ঢাকা ১২:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার! Logo ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হওয়া শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোর সংস্কার শুরু Logo বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির দাবিতে শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের মানববন্ধন Logo কুবি উপাচার্যের বক্তব্যের প্রমাণ দিতে শিক্ষক সমিতির সাত দিনের আল্টিমেটাম




ইউএনওর নম্বর ক্লোন করে টাকা আদায়

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:২২:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ জুলাই ২০১৯ ৬৯ বার পড়া হয়েছে

জেলা প্রতিনিধি; 
নওগাঁর মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) খন্দকার মুশফিকুর রহমানের অফিসিয়াল মুঠোফোন নম্বর (সরকারি নম্বর) ক্লোন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেই নম্বর থেকে একাধিক শিক্ষককে ল্যাপটপ দেয়ার লোভ দেখিয়ে বিকাশে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী চার শিক্ষক থানায় অভিযোগ করেছেন।

জানা গেছে, একটি অসাধু চক্র মান্দার ইউএনওর অফিসিয়াল নম্বর ক্লোন করে শুক্রবার সন্ধ্যার পর একাধিক শিক্ষককে কল দেয়। তাদের বলা হয় ইউএনও অফিসে কয়েকটি ল্যাপটপ অতিরিক্ত আছে। সেগুলো আনতে কিছু টাকা খরচ হয়েছে। ল্যাপটপ বিতরণের জন্য কয়েক জন শিক্ষকের তালিকা তৈরি করা হয়েছে, নিতে হলে কিছু টাকা দিতে হবে। সে কথা বিশ্বাস করে সাত শিক্ষক প্রত্যেকে ৭ হাজার টাকা করে ৫৯ হাজার টাকা ‘ইউএনওর’ (প্রতারকের) ব্যক্তিগত নম্বরে বিকাশ করেন। এরপর শনিবার (২০ জুলাই) বিকেলে ল্যাপটপ নিতে শিক্ষকদের অফিসে যেতে বলা হয়। বিকেলে কয়েক জন শিক্ষক ইউএনও অফিসে গেলে প্রতারণার বিষয়টি প্রকাশ পায়।

বিষয়টি নিয়ে ইউএনও তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে শনিবার বিকেল ৩টা ৪৮ মিনিটে ‘মান্দা ইউএনও এর অফিসিয়াল নম্বর ক্লোন করে বিভিন্ন টিচারকে ফোন দিয়ে ল্যাপটপের লোভ দেখিয়ে টাকা চাওয়া হচ্ছে। প্রতারকদের ব্যাপারে সাবধান থাকুন’ এমনি একটি সর্তকতামূলক পোষ্ট দেন।

আলালপুর হাজী শেখ আলম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সাঈদ মন্ডল বলেন, ‘শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে ইউএনও স্যারের মোবাইল থেকে আমাকে ফোন দিয়ে ল্যাপটপ দেয়ার কথা বলা হয়। সরকারি নম্বর দিয়ে সব কথা বলা যায় না, এজন্য ব্যক্তিগত নম্বর থেকে ফোন দেয় এবং ৭ হাজার টাকা ব্যক্তিগত নম্বরে বিকাশ করতে বলা হয়।’

তিনি বলেন, ‘আগে থেকে স্যারের সরকারি নম্বর আমার ফোনে সেভ করাছিল, কিন্তু ব্যক্তিগত নম্বর ছিল না। তাই সরকারি নম্বরের কথা বিশ্বাস করে ৭ হাজার টাকা বিকাশ করি। এরপর পরদিন (শনিবার) বিকেল ৪টার দিকে ইউএনও অফিসে গিয়ে ল্যাপটপ নিয়ে আসার জন্য বলা হয়। সে অনুযায়ী শনিবার বিকেলে অফিসে ল্যাপটপ নিতে গেলে ইউএনও স্যার বলেন এ ধরনের কোনো বিষয় তার জানা নেই। তারপর তিনি প্রত্যারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন। ঘটনায় ভুক্তভোগী চার শিক্ষক থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।’

আইওরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাসুদ রানা বলেন, গত শুক্রবার রাতে ইউএনও স্যারের নম্বর থেকে ফোন দিয়ে তাকে ৭ হাজার টাকা বিকাশ করতে বলা হয়। টাকার বিষয় নিয়ে প্রথমে হতচকিত হয়ে পড়েন। স্যারের নম্বর থেকে ফোন করে টাকা চাওয়ার বিষয়টি বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। কিছু সময় পর স্যারকে ফোন করলে তিনি বলেন, ‘আমিতো ফোন কারিনি’।

এ ব্যাপারে ইউএনও খন্দকার মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘আমার অফিসিয়াল নম্বর ক্লোন করে বিভিন্ন শিক্ষককে ফোন দিয়ে ল্যাপটপের লোভ দেখিয়ে টাকা চাওয়া হয়েছে। একটি অসাধু চক্র স্বার্থ হাসিলের জন্য এমনটি করেছে।’

এ বিষয়ে তিনি সবাইকে সাবধান থাকার পরামর্শ দেন। সেই সঙ্গে ভুক্তভোগীদের থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি করার পরামর্শ দেন।

মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাফ্ফর হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়ে শিক্ষকরা থানায় অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত প্রতারকদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




ইউএনওর নম্বর ক্লোন করে টাকা আদায়

আপডেট সময় : ১১:২২:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ জুলাই ২০১৯

জেলা প্রতিনিধি; 
নওগাঁর মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) খন্দকার মুশফিকুর রহমানের অফিসিয়াল মুঠোফোন নম্বর (সরকারি নম্বর) ক্লোন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেই নম্বর থেকে একাধিক শিক্ষককে ল্যাপটপ দেয়ার লোভ দেখিয়ে বিকাশে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী চার শিক্ষক থানায় অভিযোগ করেছেন।

জানা গেছে, একটি অসাধু চক্র মান্দার ইউএনওর অফিসিয়াল নম্বর ক্লোন করে শুক্রবার সন্ধ্যার পর একাধিক শিক্ষককে কল দেয়। তাদের বলা হয় ইউএনও অফিসে কয়েকটি ল্যাপটপ অতিরিক্ত আছে। সেগুলো আনতে কিছু টাকা খরচ হয়েছে। ল্যাপটপ বিতরণের জন্য কয়েক জন শিক্ষকের তালিকা তৈরি করা হয়েছে, নিতে হলে কিছু টাকা দিতে হবে। সে কথা বিশ্বাস করে সাত শিক্ষক প্রত্যেকে ৭ হাজার টাকা করে ৫৯ হাজার টাকা ‘ইউএনওর’ (প্রতারকের) ব্যক্তিগত নম্বরে বিকাশ করেন। এরপর শনিবার (২০ জুলাই) বিকেলে ল্যাপটপ নিতে শিক্ষকদের অফিসে যেতে বলা হয়। বিকেলে কয়েক জন শিক্ষক ইউএনও অফিসে গেলে প্রতারণার বিষয়টি প্রকাশ পায়।

বিষয়টি নিয়ে ইউএনও তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে শনিবার বিকেল ৩টা ৪৮ মিনিটে ‘মান্দা ইউএনও এর অফিসিয়াল নম্বর ক্লোন করে বিভিন্ন টিচারকে ফোন দিয়ে ল্যাপটপের লোভ দেখিয়ে টাকা চাওয়া হচ্ছে। প্রতারকদের ব্যাপারে সাবধান থাকুন’ এমনি একটি সর্তকতামূলক পোষ্ট দেন।

আলালপুর হাজী শেখ আলম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সাঈদ মন্ডল বলেন, ‘শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে ইউএনও স্যারের মোবাইল থেকে আমাকে ফোন দিয়ে ল্যাপটপ দেয়ার কথা বলা হয়। সরকারি নম্বর দিয়ে সব কথা বলা যায় না, এজন্য ব্যক্তিগত নম্বর থেকে ফোন দেয় এবং ৭ হাজার টাকা ব্যক্তিগত নম্বরে বিকাশ করতে বলা হয়।’

তিনি বলেন, ‘আগে থেকে স্যারের সরকারি নম্বর আমার ফোনে সেভ করাছিল, কিন্তু ব্যক্তিগত নম্বর ছিল না। তাই সরকারি নম্বরের কথা বিশ্বাস করে ৭ হাজার টাকা বিকাশ করি। এরপর পরদিন (শনিবার) বিকেল ৪টার দিকে ইউএনও অফিসে গিয়ে ল্যাপটপ নিয়ে আসার জন্য বলা হয়। সে অনুযায়ী শনিবার বিকেলে অফিসে ল্যাপটপ নিতে গেলে ইউএনও স্যার বলেন এ ধরনের কোনো বিষয় তার জানা নেই। তারপর তিনি প্রত্যারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন। ঘটনায় ভুক্তভোগী চার শিক্ষক থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।’

আইওরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাসুদ রানা বলেন, গত শুক্রবার রাতে ইউএনও স্যারের নম্বর থেকে ফোন দিয়ে তাকে ৭ হাজার টাকা বিকাশ করতে বলা হয়। টাকার বিষয় নিয়ে প্রথমে হতচকিত হয়ে পড়েন। স্যারের নম্বর থেকে ফোন করে টাকা চাওয়ার বিষয়টি বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। কিছু সময় পর স্যারকে ফোন করলে তিনি বলেন, ‘আমিতো ফোন কারিনি’।

এ ব্যাপারে ইউএনও খন্দকার মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘আমার অফিসিয়াল নম্বর ক্লোন করে বিভিন্ন শিক্ষককে ফোন দিয়ে ল্যাপটপের লোভ দেখিয়ে টাকা চাওয়া হয়েছে। একটি অসাধু চক্র স্বার্থ হাসিলের জন্য এমনটি করেছে।’

এ বিষয়ে তিনি সবাইকে সাবধান থাকার পরামর্শ দেন। সেই সঙ্গে ভুক্তভোগীদের থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি করার পরামর্শ দেন।

মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাফ্ফর হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়ে শিক্ষকরা থানায় অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত প্রতারকদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।