহাগড়া-লাহুড়িয়া সড়কের শিয়রবর থেকে মাকড়াইল পর্যন্ত অংশে এ অবস্থা।
এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, সড়কটি এলজিইডির আওতাধীন ছিল। শিয়রবর থেকে মাকড়াইল পর্যন্ত তিন দশমিক ৬৩ কিলোমিটার অংশ দীর্ঘদিন ধরে খানাখন্দ ও ভাঙাচোরা ছিল। তা সংস্কার করতে ২০১৭ সালের ১৫ মার্চ কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এক কোটি ২৮ লাখ ৮৯ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। কার্যাদেশ পান ফরিদপুরের ঠিকাদার এ কে এম আকরামুজ্জামান। সড়কটির মাটি খুড়ে খোয়া ফেলানো হয় কার্যাদেশ দেওয়ার প্রথম মাসেই। এরপর আর কাজ করেনি ঠিকাদার। চলতি বছর ১২ জুন লোহাগড়ার কালনা থেকে লাহুড়িয়া হয়ে মোহাম্মদপুর পর্যন্ত সড়কটি সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগে হস্তান্তর হয়। তখন থেকে সড়কটি সওজের। সওজ সূত্রে জানা গেছে, সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায়, এর গুরুত্ব বিবেচনা করে সওজে হস্তান্তর হয়েছে।
লোহাগড়া সদর থেকে উত্তরের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াতের প্রধান সড়ক এটি। এ সড়ক ব্যবহার করে পাশের আলফাডাঙ্গা ও মহম্মদপুর উপজেলায় যাতায়াত করতে হয়। সড়কটি দিয়ে এ এলাকার লাহুড়িয়া, শালনগর, নোয়াগ্রাম, কাশিপুর ও জয়পুর ইউনিয়নের প্রায় দেড় লাখ মানুষ উপজেলা সদরে যাতায়াত করেন। আশপাশের মাকাড়ইল কে কে এস ইনস্টিটিউশন, রঘুনাথপুর আলিম মাদরাসা, শালনগর মর্ডান অ্যাকাডেমিসহ আটটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ সড়ক ব্যবহার করে। সড়কেরর পাশে লাহুড়িয়া, মাকড়াইল, বাতাসি, মণ্ডলভাগ, শিয়রবর ও মানিকগঞ্জ এলাকার বড় বাজার রয়েছে। এসব বাজারে পণ্য পরিবহনে প্রতিনিয়ত ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান চলাচল করে। চলাচল করে যাত্রীবাহী বাস ও অসংখ্য অটোরিকশা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কটিতে খোয়া ফেলানো অবস্থায় পড়ে আছে। এর বেশিরভাগ জায়গায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে গর্তে পানি-কাদা জমেছে। সড়কের লাল ধুলায় ছেয়ে গেছে আশপাশের গাছপালা, বাড়িঘর ও দোকানপাট। যানবাহন আসা যাওয়ার সময় ধুলায় অন্ধকার হয়ে যায় গোটা এলাকা।
এই সড়কের পাশের বাসিন্দা গৃহবধূ চায়না বেগম বলেন, ‘আমাদের ঘরের কাপড়ে সড়কের ধুলার স্তূপ জমেছে। বিছানায় ও কাপড় ধুলায় লাল হয়ে যায়। দরজা-জানালা মনে হচ্ছে লাল রং করা। ধুলার কারণে ঠিকমতো রান্না পর্যন্ত করা যাচ্ছে না। খাবারের সঙ্গেও পেটে যাচ্ছে ধুলা। গেল প্রায় আড়াই বছর ধরে এই দুর্ভোগ আমাদের।
বাতাসী বাজারের ব্যবসায়ী কার্তিক কুন্ডু, রবি শেখ ও উজ্জ্বলসহ আরও কয়েকজন জানান, শুকনো মৌসুমে ফেলানো খোয়ার ধুলা ওড়ে আর বৃষ্টি বর্ষায় খানা-খন্দে ও বড় গর্তে পানি জমে। এতে যানবাহন চলাচল কঠিন হয়ে পড়ে। প্রায় গর্তে আটকে যান পরিবহন। মাঝেমধ্যে গাড়ি গর্তে পড়ে উল্টেও গেছে। এ অবস্থায় সাধারণ যাত্রীরা যেমন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে, তেমনি ব্যবসায়ীদেরও ভোগান্তি বেড়েছে।
এলজিইডির লোহাগড়া উপজেলা প্রকৌশলী অভিজিৎ মজুমদার আরটিভি অনলাইনকে জানান, সড়কটির সংস্কার কাজ শেষ করতে বারবার চাপ দেওয়ার পরও কাজ না করায় ২০১৮ সালের মে মাসে ওই ঠিকাদারের কার্যদেশ বাতিল করা হয়। এরপর বাকি কাজটুকু শেষ করতে নতুন প্রকল্প তৈরির কাজ চলছিল। তখন চিঠি আসে সড়কটি সওজে চলে গেছে। তখন প্রকল্প তৈরির কাজ বন্ধ করা হয়।
নড়াইল সওজের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. ওমর আলী জানান, ওই অংশ সংস্কার করতে সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ প্রকল্পের আওতায় প্রকল্প তৈরি করে আঞ্চলিক কার্যালয়ে এক মাস আগে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ হলে সংস্কার করা হবে। এছাড়া কালনা থেকে লাহুড়িয়া পর্যন্ত পুরো সড়ক ১৮ ফুট চওড়া করে পাকা করতে ডিপিপি তৈরির কাজ চলছে।