ঢাকা ০২:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার! Logo ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হওয়া শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোর সংস্কার শুরু Logo বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির দাবিতে শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের মানববন্ধন Logo কুবি উপাচার্যের বক্তব্যের প্রমাণ দিতে শিক্ষক সমিতির সাত দিনের আল্টিমেটাম




বুয়েটে অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান শুরু, সাবেক সভাপতির কক্ষ সিলগালা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:৪৭:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০১৯ ১০২ বার পড়া হয়েছে

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) হলে হলে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। শনিবার (১২ অক্টোবর) সকাল থেকে অভিযান শুরু হয়। ইতোমধ্যে ছাত্রলীগ বুয়েট শাখার সাবেক সভাপতি জামি-উস সানির কক্ষ সিলগালা করেছে বুয়েট প্রশাসন। তিনি আহসানুল্লাহ হলে থাকতেন। একাধিক হলেও এমন ঘটনা ঘটেছে।

বুয়েট প্রশাসন জানায়, ছাত্র রাজনীতি বন্ধের পর আজ শনিবার সকাল থেকে যেসব কক্ষে প্রাক্তন ও চার সিটের কক্ষে দু-একজন ছাত্র তাদের বিরুদ্ধে এ অভিযান চলছে। এছাড়া আগামীতে এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

প্রশাসনের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার বুয়েট প্রশাসন থেকে এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা জারির পর এ অভিযান শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।

আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) আবাসিক হলে অবৈধভাবে থাকা শিক্ষার্থীদের হলত্যাগ এবং ছাত্র রাজনীতি বন্ধসহ পাঁচ দফা দাবি মেনে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে এ সংক্রান্ত নোটিশও জারি করা হয়। বুয়েট কর্তৃপক্ষ স্বাক্ষরিত পৃথক পাঁচটি আদেশ শনিবার দুপুরে প্রকাশ করা হয়।

শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি হলো- আবরার হত্যাকারীদের বুয়েট থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এ মর্মে নোটিশ দেয়া, সাংগঠনিক রাজনীতি নিষিদ্ধের জন্য অবৈধ ছাত্রদের সিট বাতিল করা, সাংগঠনিক অফিস সিলগালা করা, ফাহাদের মামলার খরচ দেয়ার নোটিশ দেয়া ও ভিন্নমত দমানোর নামে নির্যাতন বন্ধে প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত এবং এ ধরনের ঘটনা প্রকাশে একটি কমন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সব হলের সিসিটিভির ফুটেজে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা।

এদিকে বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা যথাসময়েই অনুষ্ঠিত হবে। চলমান আন্দোলনের জন্য যে উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছিল ভর্তি পরীক্ষার কারণে সেই আন্দোলন শিথিল করার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে তারা এ ঘোষণা দেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তবে ভর্তি পরীক্ষার জন্য ১৩ ও ১৪ অক্টোবর আন্দোলন শিথিল থাকবে। ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সহযোগিতা করবেন বলেও জানিয়েছেন।

ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়ার জেরে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে রোববার (৬ অক্টোবর) রাতে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। এরপর রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের নিচতলা ও দোতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

সোমবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে আবরারের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ লাশের ময়নাতদন্ত করেন। তিনি বলেন, ‘ছেলেটিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।’ নিহত আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন।

ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে পরদিন সন্ধ্যার পর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহত আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ্।

আবরার হত্যাকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা প্রথমে ১০ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনে নামেন। গতকাল শুক্রবার বুয়েট অডিটোরিয়ামে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন বুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম। তিনি সে সময় ঘোষণা দেন, বুয়েটে সাংগঠনিক ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতি থাকবে না। একই সঙ্গে অভিযুক্ত ১৯ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের ঘোষণা দেন তিনি।

এছাড়া আবরারের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, মামলার খরচ বুয়েট কর্তৃপক্ষ বহন, বিচারকাজ দ্রুত শেষ করতে সরকারকে চিঠি দেয়াসহ বুয়েটে র্যাগিং বন্ধের ঘোষণা দেন উপাচার্য।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




বুয়েটে অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান শুরু, সাবেক সভাপতির কক্ষ সিলগালা

আপডেট সময় : ০৩:৪৭:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০১৯

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) হলে হলে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। শনিবার (১২ অক্টোবর) সকাল থেকে অভিযান শুরু হয়। ইতোমধ্যে ছাত্রলীগ বুয়েট শাখার সাবেক সভাপতি জামি-উস সানির কক্ষ সিলগালা করেছে বুয়েট প্রশাসন। তিনি আহসানুল্লাহ হলে থাকতেন। একাধিক হলেও এমন ঘটনা ঘটেছে।

বুয়েট প্রশাসন জানায়, ছাত্র রাজনীতি বন্ধের পর আজ শনিবার সকাল থেকে যেসব কক্ষে প্রাক্তন ও চার সিটের কক্ষে দু-একজন ছাত্র তাদের বিরুদ্ধে এ অভিযান চলছে। এছাড়া আগামীতে এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

প্রশাসনের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার বুয়েট প্রশাসন থেকে এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা জারির পর এ অভিযান শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।

আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) আবাসিক হলে অবৈধভাবে থাকা শিক্ষার্থীদের হলত্যাগ এবং ছাত্র রাজনীতি বন্ধসহ পাঁচ দফা দাবি মেনে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে এ সংক্রান্ত নোটিশও জারি করা হয়। বুয়েট কর্তৃপক্ষ স্বাক্ষরিত পৃথক পাঁচটি আদেশ শনিবার দুপুরে প্রকাশ করা হয়।

শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি হলো- আবরার হত্যাকারীদের বুয়েট থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এ মর্মে নোটিশ দেয়া, সাংগঠনিক রাজনীতি নিষিদ্ধের জন্য অবৈধ ছাত্রদের সিট বাতিল করা, সাংগঠনিক অফিস সিলগালা করা, ফাহাদের মামলার খরচ দেয়ার নোটিশ দেয়া ও ভিন্নমত দমানোর নামে নির্যাতন বন্ধে প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত এবং এ ধরনের ঘটনা প্রকাশে একটি কমন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সব হলের সিসিটিভির ফুটেজে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা।

এদিকে বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা যথাসময়েই অনুষ্ঠিত হবে। চলমান আন্দোলনের জন্য যে উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছিল ভর্তি পরীক্ষার কারণে সেই আন্দোলন শিথিল করার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে তারা এ ঘোষণা দেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তবে ভর্তি পরীক্ষার জন্য ১৩ ও ১৪ অক্টোবর আন্দোলন শিথিল থাকবে। ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সহযোগিতা করবেন বলেও জানিয়েছেন।

ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়ার জেরে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে রোববার (৬ অক্টোবর) রাতে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। এরপর রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের নিচতলা ও দোতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

সোমবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে আবরারের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ লাশের ময়নাতদন্ত করেন। তিনি বলেন, ‘ছেলেটিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।’ নিহত আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন।

ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে পরদিন সন্ধ্যার পর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহত আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ্।

আবরার হত্যাকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা প্রথমে ১০ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনে নামেন। গতকাল শুক্রবার বুয়েট অডিটোরিয়ামে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন বুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম। তিনি সে সময় ঘোষণা দেন, বুয়েটে সাংগঠনিক ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতি থাকবে না। একই সঙ্গে অভিযুক্ত ১৯ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের ঘোষণা দেন তিনি।

এছাড়া আবরারের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, মামলার খরচ বুয়েট কর্তৃপক্ষ বহন, বিচারকাজ দ্রুত শেষ করতে সরকারকে চিঠি দেয়াসহ বুয়েটে র্যাগিং বন্ধের ঘোষণা দেন উপাচার্য।