ঢাকা ০৭:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের অঙ্গীকারঃ ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী  Logo মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির নতুন বাসের উদ্বোধন Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য: ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার!




খুলনায় যুবককে ১২ খণ্ড করে হত্যার ঘটনায় আদালতে চার্জশিট দাখিল

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৪৫:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০১৯ ৭৬ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন প্রতিবেদন:

খুলনায় ১২ খণ্ড করে হাবিবুর রহমান সবুজ নামের এক যুবক হত্যা মামলায় ৫ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক শেখ আবু বকর খুলনার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

পরকীয়া প্রেম সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ৫ জন সরাসরি বিকৃত ও নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয় বলে জানিয়েছে পিবিআই।

যাদেরকে আসামি করে চার্জশিট দেয়া হয়েছে তারা হলেন, সরদার আসাদুজ্জামান ওরফে আরিফ, অনুপম মহলদার, খলিলুর রহমান, গাজী আবদুল হালিম ও এ কে এম মোস্তফা চৌধুরী মামুন। এর মধ্যে এ কে এম মোস্তফা চৌধুরী মামুন পলাতক এবং বাকি ৪ আসামি কারাগারে রয়েছেন। মামলার চার্জশিটে ৪৬ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। নিহত হাবিবুর রহমান সাতক্ষীরা সদরের উমরা এলাকার আবদুল হামিদ সরদারের ছেলে। তিনি সাতক্ষীরার একটি ইট ভাটায় শ্রমিক সরবরাহ করতেন।

পিবিআই সূত্র জানায়, গত ৭ মার্চ সকালে নগরীর শের-এ বাংলা রোড থেকে পলিথিনে মোড়ানো হাবিবুর রহমানের লাশের একটি অংশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে দুপুরে ফারাজীপাড়া রোডের ড্রেনের পাশ থেকে দুটি ব্যাগে থাকা তার মাথা ও দুই হাতসহ খণ্ড খণ্ড অংশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভগ্নিপতি গোলাম মোস্তফা বাদি হয়ে গত ৯ মার্চ খুলনা সদর থানায় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

র‌্যাব-৬ সূত্র জানায়, গত ১১ মার্চ র‌্যাবের সদস্যরা নগরীর ফুলবাড়িগেট এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সরদার আসাদুজ্জামান ওরফে আরিফকে আটক করে। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নগরীর ৩৪ নম্বর ফারাজীপাড়া লেনের হাসনাত মঞ্জিলে তল্লাশি চালানো হয়। প্রায় তিন মাস ধরে এই বাড়ির নিচতলায় ভাড়া থাকতেন আসাদুজ্জামান।

র‌্যাব জানায়, আসাদুজ্জামানের ঘরের খাটের নিচ থেকে পলিথিনে মোড়ানো নিহত হাবিবুরের কাটা পা ও বাথরুমে বালতির ভেতর থেকে পলিথিনে মোড়ানো লাশের কিছু অংশ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো ছুরি ও দা উদ্ধার করে র‌্যাব। নিহত হাবিবুরের ব্যবহৃত মোটর সাইকেল আসাদুজ্জামানের ঘরে পাওয়া যায়। র‌্যাবের আরেকটি টিম বটিয়াঘাটা উপজেলা থেকে হত্যাকান্ডে জড়িত যুবক অনুপম মহলদারকে আটক করে। পরবর্তীতে মামলার তদন্ত খুলনা থানা থেকে পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়।

পিবিআই সূত্র জানায়, তারা গত এপ্রিল মাসে হত্যাকাণ্ডে জড়িত খলিলুর রহমান ও গাজী আবদুল হালিমকে আটক করে। হত্যাকাণ্ডের আগে নিহত হাবিবুর ও পলাতক আসামি এ কে এম মোস্তফা চৌধুরী মামুন পৃথক মামলায় কারাগারে ছিল। সেখানেই তাদের পরিচয় হয়। গত বছরের ডিসেম্বরে হাবিবুর কারাগার থেকে জামিনে বের হয়। হাবিবুর জেল থেকে বের হওয়ার সময় মোস্তফা তাকে কারামুক্ত করতে সহযোগিতার অনুরোধ জানায় এবং তার স্ত্রীর মোবাইল নম্বর দেয়। কিন্তু হাবিবুর কোনো সহযোগিতা করেনি। উল্টো মোস্তফার স্ত্রী রিক্তার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। মোস্তফার বোনের সঙ্গেও পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে হাবিবুর।

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, মোস্তফা কারাগার থেকে বেরিয়ে বিষয়টি জানতে পেরে হাবিবুরকে হত্যার পরিকল্পনা করে। তার অনুরোধে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে আরও ৪ জন হাবিবুর হত্যায় অংশ নেয়। ৬ মার্চ রাতে ফারাজীপাড়া এলাকায় আসাদের বাসায় হাবিবুরকে ডেকে চেতনানাশক ওষুধ মেশানো মিষ্টি খাওয়ানো হয়। হাবিবুর অচেতন হয়ে পড়লে ৫ জনে মিলে তাকে হত্যা করে এবং এরপর লাশ ১২ টুকরো করে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র পরিদর্শক শেখ আবু বকর জানান, পরকীয়া প্রেম সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে নৃশংস এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেওয়া ৫ জনকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। মূল আসামি এ কে এম মোস্তফা চৌধুরী মামুন এখনো পলাতক রয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




খুলনায় যুবককে ১২ খণ্ড করে হত্যার ঘটনায় আদালতে চার্জশিট দাখিল

আপডেট সময় : ১১:৪৫:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০১৯

অনলাইন প্রতিবেদন:

খুলনায় ১২ খণ্ড করে হাবিবুর রহমান সবুজ নামের এক যুবক হত্যা মামলায় ৫ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক শেখ আবু বকর খুলনার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

পরকীয়া প্রেম সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ৫ জন সরাসরি বিকৃত ও নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয় বলে জানিয়েছে পিবিআই।

যাদেরকে আসামি করে চার্জশিট দেয়া হয়েছে তারা হলেন, সরদার আসাদুজ্জামান ওরফে আরিফ, অনুপম মহলদার, খলিলুর রহমান, গাজী আবদুল হালিম ও এ কে এম মোস্তফা চৌধুরী মামুন। এর মধ্যে এ কে এম মোস্তফা চৌধুরী মামুন পলাতক এবং বাকি ৪ আসামি কারাগারে রয়েছেন। মামলার চার্জশিটে ৪৬ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। নিহত হাবিবুর রহমান সাতক্ষীরা সদরের উমরা এলাকার আবদুল হামিদ সরদারের ছেলে। তিনি সাতক্ষীরার একটি ইট ভাটায় শ্রমিক সরবরাহ করতেন।

পিবিআই সূত্র জানায়, গত ৭ মার্চ সকালে নগরীর শের-এ বাংলা রোড থেকে পলিথিনে মোড়ানো হাবিবুর রহমানের লাশের একটি অংশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে দুপুরে ফারাজীপাড়া রোডের ড্রেনের পাশ থেকে দুটি ব্যাগে থাকা তার মাথা ও দুই হাতসহ খণ্ড খণ্ড অংশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভগ্নিপতি গোলাম মোস্তফা বাদি হয়ে গত ৯ মার্চ খুলনা সদর থানায় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

র‌্যাব-৬ সূত্র জানায়, গত ১১ মার্চ র‌্যাবের সদস্যরা নগরীর ফুলবাড়িগেট এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সরদার আসাদুজ্জামান ওরফে আরিফকে আটক করে। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নগরীর ৩৪ নম্বর ফারাজীপাড়া লেনের হাসনাত মঞ্জিলে তল্লাশি চালানো হয়। প্রায় তিন মাস ধরে এই বাড়ির নিচতলায় ভাড়া থাকতেন আসাদুজ্জামান।

র‌্যাব জানায়, আসাদুজ্জামানের ঘরের খাটের নিচ থেকে পলিথিনে মোড়ানো নিহত হাবিবুরের কাটা পা ও বাথরুমে বালতির ভেতর থেকে পলিথিনে মোড়ানো লাশের কিছু অংশ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো ছুরি ও দা উদ্ধার করে র‌্যাব। নিহত হাবিবুরের ব্যবহৃত মোটর সাইকেল আসাদুজ্জামানের ঘরে পাওয়া যায়। র‌্যাবের আরেকটি টিম বটিয়াঘাটা উপজেলা থেকে হত্যাকান্ডে জড়িত যুবক অনুপম মহলদারকে আটক করে। পরবর্তীতে মামলার তদন্ত খুলনা থানা থেকে পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়।

পিবিআই সূত্র জানায়, তারা গত এপ্রিল মাসে হত্যাকাণ্ডে জড়িত খলিলুর রহমান ও গাজী আবদুল হালিমকে আটক করে। হত্যাকাণ্ডের আগে নিহত হাবিবুর ও পলাতক আসামি এ কে এম মোস্তফা চৌধুরী মামুন পৃথক মামলায় কারাগারে ছিল। সেখানেই তাদের পরিচয় হয়। গত বছরের ডিসেম্বরে হাবিবুর কারাগার থেকে জামিনে বের হয়। হাবিবুর জেল থেকে বের হওয়ার সময় মোস্তফা তাকে কারামুক্ত করতে সহযোগিতার অনুরোধ জানায় এবং তার স্ত্রীর মোবাইল নম্বর দেয়। কিন্তু হাবিবুর কোনো সহযোগিতা করেনি। উল্টো মোস্তফার স্ত্রী রিক্তার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। মোস্তফার বোনের সঙ্গেও পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে হাবিবুর।

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, মোস্তফা কারাগার থেকে বেরিয়ে বিষয়টি জানতে পেরে হাবিবুরকে হত্যার পরিকল্পনা করে। তার অনুরোধে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে আরও ৪ জন হাবিবুর হত্যায় অংশ নেয়। ৬ মার্চ রাতে ফারাজীপাড়া এলাকায় আসাদের বাসায় হাবিবুরকে ডেকে চেতনানাশক ওষুধ মেশানো মিষ্টি খাওয়ানো হয়। হাবিবুর অচেতন হয়ে পড়লে ৫ জনে মিলে তাকে হত্যা করে এবং এরপর লাশ ১২ টুকরো করে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র পরিদর্শক শেখ আবু বকর জানান, পরকীয়া প্রেম সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে নৃশংস এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেওয়া ৫ জনকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। মূল আসামি এ কে এম মোস্তফা চৌধুরী মামুন এখনো পলাতক রয়েছেন।