দেশের সর্ব কনিষ্ঠ কাউন্সিলর জড়িয়েছেন এবার “গরু কেলেঙ্কারিতে”
- আপডেট সময় : ০৫:৫৯:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ অগাস্ট ২০১৯ ৮১ বার পড়া হয়েছে
বিশেষ প্রতিবেদক|| আল্লাহর নামে ছেড়ে দেয়া গরু বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক ওয়ার্ড কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। ওয়ার্ড কাউন্সিলর লাখ টাকায় গরু বিক্রি করে টাকা হজম করেছেন বলে জনা গেছে। গত ঈদুল আযহায় আল্লাহর নামে ছেড়ে দেয়া গরুটি কুরবানি দেয়া হয়েছে।ঘটনাটি ঘটেছে বরিশাল নগরীর ৫নং ওয়ার্ড পলাশপুর এলাকায়। সুত্র মতে জানা যায়, চলতি বছরের মার্চ মাসে পলাশপুর এলাকার ইসলাম নগর নামক স্থানে একটি সাদা রঙের গরু দেখতে পায় স্থানীয়রা।
এ সময় গরুটি সাধারন মানুষের রোপনকৃত অনেক গাছ খেয়ে ফেলে। ওই দিন দুপুর আড়াইটার সময় স্থানীয়রা কাউন্সিলয়র কেফায়েত হোসেন রনিকে জানালে তিনি গরুটিকে তার কার্যলয়ের পিছনে একটি অবৈধ অটো চার্জ গ্যারেজে বেধে রাখতে বলেন।পরের দিন স্থানীয়রা সকালে গ্রেজে গরু দেখতে না পাওয়ায় কাউন্সিলরকে ফোন দিলে তিনি বলেন, গরুর মালিক এখনো পাওয়া যায়নি, এজন্য একই এলাকার মোহাম্মাদপুর হুজুর মাসুদের ফার্মে রাখা হয়েছে। এদিকে হুজুর মাসুদ গরুটি রাখতে না চাইলেও তাকে জোর করে তার ফার্মে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। বৃহস্পতিবার (২৯ আগষ্ট) হুজুর মাসুদ বলেন, ৬ মাস আগে ওয়ার্ড কাউন্সিলর রনি আমার ফার্মে সাদা রঙের একটি গরু রাখে। তখন আমি তাকে ৫০ হাজার টাকা দেই।টাকা গুলো বিভিন্ন মারদাসায় দেয়ার জন্য বাড়তি আরো টাকা চাইলে সেসময় আরো ১০ হাজার টাকা দেই কাউন্সিলরকে। এ বিষয়ে আমার ছোট ভাই মামুন ভালো বলতে পারবে।
এ সময় এ প্রতিবেদককে ওয়ার্ড কাউন্সিলর রনির সাথে আলাপ করতে বলেন। ” তিনি মোবাইল ফুটেজে কোরবানি দেয়া গরুর ছবি দেখিয়ে বলেন, এবার চারটা গরু কুরবানি দিছি, দুইটা ক্রয় করে আর বাকি দুইটা নিজ ফার্মের। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, আল্লাহর নামে ছেড়ে দেয়া গরু আমি কিনছি তাতে আপনাদের সমস্যা কি? ছয় মাস আগে ছিলেন কই? ছয় মাস আগে গরু কিনছি, তাহলে এখন কত টাকা হতে পারে আরো ফার্মের গরু এটা আপনার বুঝতে হবে ভাই।”
সুত্র বলছে, হাটখোলা এলাকায় হাওলাদার এন্টারপ্রাইজ’র সত্বাধিকারী বিএনপিপন্থি হুজুর মাসুদ পলাশপুর এলাকার মোহাম্মাদপুর নামক স্থানে একটি মাছের ঘের ও গরুর ফার্ম রয়েছে। সকল অভিযোগ অস্বিকার করে কাউন্সিলর কেফায়েত হোসেন রনি বলেন, ছয় মাস নয় বরং আরো বেশি হবে। মাসুদের কাছে গরুটি রাখতে দেয়া হয়ে ছিলো, কিন্তু সে তার ফার্মে রাখতে পারবে না।এজন্য ঈদুল আযহার ১৫ দিন আগে ৭০ হাজার টাকা নিয়েছি যা এলাকার বিভিন্ন মসজিদ মারদাসায় টাকাগুলো দান করা হয়েছে দাবী করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, ৫০ হাজার টাকার কথা মিথ্যা বলেছেন মাসুদ। গরুটি পেয়ে থানায় মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে এবং বেশ কয়েকটি পত্রিকায় দেয়া হয়েছে। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গরুটিকে মাসুদ এতদিন লালন পালন করায় তার কাছ থেকে এত কম টাকা নেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, কেফায়েত হোসেন রনি ১৯৮৮ সারের ১৭ জুন জন্মগ্রহণ করার সূত্রে দেশের সর্ব কনিষ্ঠ কাউন্সিলর হিসেবে বিশেষ সুনামের যায়গাটিতে অধিষ্ঠিত হলেও নির্বাচনের পর থেকে বেশ কিছু বিতর্কে জড়িয়েছেন এবং কোন উন্নয়ন, তেমন কোন সেবা প্রদানেও ব্যার্থ হয়েছেন। পলাশপুরের জলাবদ্ধতা, বাল্য বিবাহ্, মাদক সংক্রান্ত কোন বিষয়েই উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারেননি বলে জানা গেছে। বরং তার আপন চাচা বাবু বেশ কিছু অবৈধ, বিতর্কিত বিষয় মোটা অঙ্কের বিনিময়ে মিমাংসা করেছেন বলে পপ্রমাণ রয়েছে। এছাড়াও রনি’র সমর্থন যারা করেছিল নির্বাচনে তাদের দাপটে এলাকাবাসী প্রায় ঘড়ছাড়া। কাউন্সিলের দাপটে এলাকার ছোট -বড় মাদক ব্যাবসায়ী ও ভূমি দস্যূরা চরে বীর দর্পে, এমনটাই এলাকার মানুষের অভিযোগ। ওয়ার্ড কাউন্সিলর রনি’র বিরুদ্ধে কার্যালয়ের সাইনবোর্ডে অবৈধ টোকেন বিহীন অটো’র গ্যারেজ দিয়ে অবৈধ সংযোগে বিদ্যুৎ ব্যাবহারেরও অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।